নিজস্ব প্রতিবেদক : যুব মহিলা লীগের বহিস্কৃত নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল চারটায় কাশিমপুর কারাগার থেকে পাপিয়া ও তার স্বামী মতিউরকে নিয়ে আসা হয় দুদক কার্যালয়ে। দুদক উপ-পরিচালক শাহিনারা মমতাজের নেতৃত্বে একটি টিম তাদের কাশিমপুর থেকে সেগুন বাগিচাস্থ দুদক কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৪ ডিসেম্বর পাপিয়া ও তার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশ।
এবছর ৪ আগস্ট ৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এর আগে ২০ জুলাই শুধু পাপিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সেই জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছিল দলবল নিয়ে ওয়েস্টিনের ২৫ টি রুমে অবস্থান কালে পাপিয়া শুধু মদের বিলই দিয়েছিলেন কোটি টাকা।
এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্টুরেন্ট (খাবার), রেস্টুরেন্ট (মদ), স্পা, লন্ড্রি, মিনি বার ফুড, মিনি বার বাবদ মোট তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল ক্যাশে পরিশোধ করেন পাপিয়া। ওই সময়ে ওয়েস্টিন হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিং করেন, যার কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি তিনি।
দুদকের মামলায়, পাপিয়া দম্পতির গাড়ির ব্যবসায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ, বিভিন্ন ব্যাংকে ৩০ লাখ টাকার তথ্য রয়েছে। এছাড়া তাদের বাসায় র্যাবের অভিযানে উদ্ধার সাড়ে ৫৮ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ সপ্তাহের বুধবার পর্যন্ত পাপিয়া দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক।
এছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাসা ভাড়া বাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় বিনিয়োগ করা এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশানে বিনিয়োগ করা ২০ লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকে তার ও তার স্বামীর নামে জমা করা ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি দুদকের অনুসন্ধানে।
অন্যদিকে র্যাবের অভিযানে তার বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের ২২ লাখ টাকার গাড়ি উদ্ধার করা হয়। এরও কোনো বৈধ উৎস মেলেনি দুদকের অনুসন্ধানে।
এভাবে মোট ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার ৭১৮ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া যায়, যার আয়ের উৎসের স্বপক্ষে কোনো দালিলিক প্রমাণ না পাওয়ায় পাপিয়া এবং তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
সান নিউজ/এস