নিজস্ব প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: গেল কয়েক সপ্তাহ ধরেই চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণ প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আক্রান্তের সংখ্যা ওঠা-নামা করছে ১২শ’ থেকে ১৫শ'র মধ্যে। গবেষকরা মনে করছেন, ভারত থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফেরা রোগী এবং তাদের স্বজনদের মাধ্যমেই চট্টগ্রামে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশেষ করে গত এক মাসে করোনা রোগীদের ৯৪ শতাংশই ভারতীয় ধরনে আক্রান্ত হয়েছেন। আর ৩ শতাংশ ব্রিটেনের আলফা এবং ৩ শতাংশ চীনা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। ৩০টি জিনোম সিকোয়েন্সের মাধ্যমে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিভাসুর একদল গবেষক।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ এবং ভেটেরিনারি অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে চলতি মাসেই করোনার ৩০টি পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য উন্মোচন করে। এর মধ্যে ২৮টি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট, ১টি যুক্তরাজ্যের আলফা এবং অন্যটি চাইনিজ ভ্যারিয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত হয়।
সিভাসু উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ জানান, চট্টগ্রামের মানুষজন চেন্নাইতে চিকিৎসার জন্য যায় এবং এটেনডেন্ট যায়। তারা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত হয়ে চট্টগ্রামে এসেছে। এই ভ্যারিয়েন্টটা অন্যান্য যে কোনো ভ্যারিয়েন্ট থেকে বেশি সংক্রমিত করে।
সবশেষ এই গবেষণায় উঠে এসেছে, ভারত থেকে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিয়ে ফেরা ব্যক্তিদের মাধ্যমে। শহর এবং গ্রামে ভারতীয় ধরন ছড়িয়েছে সমানতালে। আর উপজেলা পর্যায়ে আশঙ্কাজনক হারে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত পাওয়া গেছে হাটহাজারীতে। কোরবানির ঈদের পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে সাধারণ মানুষের চলাচল বেড়ে যাওয়ায় সংক্রমণের হার বেড়েছে।
তবে গ্রামাঞ্চলে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়াকে বিপর্যয় বলে মনে করছেন গবেষকরা। বিশেষ করে চিকিৎসা ব্যবস্থা ও সরঞ্জামের অপ্রতুলতায় মৃত্যুহার বাড়ার শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।
সিভাসুর ল্যাব প্রধান প্রফেসর ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস জানান, একবারে যদি মানুষ হাজার হাজার আক্রান্ত হয়, তাহলে একসঙ্গে এত মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া তো সম্ভব না। আমাদেরকে সতর্ক হতে হবে, যাতে আমরা এর তীব্রতা কমাতে পারি। সে জন্য মাস্ক এবং টিকা গ্রহণ করতে হবে।
পূর্ণাঙ্গ জীবন রহস্য উন্মোচন করা ৩০টি নমুনার মধ্যে ১৫টি শহরের এবং ১৫টি গ্রামাঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ১২ জন পুরুষ এবং ১৮ জন নারী। এর আগে সিভাসু করোনার ২২টি জীবন রহস্য উন্মোচন করেছিল।
সান নিউজ/এমএম