জেলা প্রতিনিধি: পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণের কারণে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রংপুর, নীলফামারী ও লালমনিরহাটের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা বন্যা ও ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন।
আরও পড়ুন: চীনে ভূমিধস, নিহত ২১
এসব অঞ্চলের নদীপাড়ের অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সোমবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৬ টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ মিটার ৩৫ সেন্টিমিটার, অর্থাৎ বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ৫২ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে মৃত্যু ১১, হাসপাতালে ভর্তি ২৯০৫
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম জানান, গত কয়েকদিন থেকে তিস্তার পানি বাড়া-কমার মধ্যে রয়েছে।
রোববার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও আজ সকাল ৬ টা থেকে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি আরও বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে অভিযানের নির্দেশ
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রংপুর গংগাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার কালিগঞ্জ, ঝাড়সিংহেশ্বর, খগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, ডাউয়াবাড়ী, লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর এবং গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
ডিমলা উপজেলার ছোটখাতা গ্রামের আফজাল হোসেন জানান, নদীর পানি বৃদ্ধি ফলে বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। গরু- ছাগল, হাঁস-মুরগী ও ছোট বাচ্চাদের নিয়ে বিপদে আছি।
আরও পড়ুন: স্থগিত পরীক্ষার নতুন তারিখ ঘোষণা
খালিশ চাপানী ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম জানান, নদীর পানি অনেক বেড়েছে। ঘরে পানি ঢুকে থাকার মতো অবস্থা নেই। রাতে ঘুমাতে পারিনি।
ঐ এলাকার সামছুল হক জানান, আমাদের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। আমন বীজতলা ও ধান ক্ষেত পানিতে ডুবে আছে।
ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান সরকার জানান, চরাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদে সরে যেতে বলেছি। রাতে পানি বেড়ে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা পানি বন্দিদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে কাজ করছি।
আরও পড়ুন: সোমবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন জানান, পানি বন্দি মানুষদের নৌকায় নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে কাজ করছেন সংশ্লিষ্ট চরাঞ্চলের ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গ্রাম পুলিশ।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা জানান, ব্যারেজের ৪৪ টি গেট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সেখানে কাজ করছে।
সান নিউজ/এনজে