চট্টগ্রাম ব্যূরো : দীর্ঘ চার মাস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর চট্টগ্রামে এবার কমতে শুরু করেছে চালের দাম। বোরো মৌসুমের নতুন চাল বাজারে আসতে শুরু করায় দাম কমছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে এখন পূরনো চাল তেমন নেই। গত এক সপ্তাহ ধরে নতুন চাল আসছে। নতুন চালের দাম স্বাভাবিকভাবেই কম। ফলে পূরনো চালের চেয়ে বস্তাপ্রতি ৩০০-৬০০ টাকা কমে বিক্রী হচ্ছে নতুন চাল। সে হিসেবে খুচরা পর্যায়েও দাম কমেছে।
ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, চট্টগ্রামের পাহাড়তলী পাইকারি বাজারে নতুন আসা মিনিকেট সিদ্ধ ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। যা এক সপ্তাহ আগে ৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রয় হয়েছে। বেতি আতপ ৩০০ টাকা কমে বস্তাপ্রতি ২ হাজার ৩০০ টাকা, কাটারি আতপ ৪০০ টাকা কমে ৩ হাজার টাকা, পাইজার আতপ ৩০০ টাকা কমে ২ হাজার ৬০০ টাকা, জিরাশাইল ৩০০ টাকা কমে ২ হাজার ৭৫০ টাকা, মোটা জাতের সিদ্ধ চাল ৩০০ টাকা কমে ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রী হচ্ছে।
এছাড়া স্বর্ণা সিদ্ধ চাল ২ হাজার ১০০ টাকা, পারি সিদ্ধ চাল ২ হাজার ৩০০ টাকা, জিরাশাইল ২ হাজার ৭৫০ টাকা, নাজিরশাইল ২ হাজার ৮০০ টাকা ও মোটা আতপ ১ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। সেই সাথে খুচরা বাজারেও ৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রী হওয়া মিনিকেট ও নাজিরশাইল কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, ৫০ টাকায় বিক্রী হওয়া স্বর্ণা চাল ৪৭ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে।
তাছাড়া কেজিতে ৫ টাকা কমে পাইজার চাল ৫০ টাকায় ও ৩ টাকা কমে লতা চাল ৫৫ টাকায়, ভালো মানের কাটারিভোগ চাল প্রতিকেজি ৯৫ টাকায়, মাঝারি মানের কাটারিভোগ চাল ৭০ টাকায়, সিদ্ধ কাটারি চাল ৬৫ টাকায়, চিনিগুড়া চাল ১০০ টাকায় ও বাসমতি চাল প্রতিকেজি ৭৫ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে বলে জানান খুচরা চাল বিক্রেতারা।
চট্টগ্রাম মহানগরীর বহদ্দারহাট মক্কা স্টোরের মালিক শহীদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে নতুন ধানের মৌসুম চলছে। মিলগুলো নতুন ধান থেকে চাল তৈরির কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি নতুন চাল বাজারে আসছে। তাই নতুন চালের দাম কম। দেশীয় ও আমদানিকৃত চালের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে চালের দাম আরো কমে যাবে।
এই দোকানে চাল কিনতে আসা ইকবাল হোসেন বলেন, এখন নতুন ধানের ভরা মৌসুম চলছে। বাজারও নতুন চালের সয়লাব হয়েছে। তবুও অধিকাংশ চালের দাম কেজিতে ৫০ টাকার উপরে বিক্রী করছেন ব্যবসায়ীরা। আমাদের দেখার যেন কেউ নেই।
পাহাড়তলি বণিক সমিতির সাধারণ স¤পাদক নিজাম উদ্দীন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চালের বাজার অস্থিতিশীল ছিল। বর্তমানে বাজারে পুরনো কোন চাল নেই। সব নতুন চাল বিক্রী হচ্ছে। সরবরাহ বেশ ভালো থাকায় দামটাও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে। সামনে নতুন চালের সরবরাহ বাড়লে দাম আরও কমে যেতে পারে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামসহ আশপাশের এলাকায় দৈনিক এক হাজার টন চালের চাহিদা রয়েছে। সরকারিভাবে দেশব্যাপী ন্যায্যমূল্যে চাল বিক্রী ও সরবরাহ বৃদ্ধির পরও গত চার মাস ধরে চালের বাজার অস্থিতিশীল ছিল। এরমধ্যে সারাদেশে চালের দাম কিছুটা কমলেও চট্টগ্রামে তার প্রভাব পড়েনি। করোনা প্রাদুর্ভাবে লকডাউনের কারণে উত্তরবঙ্গ থেকে চাল আমদানি করা সম্ভব না হওয়ায় এর মুল কারন। তবে নতুন চাল আসায় এবার দাম কমেছে।
সান নিউজ/ আইকে