জাতীয়

করোনা প্রতিরোধে বিমানবন্দরের সতর্কতা এবং একজন যাত্রীর জবানবন্দী

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশ থেকে দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস থেকে দূরে থাকতে প্রবাসী বাংলাদেশি বা বিদেশি নাগরিকদের দেশে প্রবেশের ক্ষেত্রে নানা ধরণের সতর্কতার বিষয়টি নিয়ে শুরু থেকেই ছিল আালোচিত-বিতর্কিত। সারাদেশের বিমান-স্থল-নৌ বন্দরগুলোতে থার্মাল স্ক্যানার রয়েছে মাত্র একটি, শাহজালাল বিমান বন্দরে। বিষয়টি য়থেষ্ট উদ্বেগের বিধায় উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে দেশের সব বন্দরে থার্মাল স্ক্যানার বসানোর। সোমবার পাঁচটি বন্দরে নতুন থার্মাল স্ক্যানার বসানোর সিদ্ধান্তও নেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর দাবি, বিমানবন্দরে আসা সব দেশের উড়োজাহাজের যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর সবকিছু করা হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ ও নির্দেশনা অনুযায়ী।

কিন্তু যাত্রীদের অভিজ্ঞতা ভিন্ন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৩ টি থার্মাল স্ক্যানারের মধ্যে যে একটি স্ক্যানার সচল রয়েছে, সেটির ব্যবহারই যথাযথভাবে করা হচ্ছে না। এমন অভিযোগ জানিয়ে অনেকে বলছেন করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে বিমানবন্দরে কর্তপক্ষের উদাসীনতায় বিস্মিত তারা। এমনই একজন প্রবাসি বাংলাদেশি লতিফুর রহমান। এ বিষয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর কর্তপক্ষের ব্যবস্থাপনার এক করুণ চিত্র তিনি তুলে ধরেন সান নিউজের কাছে।

সোহেল মুস্তাফা চৌধুরী নামের আরেক প্রবাসী বললেন, প্রায় দুই যুগ ধরে আছি কানাডায়। ব্যবসায়িক এবং পারিবারিক উদ্দেশ্যে মাঝে মধ্যেই দেশে আসতে হয়। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে দেশের মলিন মুখটা খুব বেশি কষ্ট দেয়। করোনা ভাইরাসে মতো একটি বৈশ্বিক সংকটের মধ্যে এই মুহুর্তে বাংলাদেশও রয়েছে। বিদেশ থেকে এখানে আগত যাত্রীদের বেলায় অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা হবে বলেই ধারণা ছিল। আসছি কানাডা থেকে, কিন্তু ট্রানজিট ছিল দুবাই। কানাডাও এখন করোনা আক্রান্ত, দুবাই-এর অবস্থা আরও ভয়াবহ। ভেবেছিলাম এসব দেশ থেকে যারা বাংলাদেশে আসছেন তাদের সবাইকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। কিন্তু প্রথম ধাক্কাটা খেলাম বিমান থেকে নামর আগেই। সেখানে আমাদেরকে দুটো দুটো ফরম দেয়া হল। একটা ইমিগ্রেশনের। আরেকটা হেলথ ডেক্লারেশনে, যেখানে ব্যাখ্যা করতে হয় যে, কোন দেশ থেকে আসা হচ্ছে, গত দুই সপ্তাহের মধ্যে চীনে ভ্রমণ করা হয়েছে কিনা, কারো জ্বর আছে কিনা ইত্যাদি। ব্যাস ওই পর্যন্তই। ফরম দুটো পূরণ করলেও তা ফেরত দেয়ার জন্য কাউকে খুঁজে পেলাম না। বিমান যখন রানওয়েতে তখন শনিবার রাত ১১ টা।

ইমিগ্রেশনে প্রবেশের আগে করোনাভাইরাসজনিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার একটি ডেস্ক দেখতে পেলাম।তবে সেখানে কাউকে চোখে পড়ল না। তার ঠিক আগে আগে রয়েছে একটি থার্মাল স্ক্যানার মেশিন, যার মাধ্যমে যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা হয়। অর্থাৎ কারো জ্বর থাকলে এই স্ক্যানারে সেটা ধরা পড়বে।
অন্য বিমানবন্দরে দেখেছি, এরকম একাধিক স্ক্যানার বসিয়ে লোকজন কড়া দৃষ্টিতে মনিটরের দিকে তাকিয়ে থাকেন। যাদের সন্দেহ হচ্ছে, হাতের জ্বর মাপার মেশিন দিয়ে আবার পরীক্ষা করা হচ্ছে। সেখানে এ নিয়ে সতর্কতার বিষয়টি সহজেই জেরে পড়ার মতো।

করোনাভাইরাস নিরাপত্তায় যে সতর্কতা প্রয়োজন তার কিছুই টের পেলাম না ঢাকা বিমানবন্দরে। এখানে থার্মাল স্ক্যানার মনিটরের দিকে কেউ তাকানোর মতো ছিলেন না, অর্থাৎ কোন মানুষই ছিল না। ভেবেছিলাম কড়া স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ আরও বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতায় সময় লেগে যাবে অনেক। ধারণা ভুল প্রমানিত হল। খুব সহজে এবং খুব দ্রতই বের হয়ে এলাম বাইরে। কেউ ডেকে কিছু জিজ্ঞেসও করলেন না। কোন স্বাস্থ্যকর্মী চোখে পড়ল না। দেখা মিলল কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মী আর পরিচ্ছন্নতাকর্মীর। বিমানে দেয়া ফরম দুটো কোথায় জমা দেব, পুলিশের একজনকে জিজ্ঞেস করলেও তিনি চুপ করে রইলেন।

উল্লেখ্য এর আগে বিবিসি বাংলার দুই সংবাদদাতা সাইদুল ইসলাম এবং আফরোজা নিলাও ঠিক এমন অভিজ্ঞতার কথাই তুলে ধরেছেন বিবিসি’র অনলাইন পোর্টালে

এদিকে শাহজালাল বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ সান নিউজকে বলেন, “যাত্রীদের অভিযোগ সত্য নয়। আমাদের চিকিৎসক ও নার্সরা পালা্ক্রমে ২৪ ঘন্টাই কাজ করছেন। প্রত্যেক যাত্রীকে থার্মাল স্ক্যানারের ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে। কারো যদি তাপমাত্রা পাওয়া যায়, তাহলে তাকে আবারও পরীক্ষা করা হচ্ছে।”
তার দাবি, একজন চিকিৎসক সবসময়েই এই মনিটরের দিকে লক্ষ্য রাখেন। সেটা হয়তো বাইরে থেকে অনেকে বুঝতে না পারেন। কিন্তু সবসময়েই সেখানে নজরদারি করা হচ্ছে।

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

তরুণ প্রজন্ম কোন নির্বাচনী ভাগ বাটোয়ারায় বিশ্বাস করে না

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, "আমরা কোন দলের...

২১ বছর ধরে শিশুশিক্ষায় তালপাতার পাঠশালা

শিশুশিক্ষার হাতে খড়ির প্রচলন হিসেবে একটা সময় ছিলো তালপাতার প্রচলন। আর লেখনী হ...

সুন্দরবনের উপকূলে বিলুপ্তির পথে মাটির মটকি

গভীর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্ব ঐতিহ...

সুন্দরবনের উপকূলে ইলিশের সুবাস

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্য ভান্ডার...

নিখোঁজের দুইদিন পর খালে মিলল প্রতিবন্ধী শিশুর মরদেহ

সোমবার (১৪ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বদলকোট ইউনিয়নের মেঘা খাল থেকে ওই শি...

হেলমেট-মাক্স ঢেকে নিষিদ্ধ আওয়ামিলীগের ঝটিকা মিছিল

মানিকগঞ্জে হেলমেট-মাস্কে মুখ ঢেকে আবারো প্রকাশ্যে ঝটিকা মিছিল করেছে কার্যক্রম...

গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক পরিবেশ বিনষ্ঠের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

গোপন তৎপরতায় দীর্ঘদিন ধরে অভ্যস্ত গুপ্ত সংগঠন কর্তৃক মব সৃষ্টির অপচেষ্টা, শিক...

বাঁশ ও বেত শিল্পে ধ্বস

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্...

তপু ও ধলা পাহাড়ের হৃদয়স্পর্শী সম্পর্ক

বাগেরহাটের ঐতিহাসিক খানজাহান আলী (র:) মাজারের দিঘিতে থাকা কুমিরের সম্পর্কে। ম...

লক্ষ্মীপুরে আরএসডি'র কর্মকর্তাদের জাগ্রত করতে প্রতীকী জানাযা

লক্ষ্মীপুরে খানাখন্দভরা সড়কগুলো মেরামতের উদ্যােগ না নেওয়া এবং সড়ক ও জনপদের ঘু...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা