টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : কক্সবাজার টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি+) এর আওতায় ওয়েজ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন : আমাকে সরিয়ে দিতে চায়
ভুক্তভোগীদের দাবি, ওই ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল মান্নান তাদের মোবাইল একাউন্টে আসা প্রকল্পের টাকা জোরপূর্বক কেড়ে নিয়েছেন এবং পরবর্তীতে তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়েছেন। এ নিয়ে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ১২ জন শ্রমিক জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেন।
জেলা প্রশাসন অভিযোগ আমলে নিয়ে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলমকে তদন্তের দায়িত্ব দেন।
বুধবার (৩ আগস্ট) বিকালে তদন্ত কর্মকর্তা সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ ৭ নম্বর ওয়ার্ডে সরেজমিনে তদন্তে যান। এসময় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
শাহপরীর দ্বীপ মাঝের পাড়া মৎস অফিস কার্যালয়ে তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতির খবর পেয়ে ভুক্তভোগী লোকজন সেখানে উপস্থিত হন। তারা তদন্ত কর্মকর্তাকে মৌখিক ও লিখিত বক্তব্য পেশ করেন। তারা কর্মসৃজন প্রকল্পে অনিয়মের সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।
আরও পড়ুন : ফিল্মি কায়দায় চলন্ত বাসে ডাকাতি-সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
তদন্ত কর্মকর্তাকে দেয়া বক্তব্যে খুরশিদা নামের এক নারী বলেন, কর্মসৃজনে আমাকে শ্রমিক হিসেবে যতদিন কাজ চলেছে ততদিন খাটাইছে। পরে আমার মোবাইল নগদ একাউন্টে ৭ হাজার ৬০০ টাকা ঢুকলে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল মান্নান আমাকে ডেকে নিয়ে ৭৬০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দেয়। বাকী টাকাগুলো তিনি নিয়ে ফেলেন। এভাবে তিনি আমার থেকে দুইবার টাকা নিয়েছেন। শেষবার টাকা দিতে আমি অনীহা দেখালে তালিকা থেকে আমার নাম বাদ দিয়ে দেয়।
সেনোয়ারা বেগম নামের আরেক নারী বলেন, আমাকে ডেকে নিয়ে কর্মসৃজনের ৫০০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা নিয়ে ফেলেন। দ্বিতীয়বার ৬০০০ টাকার মধ্যে ২০০০ টাকা নিয়ে নেয়। পরেরবার ১৬৫০০ টাকা আমার মোবাইলে ঢুকলে সেখান থেকে আমাকে ডেকে নিয়ে ৬০০০ টাকা দিয়ে বাকী সাড়ে ১০ হাজার টাকা নিয়ে ফেলেন। এসব কিছু কাউকে জানিয়েও কিছু করতে পারবেনা বলেও হুমকি দেয়।
সোনা আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমি কর্মসৃজন প্রকল্পে কাজ করেও এক টাকাও পায়নি। আমার টাকা কে তুলেছে সেটাও জানিনা। কর্মসৃজনের কাজের টাকা না পেয়ে ইউএনও এবং ডিসি স্যারকে অন্যদের সঙ্গে যৌথভাবে অভিযোগ দিয়েছি।
আরও পড়ুন : করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত বেড়েছে
এদিকে অভিযুক্ত মেম্বার আব্দুল মান্নান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
স্থানীয় সাধারণ লোকজন আরো অভিযোগ করেন, বেশিরভাগ তালিকাভুক্ত শ্রমিকের টাকার একটি অংশ তিনি তাদের ডেকে নিয়ে মোবাইল একাউন্ট থেকে জোরপূর্বক কেড়ে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সান নিউজ/এইচএন