মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: পিতার ফাঁসি চেয়ে মানববন্ধন করেছে ৪ বছরের শিশু কন্যা মুসকান। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সাড়ে ১১টা হতে ১২টা পর্যন্ত মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে মানববন্ধনে অংশ নেন মুসকান ছাড়াও শতাধিক নারী-পুরুষ।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলে থাকছে না হাফ ভাড়া
জেরিন হত্যার বিচার চেয়ে হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবীতে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার- নৈরপুকুরপাড় এলাকাবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় নিহত জেরিন আক্তার (২২) এর একমাত্র শিশু কন্যা মুসকান তার বাবা মো. মুরাদ হোসেন (৩৫) এর ফাঁসি চেয়ে বলেন, আমার বাবায় আরেকটা বিয়ে করতে চাইছিল? এজন্য বাবায় মায়রে মাইরা ফেলাই...ছে। ওড়না দিয়া পেচাঁইয়া যাইত্যা, যাইত্যা, মাইরা ফেলাইছে। আমি আমার বাবার ফাঁসি চাই।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে তুষারঝড়: নিহত বেড়ে ৫৬
নিহত জেরিনের মা সাহিদা বেগম বলেন, আমার মেয়ে প্রথম বাচ্চা নেওয়ার পর জররায়ূতে সমস্যা হয়। ডাক্তার ২য় বাচ্চা নিতে নিষেধ করছিল। কিন্ত ওর স্বামী জোড় করে ২য় বাচ্চা নিতে চায়। এতে আমার মেয়ে গুরুতর আহত হয়ে পরে।
পরে, আমরা তাকে মুন্সীগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে ডাক্তার অন্য কোথায় উন্নত চিকিৎসা নিতে বলে। আমার মেয়েকে আদ্বদ্বীন হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ১৫দিন ভর্তি রেখে চিকিৎসা করাই। সে সময় ডাক্তার বলে মেয়েকে বাচাঁতে হলে জররায়ূ কেটে ফেলতে হবে। ওর স্বামীর সম্মতিক্রমে আমরা জররায়ূ কেটে ফেলি।
আরও পড়ুন: ৪ ফেব্রুয়ারি আ’লীগের জনসভা
আরও বলেন, কিন্তু আমার মেয়ে বাসায় ফেরার পর ওর শাশুড়ি ননদ সহ অন্যান্য আত্নীয় স্বজনরা বিভিন্ন কুপরমর্শ দেয়। আর বলে ওর আর বাচ্চা হইবো না। তুই আবার বিয়ে কর। তোর ভবিষৎত আছে। ওর মা বোনদের কুপরামর্শে আমার মেয়েকে বিভিন্নভাবে অমানবিক নির্যাতন করতে থাকে।
ওরা নির্যাতন করে আমার মেয়েকে মাইরা ফেলাইছে। মাইরা ফালানোর পরে ওরা বাথরুমে নিয়া যায়। এ সময় আমার স্বামী মেয়ের মোবাইলে ফোন দিলে আমার নাতিন মুসকান বলে নানা ভাই আমার বাবা আমার মাকে মাইরা ফেলাইছে। পরে লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে গেলে ডাক্তার আমার মেয়েকে মৃত ঘোষনা করেন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়া অনুমোদন
উল্লেখ্য, গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে মুন্সীগঞ্জ শহরের উপকন্ঠ পঞ্চসার ইউনিয়নের মিরেশ্বরাই গ্রামের স্বামী গৃহে রহস্যজনক ভাবে মারা যান জেরিন আক্তার (২২)। মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ হাসপাতাল হতে নিহত জেরিনের লাশ উদ্ধার করে। নিহত জেরিন সদর উপজেলার নৈরপুকুর পাড় গ্রামের জামাল ভূইয়ার মেয়ে।
২০১৬ সালে একই উপজেলার মীরশ্বরাই গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে মুরাদ হোসেনের সাথে তার পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বৈবাহিক জীবনে মুসকান (৪) নামে তাদের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় নিহত জেরিনের মা সাহিদা বেগম বাদী হয়ে মুরাদ হোসেন, তার বাবা মনির হোসেন, মা উম্মে কুলসুম এবং বোন মনিকা শারমিনকে বিবাদী করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় পুলিশ মুরাদ হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে। বাকি আসামীরা পলাতক রয়েছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার (ওসি) মো. তারিকুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় মামলার মূল আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতের মধ্যেমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত চলছে।
সান নিউজ/এমআর