নিজস্ব প্রতিবেদক : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, পাকিস্তান আমলের ২৩ বছরে নানান আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে। মানুষের অধিকার আদায়ে প্রতিটি আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করে আমরা ১৯৭১ সালে বিজয় দিবস পেয়েছি। কিন্তু তখন স্বাধীনতা পূর্ণতা লাভ করেনি। স্বাধীনতা পূর্ণতা লাভ করে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির মাধ্যমে।
এসময় তিনি বলেন, একাত্তর সালে ঊনিশ মার্চ গাজীপুরে পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম যে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছিল, সেই দিনটিকে স্বীকৃতি দিতে হবে। উনিশে মার্চ প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস উদযাপন পরিষদ ও বাংলাদেশ সাংবাদিক অধিকার ফোরাম (বিজেআরএফ) এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, ১৯ মার্চ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে গুলি হয়েছে, এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে অতীতে কখনও ঘটেনি। ১৯ মার্চ সশস্ত্র প্রতিরোধ শুরু হয়। ২৬ মার্চ থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। ১৯ মার্চ প্রথম ও শেষ সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ। সেজন্য এই দিবসটি পালন করার জন্য যারা উদ্যোক্তা, উনারা যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, আমি মনে করি এটা সময় উপযোগী এবং এটা স্বীকৃতির দাবি রাখে।
১৯ মার্চের প্রতিরোধ কীভাবে হয়েছিল, তার আগে কি কি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল, সেসব ঘটনা অনুষ্ঠানে তুলে ধরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল বলেন, চাইনিজ রাইফেল নিয়ে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে পাল্টা গুলি করা হয়। আমি মনে করি ১৯ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের টার্নিং পয়েন্ট ছিল। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এই সশস্ত্র গণবিদ্রোহের খবর প্রকাশিত হয়। কাজেই এটা নিঃসন্দেহে স্বাধীনতার গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট ছিল। এটা ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃতির দাবি রাখে। এই গৌরব কেবল গাজীপুরবাসীর জন্য নয়, সমস্ত জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি সফলকাম হোক। ৮ মার্চ মুক্তি পাওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর ১০ মার্চ বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে স্বাধীনতা পরিপূর্ণতা লাভ করেছিল বলে মন্তব্য করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।
মন্ত্রী বক্তব্য দেয়ার আগে বেশিরভাগ বক্তা ১৯ মার্চকে প্রথম সশস্ত্র দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে মন্ত্রীকে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান।
মূখ্য আলোচকের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের অবদানের কথা আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী যে ভূমিকা রেখেছিলেন, তা কখনো ভোলার নয়। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে বের হয়ে বাংলাদেশে ফিরে সদ্য স্বাধীন দেশগঠনে আত্মনিয়োগ করেন। তখন দেশে কোনো প্রশাসনিক কাঠামো ছিল না। বঙ্গবন্ধু কূটনীতি, ডিফেন্সনীতিসহ সব নীতি গ্রহণ করে দেশ গঠনের কাজ শুরু করেন। কিন্তু ৭৫ সালে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিরা বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
ঊনিশে মার্চ প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক হাফিজা খাতুনের সভাপতিত্বে সভায় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোহবান চৌধুরী, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আজমত উল্লাহ খান, সাংবাদিক নেতা আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সান নিউজ/এমআর/এসএ/এস