আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক মিশনের কার্যক্রম কাতারে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
যুক্তরাষ্ট্র সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার পরও যারা আফগানিস্তান ছাড়তে চায়, তাদের সাহায্যে ওয়াশিংটন ‘নিরলস’ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বলেও সোমবার মন্তব্য করেন তিনি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে যাওয়া দেশটি থেকে শেষ মার্কিন বিমান চলে যাওয়ার পর ব্লিনকেন এসব বলেন।
যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্ররা আফগানিস্তান ছেড়ে এলেও দেশটিতে এখনও হাজার হাজার লোক রয়ে গেছে, যারা পশ্চিমা দেশগুলোকে সহায়তা করেছিলো এবং সম্ভবত আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেয়ার জন্য উপযুক্ত বিবেচিত হতো।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আফগানিস্তান থেকে মার্কিন উপস্থিতি প্রত্যাহারে মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন, তার আগেই যুক্তরাষ্ট্র তার সেনা, কূটনীতিক, মার্কিন নাগরিক ও সহযোগীদের সেখান থেকে সরিয়ে নেয়ার কার্যক্রম শেষ করলো।
চলতি মাসে বিদ্রোহীরা তড়িৎ অগ্রগিত ও কাবুল দখলের পর আফগানিস্তানের পরিস্থিতি সামলাতে বাইডেন যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন সেগুলো নিয়ে রিপাবলিকানদের পাশাপাশি নিজের দলের নেতাকর্মীদের কাছ থেকেও প্রবল সমালোচনা শুনতে হয়েছে ডেমোক্র্যাট এ প্রেসিডেন্টকে।
সোমবার সাংবাদিকদের চিৎকার করে বলা বিভিন্ন প্রশ্নকে পাশ কাটিয়ে ব্লিনকেন আফগানিস্তান প্রসঙ্গে বলেন, কনসুলার কার্যক্রম, মানবিক ত্রাণ সহায়তা দেয়াসহ ওয়াশিংটন তার আফগানিস্তান কূটনীতি কাতারের দোহা থেকে থেকে পরিচালনা করবে। যে দল এ কাজ করবে, তার নেতৃত্বে থাকবেন ইয়ান ম্যাকক্যারি, তিনি আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র মিশনের সহকারী প্রধান ছিলেন।
আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডের নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। মার্কিন নাগরিক, বিদেশি নাগরিক ও আফগানরা, যারা যারা দেশটি ছাড়তে চায়, তাদের সহায়তায় আমরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো, বলেন ব্লিনকেন।
আফগানিস্তান ছাড়তে চাওয়া শতাধিক মার্কিন নাগরিক এখনও দেশটিতে রয়ে গেছেন বলে ধারণা যুক্তরাষ্ট্রের এ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।
তাদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করার চেষ্টা করছে ওয়াশিংটন। এ পর্যন্ত ৬ হাজারের বেশি মার্কিন নাগরিককে দেশটি থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিদ্রোহীদের হাতে কাবুল পতনের আগের দিন ১৪ অগাস্ট থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত এক লাখ ২২ হাজারেরও বেশি মানুষকে আফগানিস্তান থেকে উড়িয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কট্টরপন্থি বিদ্রোহী গোষ্ঠীই মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদাকে আফগানিস্তানে আশ্রয় দিয়েছিলো। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে হামলার জন্য আল-কায়েদাকেই দায়ী করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র কাবুল বিমানবন্দর ছেড়ে দেয়ার পর বিদ্রোহীরা সেটির নিয়ন্ত্রণ নিলেও বাকি বিশ্বের কাছে আফগানিস্তানে ঢোকার প্রধান এ প্রবেশপথের ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কী ঘটতে যাচ্ছে, তা এখনও অনিশ্চিত।
ব্লিনকেন বলেছেন, মার্কিন নাগরিক ও অন্য যারা স্থলপথে আফগানিস্তান ছাড়তে চান, তাদের জন্য উপায় বের করতে ওয়াশিংটন কাজ করছে।
সান নিউজ/এফএআর