ছবি : সংগৃহিত
জাতীয়

স্মার্ট কৃষি কার্ড নিয়ে অনিশ্চয়তা!

নিজস্ব প্রতিনিধি : প্রায় দুই কোটি টাকা খরচের পর সম্ভাব্য আগামী জুলাই মাস থেকে শুরু হওয়া আরেকটি বড় প্রকল্পের সাথে একীভূত করার বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সুপারিশ করেছে। ফলে প্রকল্প শুরুর প্রায় এক বছর পর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ‘স্মার্ট কৃষি কার্ড ও ডিজিটাল কৃষি (পাইলট)’ শীর্ষক প্রকল্প নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন : ইসলামী ব্যাংক ও বিআরইবি’র মধ্যে সেবাচুক্তি

এখনো এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসা হয়নি বলে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

দেশের মোট প্রায় পাঁচ কোটি কৃষকের মধ্যে প্রায় এক কোটি ৬২ লাখ কৃষকের ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরি ও এক কোটি ৯ লাখ কৃষককে স্মার্টকার্ড দিতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পাস হয়। আর এপ্রিল মাস থেকে কাজ শুরু হয় বলে জানান কৃষি সংশ্লিষ্টরা।

২০২৫ সালে প্রায় ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ডিজিটাল কৃষি প্রোফাইল তৈরি, স্মার্ট কৃষি কার্ড বিতরণ, ডিজিটাল কৃষিতথ্য বিশ্লেষণ ও তথ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা সহজ হবে। এর মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের সাহায্যে কৃষকের কৃষি উৎপাদনের সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা গ্রহণ সহজ হবে।

আরও পড়ুন : বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়সহ ১৪টি কৃষি অঞ্চলের ৯টি জেলা যেমন গোপালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, টাঙ্গাইল, বরিশাল, যশোর, দিনাজপুর, রাজশাহী, বান্দরবান ও ময়মনসিংহ জেলার সব উপজেলা ও মেট্রোপলিটন এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

এ প্রকল্পের জন্য প্রেষণ ও আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন পদে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, দু’টি গাড়ি ভাড়া, মাঠপর্যায় কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, আঞ্চলিক পর্যায়ে কর্মকর্তাদের কর্মশালা, প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, প্রিন্টার, ফটোকপি মেশিন কেনা, ডকুমেন্টারি এবং লিফলেট তৈরি ও প্রচার এবং বেতনভাতা বাবদ প্রায় দুই কোটি টাকার কাছাকাছি খরচ হয়েছে বলে জানা যায়। এরই মধ্যে প্রকল্পের মূল কাজ কৃষি স্মার্টকার্ড দেয়ার জন্য টেন্ডারও আহ্বান করা হয়।

তবে প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রকল্প পরিচালক মো: আজম উদ্দিনের বিরুদ্ধে তিনটি প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের অভিযোগে তোলে। এ পরিপ্রেক্ষিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আলম এই টেন্ডার বাতিলের নির্দেশ দেন। এর পরও তা বাতিল না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত গত ৩ জানুয়ারি দ্রুততম সময়ের মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় আজম উদ্দিনের নিয়োগ (পিডি) বাতিল করে ড. শামীম আহমেদকে পিডি নিয়োগ দেয়।

আরও পড়ুন : বুধবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরকে (ডিএই) লিড এজেন্সি ধরে কৃষি বিপণন অধিদফতর (ড্যাম), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিইআরসি), বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি), বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এবং বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (বিএমডিএ) সম্পৃক্ত করে ‘প্রোগ্রাম অন অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (সংক্ষেপে-পার্টনার)’ শীর্ষক কৃষি সেক্টরের সবচেয়ে বড় একটি প্রকল্প গ্রহণের প্রস্তুতি চলতে থাকে।

চলতি বছরের গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পার্টনার প্রকল্পটির প্রস্তাব পর্যালোচনা শেষে অনুমোদন দেয় পরিকল্পনা কমিশনের মূল্যায়ন কমিটি। প্রায় সাত হাজার ২১৪ কোটি টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনসাপেক্ষে আগামী জুলাই থেকে শুরু হওয়ার কথা। এতে বাংলাদেশ সরকার প্রায় এক হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা এবং বাকি অর্থ সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ)।

প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ কে এম ফজলুল হক।

আরও পড়ুন : কেনা হচ্ছে ২৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি

সূত্র হতে জানা যায়, ডিএই কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘স্মার্ট কৃষি কার্ড ও ডিজিটাল কৃষি (পাইলট)’ শীর্ষক প্রকল্পটি যে পর্যন্ত অগ্রগতি হয়েছে সে পর্যন্ত বাস্তবায়িত ধরেই সমাপ্ত করে স্মার্ট কৃষি কার্ডের সব কার্যক্রম নতুন করে অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা পার্টনার প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়।

অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা উইং) মো: মাহবুবুল হক পাটওয়ারী এ সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

বুধবার (৮ মার্চ) বিকেলে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, পিইসি ‘স্মার্ট কৃষি কার্ড ও ডিজিটাল কৃষি (পাইলট)’ শীর্ষক প্রকল্পটি বন্ধ করে নতুন প্রকল্পের সাথে একীভূত করার বিষয়ে একটি সুপারিশ দিয়েছে। আমাদের (কৃষি মন্ত্রণালয়) দিক থেকে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। আমরা চিন্তাভাবনা করছি, দেখা যাক।

আরও পড়ুন : বাজার মনিটরিং কমছে!

গত ১৭ জানুয়ারি স্মার্ট কার্ড ও ডিজিটাল কৃষি (পাইলট) প্রকল্পের পর্যালোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার এতে সভাপতিত্ব করেন।

এ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন পার্টনার এবং স্মার্টকার্ড ও ডিজিটাল কৃষি (পাইলট) প্রকল্পের আওতায় অভিন্ন কার্ড তৈরি করতে হবে; এ দু’টি প্রকল্পের পার্থক্যগুলো চিহ্নিহ্নত করে দুটোকে সমন্বয় করে কিভাবে অভিন্ন একটি কার্ড প্রদান করা যায়, সে বিষয়ে সব পক্ষের সাথে সমন্বয় করে একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করতে হবে।

কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ১১ জানুয়ারি নতুন পিডি ড. শামীম আহমেদ দায়িত্ব নেন। আগের পিডি প্রায় ৬৭ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে স্মার্টকার্ড তৈরির জন্য যে টেন্ডার আহ্বান করেছিলেন অভিযোগ ও নতুন প্রকল্পের সাথে সমন্বয়ের জন্য নতুন পিডি সেই টেন্ডার গত ২০ জানুয়ারি বাতিল করেন।

আরও পড়ুন : মঙ্গলবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

জানা যায়, স্মার্টকার্ড ও ডিজিটাল কৃষি (পাইলট) প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর একটি অগ্রাধিকামূলক প্রকল্প। চলতি বছরের মধ্যেই কৃষককে স্মার্টকার্ড সরবরাহ কার্যক্রম শুরুর কথা ছিল। কিন্তু পিইসির সভায় চলমান প্রকল্প বন্ধ করে আগামীতে শুরু হবে, এমন প্রকল্পের সাথে একীভূত করার সুপারিশে স্মার্টকার্ড ও ডিজিটাল কৃষি (পাইলট) প্রকল্পটি ফের গতি হারিয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় এখন কী সিদ্ধান্ত নেয়, এ প্রকল্পটি আর থাকছে কি না- তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

স্মার্টকার্ড ও ডিজিটাল কৃষি (পাইলট) প্রকল্প পরিচালক ড. শামীম আহমেদ এ বিষয়ে জানান. আমি গত ১১ জানুয়ারি প্রকল্পে যোগদান করেছি। প্রকল্পটিকে গতিশীল করতে কাজ করছি। যেহেতু এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্প, ২০২৩ সালের মধ্যে কৃষককে স্মার্টকার্ড দেয়ার কথা তাই সেভাবেই এগিয়ে নিচ্ছি। কিন্তু পিইসি সভার সুপারিশে আমি কিছুটা হতাশ। তবে সরকার যেটা ভালো মনে করবে, সেটি করবে।

আরও পড়ুন : খুলনায় স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স অনুষ্ঠিত

গণমাধ্যমকে এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, স্মার্টকার্ড ও ডিজিটাল কৃষি (পাইলট) প্রকল্প ৯টি জেলায় স্মার্ট কৃষি কার্ড করবে এবং বাকি ৫৫টি জেলায় অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা পার্টনার প্রকল্পটি করবে- এখন পর্যন্ত এ অবস্থায়ই আছে। দু’টি প্রকল্পই অভিন্ন কার্ড করবে। পার্টনার প্রকল্পের পক্ষ থেকেও জোর করে বলা হয়নি যে, স্মার্টকার্ড ও ডিজিটাল কৃষি (পাইলট) প্রকল্প বিলুপ্ত করে সব কাজ তাদের দেয়া হোক।

পিইসির সভায় যে সুপারিশ করা হয়েছে বিষয়টি এখন কৃষি মন্ত্রণালয় দেখছে। বিশেষ করে কৃষিমন্ত্রী এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। তবে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা একমাস দাবদ...

ভরিতে ১৮৭৮ টাকা কমলো স্বর্ণের দাম 

নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা অষ্টমবারের...

ঢাকায় ফিরল ৮ বাংলাদেশির লাশ  

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার সময় তিউ...

মিল্টন সমাদ্দার রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক: মৃত্যুর জাল সনদ তৈরির অভিযোগে প্রতারণা ও জ...

আমিরাতে প্রবল বৃষ্টিপাত, সতর্কতা জারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রবল বৃষ্টিপা...

শুক্রবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

সান নিউজ ডেস্ক: প্রতি সপ্তাহের একেক দিন বন্ধ থাকে রাজধানীর ব...

কাঁচা আমের উপকারিতা

লাইফস্টাইল ডেস্ক: গ্রীষ্মকালের সু...

মেহনতি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নই আ’লীগের লক্ষ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন...

১০ জেলেকে মুক্তি দিল আরকান আর্মি

নিজস্ব প্রতিবেদক: নাফ নদীতে মাছ শ...

বজ্রপাতে একদিনেই প্রাণ গেল ১০ জনের

নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈশাখের তীব্র দ...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা