নিজস্ব প্রতিবেদক: আশঙ্কাজনকভাবে চট্টগ্রামে ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে বায়ুদূষণ। আর এ বায়ুদূষনের কারনে গড় আয়ু কমছে চট্টগ্রামবাসীর। অপরিকল্পিত নির্মাণকাজ, অবৈধ ইটভাটা, কলকারখানা , বিদ্যুৎকেন্দ্র, গাড়ির কালো ধোঁয়াসহ নানা কারণে চট্টগ্রামে বাড়ছে এ বায়ুদূষণ ।
পরিবেশ অধিদপ্তর বায়ুদূষণের জন্য নগরীর ১৮টি স্টিল রি-রোলিং মিল ও ৯টি সিমেন্ট কারখানাকে দায়ী করেছে ।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্প, যেমন—লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প, কর্ণফুলী টানেল, আউটার রিং রোড, বাকলিয়া অ্যাকসেস রোডে দিনরাত কাজ চলছে। এসব এলাকার বাতাসে সারাক্ষণ ক্ষতিকর ধূলিকণা ভাসে।
একারণে এলাকার বাসিন্দারা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। সবগুলো প্রকল্পেরই পরিবেশ ছাড়পত্র রয়েছে। সেই অনুযায়ী এসব এলাকায় নিয়মিত পানি ছিটানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও ঠিকাদাররা এই শর্ত পালনে আগ্রহ দেখান না।
অন্যদিকে, দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য কেবল জরিমানা করেই দায়িত্ব শেষ করছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী চট্টগ্রামের বাতাস এখন অস্বাস্থ্যকর। বাতাসের মান পরিমাপের জন্য নগরীর আগ্রাবাদ, ফয়’স লেক ও নাসিরাবাদে পরিবেশ অধিদপ্তরের তিনটি স্টেশন রয়েছে। এসব স্টেশনের পর্যবেক্ষণে চট্টগ্রামের বাতাসের মান স্বাস্থ্যকর পর্যায়ে নয় বলেই দেখা যাচ্ছে। শীতকালে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বাতাসের মান আরো নেমে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চট্টগ্রামে পাহাড়, গাছপালা ও সমুদ্রপরিবেষ্টিত হওয়ায় বায়ুদূষণ কম হওয়ার কথা। কিন্তু নির্মাণকাজের সময় পরিবেশগত শর্ত প্রতিপালন না করায় বায়ুদূষণ অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বায়ুদূষণের কারণে চট্টগ্রামবাসীর গড় আয়ু ৪ দশমিক ৮ বছর কমে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের গবেষণাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও উপসচিব ইশরাত জাহান বলেন, বাতাসে ক্ষতিকর উপাদান বা সাসপেন্ডেড পার্টিকুলেট ম্যাটরিয়ালসের (এসপিএম) গ্রহণযোগ্য মাত্রা ২০০ এর নিচে থাকতে হবে। শীতকালে বৃষ্টিপাত হয় না বলে ক্ষতিকর উপাদান বেশি থাকে। আবার বর্ষায় কমে যায়। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রত্যেকটা নির্মাণ এলাকায় প্রতিদিন পানি ছিটাতে হবে।
তিনি জানান, বায়ুদূষণকারী কলকারখানার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দায়ি প্রতিষ্ঠানগুলোকে করা হচ্ছে আর্থিক জরিমানা।
বায়ুদূষণের কারণে ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্রের নানা রোগে ভুগছে চট্টগ্রামের অনেক মানুষ।
সাননিউজ/এএএইচ