সারাদেশ

চলনবিলের বাতাসে শুঁটকির গন্ধ

নিজস্ব প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের চলনবিলের বাতাসে এখন শুঁটকি মাছের গন্ধ। দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জলাভূমি মিঠে পানির মৎস্য ভাণ্ডার চলনবিল। প্রতি বছরের মতো এবারও বিলে-নদীতে মাছ ধরার উৎসব চলছে। মাছ কিনে চাতালে শুকানোর মৌসুম শুরু করেছেন চাতাল মালিকরা। এই বিলের সুস্বাদু শুঁটকি মাছের বেশ চাহিদা দেশে-বিদেশে। রপ্তানি হচ্ছে আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে।

চলনবিল অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে শুঁটকি তৈরির ধুম পড়েছে।

এ অঞ্চলের শতাধিক শুঁটকি চাতালে দেশি প্রজাতির মাছের শুঁটকি তৈরিতে সকাল থেকে রাত অবধি মাছ কেনা, ধোয়া, চাতালে শুকানো এবং মান ও প্রকারভেদে বাছাই করে পৃথক করার কাজ করছেন শত শত নারী-পুরুষ।

মৎস্যভান্ডার খ্যাত চলনবিলের সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, নাটোরের সিংড়া, গুরুদাসপুর, নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার বিভিন্ন স্থানে শুটকি উৎপাদনে চাতাল তৈরি করেছেন ব্যবসায়ীরা।

চলনবিল এলাকায় ৪৮টি বিল, ১৪টি খাল ও ১১টি নদীতে এক সময় প্রচুর পরিমাণে কৈ, মাগুর, বাঁচা, রুই, কাতলা, মৃগেল, বাউশ, আইড়, রিটা ইত্যাদি মাছ পাওয়া যেত। বিভিন্ন ধরনের মাছ ধরার উপকরণের সাহায্যে মাছ ধরতেন জেলেরা। তখন অভাব কী জিনিস বুঝতেন না তারা। বর্ষাকালে মাছ ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দিতেন। দেশের বিভিন্ন মোকামে পাঠানো হতো শুঁটকি মাছ।

শুঁটকি ব্যবসায়ীরা জানান, এ ব্যবসায় অনেক লাভ। দেশব্যাপী চলনবিলের মাছের শুঁটকির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বিল এলাকায় এ বছর প্রচুর পরিমাণে টেংরা, পুঁটি, বাতাসী, চেলা, মলা, ঢেলা, টাকি, চিংড়ি, বোয়াল, চিতল, শিলং, রুই, কাতলাসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এখন মাছের দামও অনেক কম থাকায় সবাই শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন চাতালে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শত শত শ্রমিক। প্রতিটি চাতালে নারী-পুরুষ মিলে ১২-১৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। তবে এ কাজে নারী শ্রমিকরাই বেশি দক্ষ বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এ কারণে চাতালগুলোতে নারী শ্রমিকই বেশি।

শুটকি ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমান মহিষলুটি মাছের আড়তে কাঁচা পুটি মাছ ৪০ থেকে ৮০ টাকা, চাঁদা ২০ থেকে ২৫ টাকা, খলিশা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা ও বেলে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ৪০ কেজি কাঁচা মাছ শুকালে ১৩ কেজি শুটকি মাছ হয়। শুটকি মাছের মোকাম সৈয়দপুর, নীলফামারী, রংপুরে বর্তমানে পুটি ১৩০-২শ টাকা, চাঁদা ৮০-৯০ টাকা, বেলে ৩শ টাকা এবং খলিশা ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এসব শুঁটকি প্রকারভেদে প্রতি মণ ১২ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হয়। মাছগুলো চাতালে নেয়ার পর বাজারজাত করতে মাস খানেক সময় লাগে।

সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহেদ আলী জানান, গত বছর এ এলাকায় ৯৫ মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর পোনা নিধন অভিযান জোরদার এবং বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় মাছের প্রাচুর্য বেড়েছে। যে কারণে চলনবিল এলাকায় এবার মাছের উৎপাদন আগের তুলনায় বেড়েছে। এ বছর শুঁটকি উৎপাদন আরও বাড়বে। মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেয়া হয়েছে।

সান নিউজ/কেটি

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী পান্নার গণসংযোগ

রাজীব চৌধুরী, কেশবপুর : আসন্ন কেশবপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে...

বোয়ালমারীতে স্বর্ণের কারিগরকে কুপিয়ে জখম

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে...

বজ্রপাতের সময় করণীয়

লাইফস্টাইল ডেস্ক: চলমান তাপপ্রবাহ...

নিজ্জর হত্যায় সন্দেহভাজন ৩ জন গ্রেফতার 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কানাডায় বসবাসর...

মৃত্যু থেকে বাঁচলেন দেব

বিনোদন ডেস্ক : কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা দীপক অধিকারী দেব। ভার...

কেমব্রিজ পরীক্ষায় ডিপিএস শিক্ষার্থীদের সাফল্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি প্রকাশ...

ফরিদপুরে স্টপেজের দাবিতে মানববন্ধন 

বিভাষ দত্ত, ফরিদপুর: ফরিদপুরে রেল...

পাবনায় আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস পালিত

পাবনা প্রতিনিধি: ‘জলবায়ু স...

অস্ট্রেলিয়া গেলেন বিমানবাহিনী প্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি সফরে অস্...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা