জাতীয়

‘মানুষই নাই ভিক্ষা দিবো কে’

জাহিদ রাকিব

করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবিলায় ২৩ জুলাই হতে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশব্যাপী লকডাউন চলছে। এর আগে ১ থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ পালিত হয়েছিলো তবে ঈদুল আজহার কারণে ১৫ হতে ২৩ জুলাই ভোর ৬টা পর্যন্ত শিথিল ছিলো। এই লকডাউনে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা পড়েছেন বিপাকে। বিশেষ করে হত-দরিদ্র, শ্রমিক ও ভিক্ষুক শ্রেণি পড়েছে আরও কষ্টে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে এসব প্রান্তিক মানুষের সাথে কথা বলে তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা জানা যায়।

ষাটোর্ধ্ব বয়সের নারী জাহেরা বেগম। বসবাস করেন খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে ফুটপাতে। তিনি বলেন, রাস্তাঘাটে মানুষ নাই, আমগোরে ভিক্ষা দিবো কে। আর ভিক্ষা না দিলে আমরা কি খামো। এইভাবে লকডাউনে নিজের অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করলেন দীর্ঘদিন বসবাস করা এই নারী। জাহেরা বেগমের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। ছোটবেলা থেকে খিলগাঁও এলাকায় রাস্তার ফুটপাতে থাকেন। লকডাউনে রাস্তাঘাটে মানুষ বের না হওয়ায় ভিক্ষা পান না। তাই সকাল থেকে খাওয়া হয়নি তার। রেল গেছে ভাসমান কিছু বস্তিতে দেখা যায় লকডাউনে কাজ-কর্ম না থাকায় কেউ অর্ধাহারে কেউ অনাহারে এইভাবে নিজের কষ্টের কথা বলছেন তারা।

বুধবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর খিলগাঁও ফ্লাইওভারের নিচে ও রেললাইন ঘেষে বসবাস করা বেশ কয়েকজন ভাসমান মানুষের সাথে কথা বলে এমন চিত্র ফুটে ওঠে। রেললাইন ঘেষে ভাসমান খুপড়ি ঘরে থাকেন মো. ছিদ্দিক মিয়া। তিনি আগে রাস্তায় পানি বিক্রি করতেন। করোনার কারণে এখন আর পানি বিক্রি করতে পারেন না। দীর্ঘ ৩৬ বছর এই জায়গায় তার বসবাস। ছিদ্দিক মিয়া বলেন, বাবা কখনো এমন কষ্ট কাটাতে হয়নি। এই করোনা আমাদের না খেয়ে থাকার অভ্যাস করেছে।

রেললাইনের আরেকটু সামনে গিয়ে কথা হয় পারুল আক্তারের সাথে। পারুল আগে রেললাইনের পাশে ইট ভাঙ্গার কাজ করতেন। লকডাউন থাকায় সে কাজটি বন্ধ হয়ে গেছে। সরকার থেকে কোন সাহায্য পান নাই এখনো। ফলে খেয়ে না খেয়ে জীবন কাটাতে হচ্ছে এখন।
দুই নাতি, অসুস্থ মেয়ে নিয়ে থাকেন হেলেনা বেগম। পেশায় গৃহকর্মী। দুইটা মেসে কাজ করতেন। কয়েক মাস আগে মেসের সদস্যরা ঢাকা ছাড়ায় তিনি বেকার হয়ে পড়েছেন।

হেলেনা বেগম বলেন, দুইডা মেসে কাম হরতাম। তারা ভার্সিটির ছাত্র ছিলো। বাড়িতে গেছে সবাই। আর আমার কাম বন্ধ। আমার মতো অনেকেই আছে এই বস্তিতে। তাদের কোন কাজ নাই। আমরা সবাই এখোন না খাইয়া মরনের দশা।
হতাশা নিয়ে নাহার বেগম বলেন, এক লকডাউন তো কাটাইলাম অনেক কষ্টে। আবার সরকার লকডাউন দিছে। কী করবো কী খাবো বুঝতেছি না।

গেলো দেড় বছরে করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাবে দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ। এদের মধ্যে বেশির ভাগ জনগোষ্ঠীই শহরে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত। বিশেষ করে রিকশাচালক, নিরাপত্তাপ্রহরী, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী, পরিবহন ও রেস্তোঁরাশ্রমিক, বেসরকারি স্কুলশিক্ষক ও নির্দিষ্ট বেতনে কর্মরত মানুষ।

সান নিউজ/জেআই/এফএআর

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

কোচিং সেন্টারে মিলল বিপুল অস্ত্র-বিস্ফোরক

রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় একটি বাড়ি থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরি সরঞ্জাম...

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কোনো চাঁদাবাজকে বাংলাদেশে থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র...

ফের ৯৮ বাংলাদেশিকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

ফের কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয়েছে ৯৮ বাংলাদেশিকে। বিম...

আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক শেষ, যুদ্ধ স্থগিতের ঘোষণা নেই

যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট...

‘গোপন রাজনীতি’, ছাত্রশিবির ও ডাকসু নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্টরুম সংস্কৃতি এবং এই কেন্দ্রিক নির্যাতন গত ১৫ বছরে ছি...

ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফই বলেছিলেন নির্বাচন করতে, দাবি ফারুকের

সরকারের ‘পছন্দে’র মানুষ হিসেবে ফারুক আহমেদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড...

জুলাই সনদ: আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না, আরও যা আছে অঙ্গীকারনামায়

গণ অভ্যুত্থানের পথ বেয়ে রাষ্ট্র সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের ভিত্ত...

বিদেশের বাংলাদেশি সব কূটনৈতিক মিশন থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর নির্দেশ

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি বিদেশে বাংলাদেশের সব কূটনৈতিক মিশন, কনস্যুলে...

ফের ৯৮ বাংলাদেশিকে বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠাল মালয়েশিয়া

ফের কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয়েছে ৯৮ বাংলাদেশিকে। বিম...

‘গোপন রাজনীতি’, ছাত্রশিবির ও ডাকসু নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত ঢাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেস্টরুম সংস্কৃতি এবং এই কেন্দ্রিক নির্যাতন গত ১৫ বছরে ছি...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা