প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
জাতীয়

কক্সবাজার হবে প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধন

এম.এ আজিজ রাসেল, কক্সবাজার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কক্সবাজারে বিপুল সম্পদ রয়েছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এই সম্পদকে কাজে লাগানো হবে। এক সময় দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত ছিল কক্সবাজার। কিন্তু এখন এখানে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চলছে। বাজেটের অধিকাংশ টাকাই এই অঞ্চলে খরচ হচ্ছে। অচিরেই কক্সবাজার হবে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধন।

আরও পড়ুন: কলেজছাত্রের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যায় কক্সবাজার সৈকতে আয়োজিত উন্নয়নের নতুন জোয়ার বদলে যাওয়া কক্সবাজার শীর্ষক অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা জীবন বঙ্গবন্ধু এই দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তিনি ১৯৭৪ সালে বিশাল সমুদ্র সীমার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু পচাত্তরের পরে ২১ বছর এ দেশ অন্ধকারে ছিল। দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে সেই অধিকার আমরা সমুন্নত করেছি। করেছি সমুদ্র সীমা বিজয়। ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ছিল মহেশখালী-কুতুবদিয়াসহ পুরো উপকূল। তখন ক্ষমতায় থেকেও ঘুমিয়ে ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। ওই সময় দুর্যোগ কবলিত মানুষের পাশে ছুঁটে গিয়েছি। সারথি হয়েছি তাদের দুঃখ-দুর্দশার। মহেশখালীতে একসময় শুধু চিংড়ি ও লবণ চাষ হতো। কিন্তু এখন সেখানে উন্নয়ন যজ্ঞ চলছে। মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় আধুনিকভাবে লবণ চাষের জন্য ব্যবস্থা করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবনের অধিকাংশ সময় কারাগারে কাটিয়েছেন। তিনি যখনই মুক্ত হতেন আমরা কক্সবাজার ছুঁটে যেতাম। তখন সেখানে ছোট ছোট কটেজ ছিল। সেখানেই থাকতাম। বদরখালী, ইনানী, উখিয়াসহ অনেক জায়গায় গিয়েছি। সেই কক্সবাজার আর এখনকার কক্সবাজারের মধ্যে কেউ মিল খুঁজে পাবে না। এখানে শুধু আন্তজার্াতিক বিমানবন্দর হচ্ছে না, দেশের সব জেলার সাথে এই বিমানবন্দরের সংযোগ স্থাপন করা হবে। এটি বিশে^র আধুনিক সর্বশ্রেষ্ঠ বিমানবন্দর। কক্সবাজার,ঘুমধুম,ঢাকা রেল লাইন নির্মাণ হচ্ছে। নির্মিত হবে আধুনিক ষ্টেশন। খুরুশকুলে ৯১ ঘূর্ণিঝড়ে ঘর হারা মানুষের জন্য আশ্রয়ণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে গড়ে তোলা হবে একটি আধুনিক শুটকি পল্লী।

আরও পড়ুন: শুক্রবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

সমুদ্র সৈকত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারকে আরও মর্যাদার আসনে আসীন করা হবে। সৈকতকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয়ভাবে গড়ে তুলতে পরিকল্পিত উন্নয়ন করা হবে। এখানে বিদেশী পর্যটকদের জন্য থাকবে আলাদা জোন। টেকনাফের সাবরাংয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। কক্সবাজার থেকে মিরসরাই পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে মেরিনড্্রাইভ। সোনাদিয়ায় ইকোপার্ক হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাত্তরে বাবা,মা, ভাই-বোনসহ পরিবারের সবাইকে হারিয়েছি। আমি আর আমার বোন শরনার্থীর ন্যায় জীবন কাটিয়েছি। বার বার বাধা এসেছে। কিন্তু থেমে থাকিনি। দেশের মানুষের মাঝে আমি হারানো সবকিছু খুঁজে পেয়েছি। তাই যতোই বাধাই আসুক অপ্রতিরোধ্য গতিতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছি। বাংলাদেশকে আর কেউ থামাতে পারবে না। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। দেশের এখন আর কেউ অন্ধাকারে নেই। শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে দেশ। এখন উন্নত, সুখী,সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন সময়ের ব্যাপার। যাতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম এর সুফল ভোগ করবে। বঙ্গবন্ধু যে মানুষগুলোকে এতো ভালবাসতেন তাদের মুখে হাসি ফোটানোই বড় পাওয়া।

সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উদ্যোগে ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কাউসারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী সাইদুজ্জামান চৌধুরী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বক্তব্য রাখেন।

এর আগে উন্নয়নে সুবিধাভোগীরা প্রধানমন্ত্রীর সামনে তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুন: ইসরায়েলের গুলিতে নিহত ২ ফিলিস্তিনি

এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ, সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল, জাফর আলম, আশেক উল্লাহ রফিক, কানিজ ফাতিমা, জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান ও কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃর্পক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ, পদস্থ কর্মকর্তাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষে পরিবেশিত হয় দেশের খ্যাতনামা নৃত্য দলের একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার গানের সাথে দলীয় নৃত্য। এরপর সৈকতের আকাশে বর্ণিল আতশবাজি ফোটানো হয়। পরে ‘ফুয়াদ এন্ড ফ্রেন্ডস’ ও ‘চিরকুট’ পরিবেশনায় সংগীতানুষ্ঠানের মধ্যে দিনব্যাপী এই জমকালো আয়োজন শেষ হয়।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ বিপুল সংখ্যক বীচ কর্মী মোতায়েন ছিল।

আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে পিকআপ-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের আনুষ্ঠানিক উদযাপনের অংশ হিসেবে কক্সবাজারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় কক্সবাজারবাসীসহ দেশের জনগণের কাছে এ প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী।

সাননিউজ/এমআরএস

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

কুমিল্লায় শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা

জেলা প্রতিনিধি: কুমিল্লা জেলার সদ...

শিরীন পারভীন দুদকের প্রথম নারী মহাপরিচালক

নিজস্ব প্রতিবেদক: দুদকের পরিচালক...

টেম্পুচাপায় কলেজছাত্রী নিহত

জেলা প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের কালুর...

ভারতের বিশ্বকাপ দল ঘোষণা

স্পোর্টস ডেস্ক : আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা...

মুন্সীগঞ্জে দোকানিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা 

জেলা প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জে চিপস...

শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সাধা...

সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু ২ মে

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামীকাল থেকে দ...

রাজধানীতে তাপমাত্রা বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি তাপপ্রবা...

চীনে সড়ক ধসে নিহত ১৯ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনের দক্ষিণাঞ...

গরমে ঠান্ডা পানি খেলে কী হয়?

লাইফস্টাইল ডেস্ক: গরমের মধ্যে এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানি স্বস্তি য...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা