নৌশিন আহম্মেদ মনিরা: করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ও নিঃস্ব নারী উদ্যোক্তাদের সমস্যা সমাধানকল্পে মাল্টিমোড গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল বলেছেন, সরকার ‘সেঁউতি’কে সহযোগিতা করলে নারী উদ্যোক্তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। তাই করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারের সাহায্য-সহযোগিতা চাই।
সম্প্রতি কারওয়ানবাজারে নিজ ব্যবসায়িক কার্যালয়ে সান নিউজকে একান্ত সাক্ষাতকারে নারী উদ্যোক্তাদের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
দেশের শীর্ষস্থানীয় নারী উদ্যোক্তা নাসরিন ফাতেমা আউয়ালের উদ্যোগে ২০০০ সালে দেশের প্রথম নারী উদ্যোক্তাদের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয় ‘উইমেন এন্টারপ্রেনার এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ বা ওয়েব। এছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বিক্রির জন্য রাজধানীর কলাবাগানে গড়ে তোলেন ‘সেঁউতি’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সেঁউতিতে সারাদেশের নারী উদ্যোক্তারা তাদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী কোনো কমিশন ছাড়াই বিক্রি করতে পারেন।
এ ব্যাপারে নাসরিন ফাতেমা আউয়াল জানান, প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারী উদ্যোক্তারা ২০২০ সালে বাংলা নববর্ষ ও ঈদকে সামনে রেখে পণ্যসামগ্রী উৎপাদন করলেও করোনার কারণে বিক্রি করতে না পেরে লোকসানের মুখে পড়েন। সব পণ্য পড়ে ছিলো। তাদের মূলধন আটকে যায়। অনেকে পুঁজি হারিয়ে ফেলেন। অনেকে আবার নতুন করে ঋণগ্রস্ত হয়েছেন। অল্প পুঁজির উদ্যোক্তারা এখন পথে বসে গেছেন। নিঃস্ব হয়েছেন ৮০ শতাংশ নারী ব্যবসায়ী। সেই থেকে এখন পর্যন্ত অনেক নারী উদ্যোক্তা ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। তাই ক্ষতিগ্রস্ত নারী উদ্যোক্তাদের ঘুরে দাঁড়াতে সরকারের সহযোগিতা চান বলেও জানান তিনি।
উইমেন এন্টারপ্রেনার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ওয়েব) চেয়ারপারসন নাসরিন ফাতেমা আউয়াল বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদেরকে প্রণোদনা দিয়েছেন। এটি ভাল উদ্যোগ ছিল। কিন্ত সবাই এই প্রণোদনা পায়নি। এছাড়া অনেকে ঋণ নিয়ে সমস্যায় পড়ে গেছেন। তাদেরকে রক্ষায় সরকারের সহযোগিতা চাই।
পণ্য পরিবহন প্রসঙ্গে নাসরিন ফাতেমা আউয়াল বলেন, সারাদেশে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী ঢাকায় আনতে সরকারের কাছে পরিবহন সহযোগিতা চাই। এছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বিক্রি করতে সারাদেশের জেলায় জেলায় আড়ংয়ের মতো ‘সেঁউতি’র শোরুম খুলতে চাই, সেখানে সরকারের সহযোগিতা চাই।
প্রসঙ্গত, নাসরিন ফাতেমা আউয়াল গবেষণাধর্মী ব্যবসায়ের নেশা থেকে যিনি গড়ে তুলেছেন একের পর এক প্রতিষ্ঠান, যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এছাড়া দেশের নারী উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত করার মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি আত্ম-কর্মসংস্থানের জন্য কারিগরি, বৃত্তিমূলক ও আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ, উৎপাদনশীল উপকরণ এবং ক্ষুদ্রঋণের ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন।
কুটিরশিল্পে প্রশিক্ষণ নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য বিক্রির জন্য ‘সেঁউতি’ নামে একটি আউটলেট প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে নারী উদ্যোক্তারা তাদের তৈরি পণ্য পাঠিয়ে দেন এবং তা বিক্রি করে ‘সেঁউতি’। উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য বিক্রির অর্থ ঘরে বসেই পেয়ে যান। এর ফলে উদ্যোক্তাদের বেঁচে যায় দোকান ভাড়াসহ অন্যান্য খরচসমূহ।
সান নিউজ/এনএএম/এমকেএইচ