খায়রুল খন্দকার, টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ফসলি ক্ষেতে ঘাস খাওয়ায় পিটিয়ে ছাগলকে হত্যা ও তার প্রতিবাদ করায় ওই পরিবারের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: সেবাদানে নার্সদের সতর্ক হওয়া উচিত
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) উপজেলার ফলদা ইউনিয়নের ধুবলিয়ার দক্ষিণ পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত কাজিম উদ্দিনের ছেলে নাজমুল হোসেনের (৩০) ছাগল একই গ্রামের বাসিন্দা মৃত মোকাদ্দেসের ছেলে মাসুদ রানা সুনুর (৫০) ধান ক্ষেতের ধারে ঘাস খেয়ে গেলে ঘটে এমন ঘটনা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য মতে, সকালে মাসুদ রানা সুনুর ধান ক্ষেতের পাশে একটি পতিত জমিতে ছাগল দিয়ে আসে নাজমুল হোসেন। পরে দুপুর ২টায় ছাগল দড়ি ছিড়িয়া পাশের ধানের ক্ষেতের ধারের ঘাস খেতে থাকে। ক্ষেতের ধারে ছাগল দেখিয়া মাসুদ রানা সুনু বাঁশ দিয়ে ছাগলকে পেটাতে থাকে। যেহেতু ছাগলটির ৫ মাসের বাচ্চা রয়েছে, তাই পেটের আঘাত বেশিক্ষণ সইতে না পারায় ছাগলটি মারা যায়।
বিষয়টি দেখে নাজমুল হোসেন, শাকিল প্রতিবাদ করতে গেলে তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এক পর্যায়ে মাসুদ রানা সুনুর ডাকাডাকিতে আরো একই গ্রামের বাসিন্দা মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে তৈয়ব আলী (৫৫), মৃত মজিদ চকদারের ছেলে হবি চকদার (৪৩), মৃত মজিদ চকদারের ছেলে মিনহাজ চকদার (৩৫), মৃত মজিদ চকদারের ছেলে দুলাল চকদার (৩৮), মৃত কাশেম আলীর ছেলে নুরু (৪০) দৌড়ে দেশীয় অস্ত্র, লোহার রড, লাঠি এনে সবার উপরে অতর্কিত ভাবে হামলে পড়ে। হামলায় পরিবারের মৃত তোফাজ্জল ছেলে শাকিল (১৮), আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী কবিরন বেগম (৫০), মুক্তার আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (৪৫), মৃত তজুল মন্ডলের ছেলে নজরুল ইসলাম (৫৮), নাজমুল হোসেনের স্ত্রী শিরিনা বেগম (২২), মুক্তার হোসেনের ছেলে ময়নাল হোসেন(৫৬), ময়নালের ছেলে দীপণ (২০) কে পিটিয়ে আহত করে। পরে ঘটনাস্থলেই মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে শাকিল, ময়নাল ও দীপন গুরুতর অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে আশেপাশের লোকজন এসে তাদেরকে উদ্ধার করে সবাইকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
কর্তব্যরত ডাক্তার আহতদের ৩জনের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: মানুষের কল্যাণে কাজ করতে এসেছি
ছাগল মালিক নাজমুল হোসেন বলেন, আমি গরীব কৃষক। এই ছাগল পাইলা ও অল্প কিছু ক্ষেতে আবাদ কইরা সংসার চালাই। ছাগল না বুঝে পাশের ক্ষেতে গেলে ওরা অমানবিক ভাবে পিটিয়ে ৫ মাস পেটের গাভীন ছাগলকে মেরে ফেলে। এই বিষয়ে বলতে গেলে আমাকে ও আমার বউ, শ্বাশুড়ি সহ বাড়ির সকলকে হত্যার উদ্দেশ্যে রড, বাঁশ, দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে। আমি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। এর উচিত বিচার চাই।
গুরুতর আহত অবস্থায় ময়নাল হোসেন জানান, আমি ওদেরকে ফেরাতে গিয়েছিলাম কিন্তু সুনু ও ওর লোকজন আমাকে সহ সবাইকে মারতে থাকে। লোহার রড দিয়ে মাথায় বারি মেরে আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। আমার মাথায় কয়েকটা সেলাই দিয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিপক্ষের মাসুদ রানা সুনু সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি ক্ষেতে ছাগল দেখে তাড়িয়ে দেই। এতে ওরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ওপর হামলা করে।
ভূঞাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ফরিদুল ইসলাম বলেন, এই বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে অতি দ্রুত তাদেরকে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
সান নিউজ/এনকে