স্বাস্থ্য

বিশ্বব্যাপী করোনা ভ্যাকসিন বিতরণে যে পদক্ষেপ নিতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ৪০টির অধিক ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর্যায়ে রয়েছে। ১৫০টিরও অধিক ভ্যাকসিন আছে বিকাশমান অবস্থায়। একমাত্র নিরাপদ ও কার্যকর ভ্যাকসিনই পারে প্রাণঘাতী এ মহামারীকে রুখে দিতে। তবে এখানেই সব শেষ নয়, এরপর আছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ—সংগ্রহ ও বিতরণ।

করোনা ভ্যাকসিনের বিতরণের জন্য প্রত্যেক দেশকে অবশ্যই বিস্তৃত ও কৌশলগত পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে।

থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের টেকনোক্র্যাট হিসেবে মহামারীর বিরুদ্ধে আমরা কাজ করছি এশিয়া এবং আফ্রিকার নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশগুলোর সরকারের সঙ্গে। আমাদের মতে, দেশগুলোকে পাঁচটি জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে নিজেদের জনগণ এবং অন্যদেরও রক্ষা করার জন্য। বৈশ্বিক এ মহামারী এরই মধ্যে আমাদের দেখিয়েছে, সবাইকে সুরক্ষিত না করে আমরা কেউই সুরক্ষিত থাকতে পারব না।

পাইলট প্রজেক্ট : সব দেশেরই শিশুদের জন্য ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম রয়েছে। ২০১৭ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য দেশগুলোর ১৯৪টির মধ্যে কেবল ১১৪টিতে মৌসুমি ইনফ্লুয়েঞ্জার বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম চালু ছিল।

শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের ভ্যাকসিন উপলব্ধ করার ক্ষেত্রে ডেলিভারি লজিস্টিক, সামাজিক প্রত্যাশা, সম্প্রদায়গত সম্পৃক্ততা, সরবরাহকারীদের মনোভাব এবং আরও অনেক ক্ষেত্রে পৃথক হয়। যখন করোনার ভ্যাকসিন উপলব্ধ হবে, প্রায় ৪০ শতাংশ দেশ প্রথমবারের মতো এ পার্থক্যগুলোর মুখোমুখি হবে।

প্রি-কোয়ালিফিকেশন : নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে অনেকগুলো বাধার কারণে ভ্যাকসিনের জাতীয় নিবন্ধন প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রযুক্তি বিলম্বিত হয়। প্রস্তুতকারীরা প্রথমে উচ্চ আয়ের দেশগুলোতে নিবন্ধনের ওপর মনোনিবেশ করে। তারা বড় অংকের লাভ তুলে নিতে পারে। কোম্পানিগুলো বিবিধ নিয়ন্ত্রক চাহিদা ও প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে দ্বিধাগ্রস্ত হতে পারে, বিশেষ করে উৎপাদক যদি অপরিচিত কিংবা কঠোর হয়।

তাই এক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রি-কোয়ালিফিকেশন প্রোগ্রামের ব্যবহার অধিক কার্যকর। এটি সুইজারল্যান্ডের জেনেভা ভিত্তিক ভ্যাকসিন জোট গাভির মতো সংগঠন দ্বারা বিতরণের জন্য ভ্যাকসিনের সুরক্ষা, মান এবং কার্যকারিতাকে যাছাই করবে। ২০০১ সালে এইচআইভি/এইডস, ম্যালেরিয়া এবং যক্ষ্মার ওষুধের প্রাপ্তি উন্নতকরণে এ প্রোগ্রামটি প্রয়োগ করা হয়েছিল।

জাতীয় টাস্কফোর্স গঠন : করোনা ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের জন্য প্রত্যেক দেশের নিজস্ব প্রক্রিয়া তৈরি করতে হবে। বেশির ভাগ দেশের—১৭০টি দেশের এরই মধ্যে ন্যাশনাল ইমিউনাইজেশন টেকনিক্যাল এডভাইজরি প্রোগ্রাম (এনআইটিএজিএস) বা সেই মানের সংস্থা রয়েছে। যারা ভ্যাকসিন বাছাই, জনগণের নির্দিষ্ট অংশকে চিহ্নিতকরণ ও সরবরাহের ক্ষেত্র তৈরি করাসহ সংশ্লিষ্ট অন্য কাজগুলো করে থাকে।

দ্বিপক্ষীয় সমঝোতাকে নিরুৎসাহিত করা : ভ্যাকসিনে কেবল ধনীদের অংশগ্রহণ ঠেকাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও তার সহযোগী গাভি এবং দ্য কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশন ভ্যাকসিন বিতরণের একটি বৈশ্বিক কৌশল গ্রহণ করেছে।

কোভ্যাক্স নামে সেই উদ্যোগটির লক্ষ্য হচ্ছে, আয়ের স্তর বিবেচনায় না নিয়েই অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দেশ যেন নিজেদের জনসংখ্যার ২০ শতাংশ ভ্যাকসিন লাভ করে। ১৭০টির বেশি দেশ এ উদ্যোগে যুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে এবং ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৬৪টি ধনী দেশ এ সুবিধা ব্যবহার করে ভ্যাকসিন কেনার ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

সাফল্য পরিমাপ : প্রতিটি ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রামকে বিচার করতে হবে মানুষের বেঁচে থাকা ও নিরাপদে কাজ করতে পারার ওপর ভিত্তি করে। এটি দেশে দেশে ভিন্নতর হবে। কারণ প্রতিটি দেশের পরিবেশ এবং সামাজিক ফ্যাক্টরগুলো ভিন্ন। উদাহরণস্বরূপ বেশির ভাগ দেশ তাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের সবার আগে ভ্যাকসিন প্রদান করবে।

কিন্তু এরপর কারা ভ্যাকসিন পাবে তা নির্ভর করে নিজস্ব ডেমোগ্রাফিসহ আরো নানা বিষয়ের ওপর। তাই একটি দেশের সাফল্যের ওপর অন্য দেশের নির্ভর করা উচিত নয়। সবার উচিত সব ক্ষেত্রে নিজস্ব মানদণ্ড স্থাপন করা।

সান নিউজ/এসএ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

রাজনৈতিক দলের সমর্থন না পেলে সব কাজ বিফলে যাবে: সিইসি

প্রবাসী ভোটিং পদ্ধতি বাছাইয়ে রাজনৈতিক দলসহ সব অংশী...

২৯ এপ্রিল: বিপ্লবী রবি নিয়োগীর জন্মদিন

রবি নিয়োগী ১৯০৯ সালের ২৯ এপ্রিল শেরপুরে এক বিখ্যা...

টিভিতে আজকের খেলা

প্রতিদিনের মতো আজ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বেশ কিছু খেলা প্রচারিত হবে টেলিভিশনের...

অবৈধ আদেশ পালন করে জনরোষের শিকার পুলিশ: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গত ১৫ বছর পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরি...

উত্তরায় প্রাইভেটকারে অপহরণ; ভিডিও ভাইরালের পর গ্রেপ্তার ২

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় চাঞ্চল্যকর অপহরণের ঘটনায় অপহরণে ব্যবহৃত একটি প্রাইভে...

আমাকে চেয়েছিলো যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী বানাতে: ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত সরকারের সময় তিনবার...

ভালুকায় সৌন্দর্য বাড়াতে ইউএনও’র ‘নিজ খরচে’ সবুজ বিপ্লব

ভালুকা উপজেলার পরিবেশ সংরক্ষণ ও নগর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নি...

কালীগঞ্জে ফিল্মিস্টাইলে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

গাজীপুরের কালীগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জে...

সড়কহীন ৩৪ কোটি টাকার সেতু

সেতু আছে কিন্তু সংযোগ সড়ক করা হয়নি এমন সেতু ফেনীতে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা