নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশা আর মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে জনজীবন। প্রচণ্ড শীতে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষ ডায়রিয়া ও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ইতোমধ্যে এ ধরনের রোগী ভর্তি শুরু হয়ে গেছে অনেক হাসপাতালে।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সকালের দিকে মাঝারি থেকে ভারী কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে খুলনা ও রাজশাহীতে ৮ দশমিক এক ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত সপ্তাহের তুলনায় রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে ১৫ ভাগ বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। শিশু হাসপাতালে খালি নেই একটি শয্যাও। আবহাওয়া অধিফতর জানিয়েছে, বৃষ্টি না হলে সামনের দিনগুলোতে কিছুটা কমবে শীতের মাত্রা। উত্তর-পশ্চিম/উত্তরের বাতাস ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
শনিবার ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরীণ নদী অববাহিকায় ভোর ৫টা থেকে সকাল ৯-১০টা পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে ৩০০ মিটার বা কোথাও কোথাও আরও কম হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। তবে কোনো সতর্ক সংকেত দেখাতে হবে না।
এদিকে রাজধানীর হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত শিশু রোগীর সংখ্যা। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টের মতো শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের ভিড় হু হু করে বাড়ছে হাসপাতালে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে রাজধানীর হাসপাতালগুলো।
৬৬৪ শয্যার ঢাকা শিশু হাসপাতালের একটি শয্যাও খালি নেই। অনেক রোগীকে শয্যার অভাবে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে অন্য হাসপাতালে। এদিকে চলতি মাসের শেষ দিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিপ্তর। তবে বৃষ্টি না হলে রাজধানীতে শীতের প্রকোপ কমবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ।
শীত থাকতে পারে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত : ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শীত থাকতে পারে এবং এই সময়ে কুয়াশা ও মেঘ থাকার কারণে অনেক এলাকায়ই সূর্যের তেমন দেখা মিলবে না বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, আগামী দু-একদিন রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমলেও এরপর তা আবার বাড়বে। তবে কুয়াশা ও মেঘ থাকার কারণে অনেক এলাকায়ই সূর্যের তেমন দেখা মিলবে না। এতে শীত থাকবে। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এই শীত থাকতে পারে।
এদিকে, শনিবার ২৩ জানুয়ারি সকাল ৯টা পর্যন্ত চব্বিশ ঘণ্টায় হালকা বৃষ্টি শেষে রাতের তাপমাত্রা কমার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। একই সঙ্গে সারা দেশে কুয়াশার পরিমাণ বাড়বে। বিশেষ করে নদী অববাহিকা তীব্র কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকবে। এতে ব্যাহত হবে লঞ্চ, ফেরিসহ যান চলাচল।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে।
সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। শুক্রবার ২২ জানুয়ারি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ঢাকায় ১৪.৪, ময়মনসিংহে ১১.৮, চট্টগ্রামে ১৪.৩, সিলেটে ১৫.১, রাজশাহীতে ১০.১, রংপুরে ১৩.৬, খুলনায় ১২.৫, বরিশালে ১২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সান নিউজ/এসএ