ফিচার

যার নেশা ছিল মানুষের কাটা মাথা সংগ্রহ করা

ফিচার ডেস্ক: জাদুঘরে বিভিন্ন শিল্পের প্রদর্শনী করা হয়। সেইসঙ্গে প্রাচীন ও অমূল্য সব বস্তু ঠাঁই পায় নামকরা বিভিন্ন জাদুঘরে। বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের জাদুঘর আছে। তবে কখনো কি শুনেছেন, কাটা মাথার জাদুঘর সম্পর্কে?

অবাস্তব হলেও সত্যিই এমন এক বিস্ময়কর জাদুঘর আছে। সেখানে গেলে আপনি দেখতে পাবেন মানুষের কাটা মাথা, তাও আবার যুগ যুগ ধরে অক্ষত অবস্থাতেই আছে সেগুলো। এসব অক্ষত কাটা মাথা জাদুঘরে আজও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে।

নিউ ইয়র্ক সিটির আমেরিকান জাদুঘরে ৩০টি মকোমোকাই বা মাওরি উপজাতিদের উল্কিযুক্ত কাটা মাথা সংরক্ষিত আছে। এ জাদুঘরটির উদ্যোক্তা মেজর জেনারেল হোরেটিও গর্ডন রোবলি।

১৮৬০ এর দশকে, মেজর জেনারেল হোরেটিও গর্ডন রোবলি নিউজিল্যান্ড ল্যান্ড ওয়ার্স চলাকালীন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করেন। সেখানে থাকাকালীন তিনি স্থানীয় মাওরি উপজাতিদের মুখ ও মাথায় আঁকানো উল্কিগুলো দেখে মুগ্ধ হন।

তিনি আগে থেকে উল্কিপ্রিয় ছিলেন। একসময় তিনিও ট্যাটু আঁকাতে শুরু করেন। তিনি মাওরিদের মুখের ট্যাটুর নকশা দেখে নিজেও আঁকাতেন। শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ের উপর একটি বইও প্রকাশ করেন রোবে। তিনি আবিষ্কার করেছিলেন, মুখের উল্কিগুলো ‘মোকো’ নামে পরিচিত।

তার বইয়ে উঠে এসেছে, মূলত উপজাতিদের এ গোষ্ঠী নিজেদেরকে আলাদাভাবে লোকসমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে ট্যাটু আঁকাতো। বেশিরভাগ ধনী পুরুষেরা মুখে ট্যাটু করতেন অন্যদিকে উচ্চপদস্থ নারীরা তাদের ঠোঁটে বা চিবুকের উপর মোকো করতেন।

মুখে বা মাথায় উল্কি আছে এমন কেউ মারা, তাদেরকে উচ্চ সামাজিক অবস্থান অনুসারে সম্মান জানাতে মাথা কেটে তা সংরক্ষণ করা হত। সংরক্ষণের সময়, চোখ এবং মস্তিষ্ক সরিয়ে ফেলা হত। চোখ ও মাথার গর্তগুলোতে ফ্লেক্স ফাইবার এবং আঠা দিয়ে সিল করা হত, যাতে তা কঙ্কালে পরিণত না হয়।

এরপর কাটা মাথাগুলো গরম পানিতে সেদ্ধ করে আগুনের ধোঁয়াতে রাখা হত। তারপর হাঙরের তেল মাখিয়ে রোদে শুকানো হত। এরপরে মাথাটি মৃত ব্যক্তির পরিবারকে স্মৃতিস্বরূপ দেওয়া হত। মৃতের পরিবার পরম যত্নে অলঙ্কৃত বাক্সে সংরক্ষণ করে রাখতেন প্রিয়জনের কাটা মাথাটি।

মাওরি উপজাতিদের মধ্যে এই কাটা মাথাগুলোকে যুদ্ধের ট্রফি হিসেবে দেওয়া হত। উপজাতির মধ্যে মোকোমোকাইয়ের (কাটা মাথাগুলো) বিনিময় ছিল শান্তি চুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ১৯ শতকের গোড়ার দিকে যখন ইউরোপীয়রা নিউজিল্যান্ডে আসে; তখন মোকোমোকাই অর্থাৎ কাটা মাথাগুলো ব্যবসায়ের জন্য মূল্যবান বস্তু হয়ে ওঠে।

ইউরোপীয়রাও মেজর জেনারেল হোরেটিও গর্ডন রোবলির মতো মাওরিদের ট্যাটু করা মাথা দেখে মুগ্ধ হয়েছিল। ইউরোপীয়রা মাওরি উপজাতিদেরকে কাটা মাথাগুলোর বিনিময়ে আগ্নেয়াস্ত্র বাণিজ্য শুরু করে। যা মাওরিরা তাদের সামরিক ক্ষেত্রে ব্যবহার করত।

উপজাতিরা তখন মোকোমোকাই বাণিজ্যে এতোটাই লাভবান হচ্ছিলো যে, তারা আরও বেশি মাথা অর্জনের জন্য প্রতিবেশী গ্রামগুলোতে অভিযান চালাত। তারা অর্থের বিনিময়ে এবং মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন দাসদের বন্দী করে তাদের মাথায় ও মুখে উল্কি আঁকিয়ে মোকোমাই তৈরি করে তাদেরকে হত্যা করে মাথা সংগ্রহ করত।

ওই সময় রোবলি ৩৫টি মকোমোকাই সংগ্রহ করেছিলেন। প্রথমদিকে তিনি সংগ্রহটি নিউজিল্যান্ড সরকারকে দিয়েছিলেন। তবে তারা তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। ১৮৯০ সালে আমেরিকান মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্টোরি ১,২৫০ ডলারে সংগ্রহটি রোবেলির কাছ থেকে কিনে নেয়।

সূত্র: অল দ্যাট ইন্টারেস্টিং থিংস

সাননিউজ/এএসএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভূঞাপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় 

খায়রুল খন্দকার, টাঙ্গাইল: প্রচণ্ড তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ট। নেই...

শহীদ শেখ জামাল’র জন্ম

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অত...

রাতের আঁধারে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর):

লক্ষ্মীপুরে চলছে ৫ ইউনিয়নে ভোট

সোলাইমান ইসলাম নিশান, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি...

মুন্সীগঞ্জে সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন

মো. নাজির হোসেন, মুন্সিগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় ভূমি অফি...

এবার লাক্সের অ্যাম্বাসেডর হচ্ছেন সুহানা 

বিনোদন ডেস্ক: বলিউড বাদশা শাহরুখ খান ও গৌরি খান দম্পতির কন্য...

বিএনপি কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট রাজনৈতিক দল

নিজস্ব প্রতিবেদক: আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের...

পদ্মায় ডুবে যুবকের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে পবা উপজেলার গোহমাবনা এলাকার পদ্ম...

জবির নতুন সহকারী প্রক্টর সাদিদ জাহান

নিজস্ব প্রতিবেদক: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) এর সহকারী প্র...

রাজধানীতে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর নিউমার্কেট থানার লতিফ স্বরনী এলাক...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা