মতামত

শিক্ষা ব্যাংক করতে আছে সরকারের অনিহা

ফারুক আহমাদ আরিফ: শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শিক্ষাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সরকারি একটি আলাদা ব্যাংক হতে পারে। কেননা শিক্ষার সাথে দেশের প্রায় ৫ কোটি ব্যক্তি জড়িত। এক্ষেত্রে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা নেই। আছে শুধু সরকারের অনিচ্ছা-অনিহা। শিক্ষা বিষয়ে রাষ্ট্রের কূপমণ্ডকতা বলে অভিমত জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট সদস্য, নটরডেম কলেজের অধ্যাপক ও শিক্ষাবার্তার সম্পাদক আফরোজান নাহার রাশেদা। সাননিউজের কাছে এক লিখিত সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রাষ্ট্র শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য একটি শিক্ষা ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে পারে কিনা? যেখানে শিক্ষার্থীদের যাবতীয় ফি, সরকারি বরাদ্ধ, বেতন-ভাতা, পেনশন ও শিক্ষাব্যবস্থার কল্যাণে নাগরিকদের অর্থপ্রদান সঞ্চয় করা হবে। এমন উদ্যোগ নিতে কোন প্রতিবন্ধকতা আছে কি?

এমন প্রশ্নে আফরোজান নাহার রাশেদা লেখেন, দেশে একটি শিক্ষা ব্যাংক হওয়া দরকার। কেননা দেশের সাড়ে ১৬ কোটি জনগণের মধ্যে শিক্ষাব্যবস্থার সাথে সরাসরি জড়িত সংখ্যাই হবে ৫ কোটির বেশি। এই বিপুল সংখ্যক ব্যক্তির জন্য একটি ব্যাংক হওয়াটা অবশ্যই দাবি রাখে। সেখানে শিক্ষার্থীদের যাবতীয় ফি, তাদের দেয়া সরকারের ব্যয় সব অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তিনি লেখেন ব্যাংক করতে কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। আছে শুধু সরকারের অনিচ্ছা-অনিহা ও শিক্ষা বিষয়ে রাষ্ট্রের কূপমণ্ডকতা।

বর্তমানে দেশে প্রায় ১১ রকমের শিক্ষাব্যবস্থা চালু আছে। তা বাদ দিয়ে একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা করা যায কিনা?

এএন রাশেদা লেখেন, পাকিস্তানামল থেকে আমরা একমুখী শিক্ষাব্যবস্থার দাবি জানিয়ে আসছি। দেশ স্বাধীন হলো কিন্তু আমরা মুক্তি পেলাম না।

করোনা মহামারিতে প্রায় দেড় বছর যাবত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। সরকার অনলাইন, বিটিভির মাধ্যমে কিছু কাজ করছে, এটির বিকল্প কি হতে পারে? বিশেষ করে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে কি পদক্ষেপ নেয়া যায়?

শতছিন্ন কাঁথা যেমন মেরামতে কাজ দেয় না, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাও তাই। টোটকা ওষুধে কাজ হচ্ছে না। যদি ক্লাসে শিক্ষক-ছাত্র সংখ্যার অনুপাত ১: ৩০ হতো তাহলে শীতকালে বা মাদরাসা খুলে দেয়ার সময় স্কুলগুলোও খুলতে পারত। ডাবল শিফটে ক্লাস করাতে পারতেন শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে। শিক্ষকরা সমাজ সচেতনমূলক কাজ করতে পারতেন। তাদেরকে অবজ্ঞা করে বসিয়ে রাখা হলো। শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসছে না। বেতন দিচ্ছে না। সেক্ষেত্রে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কিভাবে চলছেন? কি কঠিন দারিদ্রের মধ্যে দিনযাপন করছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয় তার খোঁজ নেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। তাই যা হবার তাই হয়েছে-চরম অব্যবস্থা। এখন এলাকাভিত্তিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মতামতের ভিত্তিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষকদের যে ক্ষতি হয়েছে তার দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। বিভিন্ন প্রকল্পে অহেতুক ব্যয় বরাদ্দের প্রবণতা কমিয়ে শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যয় বাড়ানো অসম্ভব কিছু নয়।

জাতীয় বাজেটে শিক্ষা, তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে সমন্বয় করে ৯৪ হাজার ৮৭৫কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে সরকার। সেখানে প্রাথমিক ও উচ্চশিক্ষায় ৭১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্ধ রাখা হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে এমন সমন্বিত বাজেট কতটা কার্যকরী হতে পারে শিক্ষাখাতে?

আফরোজান নাহার রাশেদা এ বিষয়ে লেখেন, জাতীয় বাজেটে শিক্ষা, তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে সমন্বয় করে ৯৪ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা বরাদ্ধ রাখা হয়েছে, যা বাজেটের ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ। তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে বাদ দিলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৭১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা বাজেটের ১১ দশমিক ১ শতাংশ। আপনি প্রশ্ন করেছেন সমন্বিত বাজেট কতটা কার্যকরী? আমরা তো ৬০ এর দশক, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে এবং স্বাধীন দেশের প্রাথমিক থেকে দেখে দেখছি। তাই সেইসব বিবেচনা থেকে জেনেছি যে, শিক্ষা ও জনসম্পদ উন্নয়নের পিছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয় এবং শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমেই সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি সম্ভব সেই ধারণায় দেয়া হয়েছিল স্বাধীন দেশে ড. মুহাম্মদ কুদরাত-এ খুদার নেতৃত্বে গঠিত প্রথম শিক্ষা কমিশন রিপোর্টে। শিক্ষায় যে বিনিয়োগ হয় তা কিন্তু সামাজিক উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন তথা সমগ্র দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রগতির লক্ষ্যে।

সাননিউজ/এফএআর

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

জামায়াত, এনসিপির শর্তের চাপে বিএনপি, নির্বাচন নিয়ে নতুন শঙ্কা

বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্ত দিয়ে আন্দোলনে নামার...

পাথর তোলায় রাজনৈতিক দলের ‘ঐকমত্য’, পরে লুট

বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের মধ্যে বিরোধ থাকলেও পাথর উত্তোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর স্থান...

যমুনা সেতুর পশ্চিমে মহাসড়ক অবরোধ, বিচ্ছিন্ন ঢাকা-উত্তরবঙ্গ

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রক...

যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে, রাজনীতি থেকে মাইনাস হবে: সালাহউদ্দিন

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য পরিহার করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প...

তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপরে, ৫ উপজেলার বহু মানুষ পানিবন্দি

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে...

দেব–শুভশ্রীর ছবি নিয়ে তোলপাড়

দীর্ঘ বিরতির পর সাবেক প্রেমিক জুটি দেব ও শুভশ্রী পর্দায়। কৌশিক গাঙ্গুলীর &lsq...

নির্বাচনের রোডম্যাপ আগামী সপ্তাহে, আশা ইসির

আগামী সপ্তাহে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণা করতে পারব...

ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক কাল

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে আলোচনা করতে আগামীকাল শুক্রবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ব...

দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের দুই মন্ত্রী

মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের দুই মন্ত্রী। পাকিস্তানের বাণ...

তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপরে, ৫ উপজেলার বহু মানুষ পানিবন্দি

টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা