বিনোদন ডেস্ক : সম্প্রতি জনপ্রিয় নাট্যকার, গুণী অভিনেতা ও নাট্য পরিচালক মামুনুর রশিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমকে নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন।
আরও পড়ুন : রুচির দুর্ভিক্ষে হিরো আলমের উত্থান!
বাংলাদেশের সংস্কৃতিমনাদের মধ্যে নাট্যজন মামুনুর রশীদের বক্তব্য ঝাঁকুনি দিয়েছে। আশরাফুল আলমকে নিয়ে এমন মন্তব্যের জন্য এই গুণী অভিনেতাকে তীর্যক মন্তব্যও শুনতে হচ্ছে। অনেকেই আবার তার পাশে দাঁড়িয়েছেন।
এবার এ বিষয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সোজাসাপ্টা কথা বলেছেন নাট্য অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী। যা হুবহু তুলে ধরা হলো—
আরও পড়ুন : প্রতিবন্ধী রিকশাচালকের পাশে তাশরিফ
একটা উপজেলা শহর থেকে যখন ঢাকায় এসেছি, ঢাকার নানান অংগনের মানুষকে দেখেছি।তারা কোন না কোন ভাবে আমার চেয়ে সমৃদ্ধ! একটা চায়ের কাপ ধরা,একটা সভাস্থলে নিরবতায় বসা,একটা কথা শুরু করবার ম্যানারস সব শিখতে হয়! এগুলো পাঠ্য বইয়ের মতই অতীব গুরুত্বপুর্ন!
থিয়েটারে যুক্ত হয়েছি, দেখেছি এ এক শিক্ষার সাগর।সেখানে শুধু নাটক শেখানো নয়, দেশ তথা দেশের বাইরের প্রখ্যাত গুনীজনের জীবনবৃত্তান্ত,সংগ্রাম,জীবনের সৌন্দর্য্য নিয়ে চলেছে বিস্তর আলাপ! দিনরাতের কোন হিসাব থাকে নাই….
প্রতি মুহুর্তে গ্রহন করেছি সে বিদ্যালয় থেকে।এসব কিছু জানতাম না কেন সে লজ্জায় নত থেকেছি।জানতে পারার গৌরবে বিনয়ী হয়েছি! জীবনের পরিমিতিবোধ শিখেছি,যে পরিমিতিবোধ সকল চরিত্র রুপায়নে বড় বোধের জোগান দিয়েছে।বিনীত করেছে সৃষ্টির পায়ে!
আরও পড়ুন : স্ক্যান্ডালের ১৩ বছর পর নোটিশ!
যা আমি জানি না, তা শেখার জন্য জানা মানুষের অপেক্ষা করেছি প্রেমের মত করে।
এখন কিছু জানার দরকার হয় না মামুন ভাই! কিছু না জানা মানুষ গুলো, জানা মানুষকে হিংসাত্মক প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলছে।সে প্রতিপক্ষের জিঘাংসা কত নোংরা হতে পারে, তা আজ দুইদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে! যা বাক রুদ্ধ করে দেয়?!
মামুন ভাই, আপনার হাতে তৈরি এ সংস্কৃতি অংগন আলোকিত করা কত শিল্পী! কত না জানার জন্যে/ভুলের জন্য আপনি সবাইকে বকেছেন/রাগ করেছেন! সে জন্য কেউ হয়ত থিয়েটারে আসেনি, অভিমান করেছে, দল ভেংগে নতুন দলও তৈরি হয়েছে, কিন্তু এই কুৎসিত এবং উদ্ধত্যপুর্ন বিমাতাসুলভ কথা কি কখনও শুনেছেন?!
আরও পড়ুন : মেয়েরাই মেয়েদের শত্রু
হলভর্তি মানুষের মুহু মুহু করতালি পেয়েছেন,শহীদমিনারের পাদদেশে অসীম নিবরতায় আপনার বক্তব্য শুনেছে মানুষ, সকল অসামন্জস্য নিয়ে সরকারের প্রতিও কত তীক্ষ্ন বক্তব্য প্রকাশ করেছেন, কিন্তু কখনও কি এমন অসভ্য মন্তব্য শুনেছেন?! শুধু রুচির নয়, বিবেকের বিকলাঙ্গতা কতটা, তা কি আর বলবার দরকার আছে?!
স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের তুখোঁড় আপনাকে টিকটকের ভাঁড় জনকদের তুলনায় দাঁড় করিয়েছে যারা,তারাও তারই অনুসারী!
শিল্প দিয়ে শিল্পীর প্রতিযোগীতা করা যায়, যাদের সে সঞ্চয় নাই, তারাই নীচতায় হরিলুট শুরু করে। সুন্দর কিছু শুরুর আগে কুৎসিত কিছু কালক্ষেপন হয়, এটা নিশ্চয় তেমন সময়।বাংলাদেশের এত সমৃদ্ধ সংস্কৃতির ধারক/বাহক/ অথবা উদাহরন নিশ্চয় এরা হতে পারেনা!!
আরও পড়ুন : প্রযোজকের বিরুদ্ধে শাকিবের মামলা
যারা আপনার ব্যক্তিজীবন অতি কথ্য দিয়ে আপনাকে হেয় করতে চেয়েছে,সেটা তাদের দীনতা এবং ব্যর্থতার আক্রোশ!
শিল্পী এবং শিল্পকে মোকাবেলা করতে শৈল্পিক/কথা/যুক্তি/ আচরনই লাগবে,এটা তারা জানে না।তাদের এ দীনতাকে ক্ষমা করবেন আপনি।
ভাগ্যিস আপনি কোন সরকারী মন্ত্রনালয়ে/ টিভি চ্যানেলে/ কোন সরকারের আনুক্যলের প্রতিষ্ঠানে নাই এবং কোনদিন ছিলেনও না।যদি সেটা থাকতেন, তাহলে কি বলতো এই মন্তব্যকারীরা?!
আরও পড়ুন : মাধুরীকে ‘বেশ্যা’ বলে অসম্মান!
৭০ উর্দ্ধো প্রায় ৮০’র কাছাকাছি একজন নাট্য প্রান মানুষ,যে তাঁর একটা জনম বিলিয়ে দিয়েছে নাটক/শিল্পের জন্য। বিনিময়ে উল্লেখ করবার মত কিছুই নেয়নি কখনও! এখনও এই বয়সে তাঁকে সংসারের জন্য অভিনয় করতে হয়, লিখতে হয়, এই শিল্প থেকে কিছুই সঞ্চয় করেনি বলেই,তার অসুস্থতায় আমরা তার শিল্প সন্তানরা তাঁর হাত ধরে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে যাই, তাঁর তুলনা এবং মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে এ কোন অশৈল্পিক দুর্বৃত্ত অন্ধকার!? আমাদের কবে / কোন মোহে এত বিবেক এবং রুচির বিকালঙ্গতা হল!?
আপনার সন্তানদের আপনি বরাবরের মত,নিজ গুনে ক্ষমা করবেন মামুন ভাই!
সান নিউজ/এইচএন