নিজস্ব প্রতিনিধি, খুলনা : ন্যায় বিচারের স্বার্থে ফরেনসিক বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও ওসিসিতে নারী চিকিৎসকের দাবী জানিয়েছেন জনউদ্যোগ,খুলনার নারী সেলের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, খুলনা বিভাগের ১০ জেলা সহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক জেলার মানুষকে ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য নির্ভর করতে হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-খুমেকের ফরেনসিক বিভাগের ওপর।
ওই রিপোর্টের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে খুন, অপমৃত্যু, ধর্ষণসহ গুরুত্বপূর্ণ মামলার ন্যায় বিচার। কিন্তু এই ফরেনসিক বিভাগের সবকটি পদ বর্তমানে শূন্য। ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন ন্যায়বিচার প্রার্থীরা। তাই গত কয়েক মাস ধরে ফাইলবন্দি শতাধিক রিপোর্ট। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় ফরেনসিক মেডিসিনের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা বঞ্চিত হচ্ছে। একইভাবে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ অনুযায়ী ধর্ষণকারীর আলামত সংগ্রহের জন্য নারী চিকিৎসকের কথা বলা থাকলেও ওসিসিতে মিলছে না নারী চিকিসক।
রোববার (৮ নভেম্বর) বেলা ১১টায় জনউদ্যোগ,খুলানার উদ্যোগে ন্যায় বিচারের স্বার্থে ফরেনসিক বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও ওসিসিতে নারী চিকিৎসকসহ খুলনা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের শূন্য পদ পূরণের দাবিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বরাবর খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আব্দুল আহাদ ও উপধাক্ষ্য ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মুন্সী মোঃ রেজা সেকেন্দার এর নিকট স্মারকলিপি পেশ করেন।
এ সময় ইপস্থিত ছিলেন খুলনা মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ য. সৈয়দা লুৎফুনাহার, জনউদ্যোগ,খুলনা নারী সেলের আহবায়ক এ্যাডঃ শামীমা সুলতানা শীলু, সোনালী প্রতিবন্ধী সংস্থার ইসরাত আরা হীরা, সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী মৌসুমী হোসেন, সম্মিলিত রাইর্টার্স ফোরামের নূরুন নাহারহীরা, অগুয়ান৭১ এর আবিদ শান্ত, জনউদ্যোগে যুব সেলের নূর আলম ও জনউদ্যোগ,খুলনার সদস্য সচিব সাংবাদিক মহেন্দ্রনাথ সেন প্রমুখ।
স্মারকলিপি পেশকালে বক্তারা বলেন, খুলনা একটি বিভাগীয় শহর আর এই শহরের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলনা মেডিকেল কলেজ । সেখানে ফরেনসিক বিভাগে শিক্ষকদের সংকটে শিক্ষাজীবন ব্যাহত হতে পারে না। ফরেনসিক বিভাগের অধ্যাপক থেকে প্রভাষকসহ ৬টি পদের সবকটিই শুন্য। চুক্তি ভিত্তিতে একজন চিকিৎসক আছেন যিনিও অসুস্থ্যতার কারনে প্রায়শই অনুপস্থিত থাকেন। এ অবস্থার থেকে নগরবাসী পরিত্রাণ পেতে চায়।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) গত তিন মাসে ৫৩জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে ৯ জনের বয়স ১৮ বছরের নিচে। আর বাকীরা ১৮ বছরের উর্দ্ধে। ২৪ সেপ্টেম্ববর ধর্ষণের শিকার হয়, খালিশপুর থানা এলাকায় ৬৫ বছর বয়সী এক নারী।
এছাড়া বেশির ভাগ ঘটনাই খুলনার দাকোপ, বটিয়াঘাটা, পাইকগাছা ও তেরোখাদা উপজেলার। কয়রা উপজেলার বালিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা সাড়ে ৪ বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে গত ১৮ আগস্ট ওসিসিতে ভর্তি হয়। গত ১৪ সেপ্টেম্বর জেলার তেরখাদা উপজেলায় পুলিশ সদস্য কর্তৃক চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রী (৯) ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া মুজগুণীতে ২৫অক্টোবর ২জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে ওসিসিতে ভর্তি হয়েছে । এদের জন্য জরুরীভিত্তিতে নারী চিকিৎসক দেয়ার দাবী জানিয়েছেন।
সান নিউজ/কেএ/এনকে