রাজনীতি

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে আইন প্রণয়নের বিকল্প নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে বেশকিছু সংস্কার ও নতুন কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার কোনো বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। নির্বাচন কমিশন নিয়ে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিকদলগুলোর নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তরা এসব কথা বলেন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজনের পক্ষ থেকে সোমবার (৪ অক্টোবর) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ‘নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক অনলাইন গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলা হয়।

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খানের সভাপতিত্বে ও সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকটিতে বক্তব্য রাখেন সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমীরুল ইসলাম, বিচারপতি এম এ মতিন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক সচিব আবদুল লতিফ মণ্ডল, অ্যাডভোকেট ড. শাহদীন মালিক, সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, জনস্বাস্থ্য ব্যক্তিত্ব ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রমুখ।

বৈঠকে সুজনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার 'প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২১' নামে একটি আইনের খসড়াটি উপস্থাপন করেন।

খসড়ায় নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের লক্ষ্যে প্রাক্তন একজন জেষ্ঠতম প্রধান বিচারপতিকে আহŸায়ক করে ছয় সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, কমিশনে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ধারা ৪ এর অধীন যোগ্যতা ও গুণাবলীসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে প্যানেল তৈরির লক্ষ্যে ধারা ৪ এর অধীন যোগ্যতা ও গুণাবলীসম্পন্ন ব্যক্তিদের অনুসন্ধান করিবে। একইসঙ্গে কমিশনে নিয়োগ দেওয়ার লক্ষ্যে নাগরিকদের নিকট হইতে নাম আহŸান করিবে। প্রাপ্ত নামগুলো থেকে কমিটি যাচাই বাছাই করে ন্যূনতম ৫ জন নারীসহ ২০ জনের একটি প্রাথমিক তালিকা ও তাঁদের যোগ্যতা সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন গণবিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করার কথা খসড়ায় বলা হয়।

এরপর প্রাথমিক তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের সম্পর্কে অনুসন্ধান কমিটি গণশুনানির আয়োজন ও তাঁদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে সর্বসম্মতভাবে ন্যূনতম ২ জন নারীসহ ৭ জনের একটি প্যানেল প্রস্তুত করে রাষ্ট্রপতিকে জমা দেয়ার কথা উলে­খ করা হয়। অনুসন্ধান কমিটির কর্তৃক প্রকাশিত ও প্রেরিত প্যানেল হতে রাষ্ট্রপতি তালিকা প্রাপ্তির ৭দিন পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন পদে নিয়োগ প্রদান করার কথা বলা হয়েছে খসড়ায়।

জাফর উল্লাহ চৌধুরী বলেন, সাম্প্রতিককালে বিচারপতির বিভিন্ন কার্যাকলাপে তাঁদের প্রতি পুরোপুরি শ্রদ্ধা রাখা কষ্টকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তাই অনুসন্ধান কমিটি বিচারপতিদের একতরফা যাতে না হয়। আর নাম অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে জনগণের হাতে ছেড়ে দিতে হবে, সাধারণ জনগণই নাম প্রস্তাব করুক।

বিচারপতি এম এ মতিন বলেন, অনুসন্ধান কমিটিতে বিচারপতিদের না আনাই ভালো মনে হয়। কারণ কমিটি নিয়োগ দেওয়ার পর কমিশন ভালো না হলে বিচারপতিগণ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হতে পারে। তাঁদেরকে এই বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখাই উত্তম। তা ছাড়া বিচারপতিদের প্রশাসনিক ব্যাপারে তেমন ভালো অভিজ্ঞতাও নেই; প্রশাসনিক কাজে দক্ষ এমন ব্যক্তিদেরই কমিটির সদস্য করা উচিত।

ব্যারিস্টার আমীরুল ইসলাম বলেন, সংবিধানের Occupied Area কে সম্মান প্রদর্শন করেই এই কাজটি করতে হবে। অন্যান্য দেশের প্র্যাকটিসগুলো কিভাবে হচ্ছে, আমরা সে বিষয়ে আবারও চিন্তা করতে পারি।

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সংবিধান মেনে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠনের লক্ষ্যে একটি আইন প্রণয়নের কোনো বিকল্প নেই। তবে আইন প্রণয়ন করলেই হবে না, আইনটি হতে হবে জনস্বার্থেÑ দলীয় বা কোটারি স্বার্থে নয় Ñ এবং এটি প্রয়োগও হতে হবে জনগণের স্বার্থে, যাতে কয়েকজন সৎ, নির্ভীক ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ পান।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমাদের সংবিধানের ধারাগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে আইনটি নিয়ে কাজ করতে হবে। এর আগেও ২০১১ সালে আমরা একটি খসড়া প্রস্তাব করেছিলাম, দুঃখজনক হলেও এটি নিয়ে পরবর্তীতে তেমন কোন আলোচনা হয়নি। আমাদের এমন একটি খসড়া আইন প্রণয়ন করা উচিত যেটি দূরদর্শী হবে, শুধু বর্তমান প্রেক্ষাপটে নয়।

ড. শাহদীন মালিক বলেন, অনুসন্ধান কমিটিতে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উলে­খ না করে আপিল বিভাগ কর্তৃক মনোনীত একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বা বিচারপতি বলা যায়। কমিশনের কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে প্রথম চারজন নিয়োগ দিয়ে এক বছর পর আরেকজন কমিশনয়ার নিয়োগ দেওয়ার বিধান রাখা যেতে পারে।

আলী ইমাম মজুমদার বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য কিন্তু নির্বাচন করা এবং সে নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে। সেই লক্ষ্যে এ ধরনের একটি আইন হলে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে বলে আমি মনে করি। তবে এটাও সত্য যে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থার মধ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে না পারলে কোনো কমিশন দিয়েই সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারব না।

আসিফ নজরুল বলেন, অবশ্যই একটি ভালো নিয়োগ আইন আমাদের দরকার। কিন্তু এই সরকার ব্যবস্থাই সুষ্ঠু নির্বাচন করা অসম্ভব। গত তের বছর ধরে পুলিশ ও প্রশাসনকে যেভাবে সাজানো হয়েছে এতে কোনো শক্তিশালী কমিশনের পক্ষেও ফাংশন করা সম্ভব হবে না। তাই সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আইন করার পাশাপাশি সরকার ব্যবস্থা নিয়েও কথা বলতে হবে।

সান নিউজ/এফএআর

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ১৭ জন

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্ব...

ঢাকায় নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড মিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে পরবর্তী মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেব...

টাইগারদের শ্বাসরুদ্ধকার জয়

স্পোর্টস ডেস্ক : জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ৫ র...

মেয়ে দত্তক নিলেন পরী

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই সিনেমার লাস্যময়ী চিত্রনায়িকা দুইজনের সংস...

মানুষকে সচ্ছল করতে কাজ করছি

নিজস্ব প্রতিবেদক : বহুমাত্রিক কর্মসূচি হাতে নিয়ে আমরা প্রত্য...

ঢাকার বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: শনিবার (১১ মে) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন স্থা...

২১ বছর পর পৃথিবীতে সৌরঝড়ের আঘাত 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ২১ বছর পর পৃথিবীতে শক্তিশালী সৌরঝড় আঘাত...

কাভার্ডভ্যান-মোটরসাইকেল সংঘর্ষ, নিহত ১

জেলা প্রতিনিধি: চট্টগ্রামে কাভার্ডভ্যান ও মোটরসাইকেলের মুখোম...

পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা জেলায় কলারোয়ায় পানিতে ডুবে খাদিজা খাতুন নামে ৬ বছর...

১০ অঞ্চলে ঝড়ের শঙ্কা, বৃষ্টি হবে কালও

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ১০ অঞ্চলে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা