নারী

হেলেন কেলারের জন্মদিন

আসমাউল মুত্তাকিন:

জন্মের পর থেকে তিনি বাক, শ্রবণ এবং দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। কতটা অসহায়! তার মতো অসহায় কে আছে আর জগত্-সংসারে! সেই অসহায়ত্বকে তিনি করেছেন জয়। হয়ে উঠেছেন সম্মানীয় এবং শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। তিনি আর কেহ নন কালজয়ী মহীয়সী নারী হেলেন কেলার।

২৭ জুন ১৮৮০ সাল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামা তাসকাম্বিয়া শহর। ছোট এই শহরে এই মহীয়সী নারীর জন্ম।

তার বয়স যখন মাত্র ছ’বছর তখন বাবা-মা তাকে ওয়াশিংটনের পাঠায়। সেখানে বিজ্ঞানী ও টেলিফোন আবিষ্কারক ডাঃ আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলের নিকট যান তিনি। মূলত সেখানে পরামর্শ গ্রহণের জন্য নিয়ে যান তিনি।

কারণ সেই সময় আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল দীর্ঘদিন ধরে বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছিলেন। তিনি হেলেন কেলারকে প্রাথমিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এক অদ্ভুত তথ্য দেন বেল। তিনি বলেন ‘হেলেন আর কোন দিন চোখে দেখতে পাবে না এবং কানেও শুনতে পাবে না। তবুও হতাশা হওয়ার কিছু নেই। কারণ হেলেন কেলারের বুদ্ধিমত্তা তীক্ষ। সে জন্য গুরুত্বের সাথে পরিকল্পনা অনুযায়ী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে স্বাভাবিক জীবনের কাছাকাছি একটি সুন্দর জীবন ফিরে পেতে পারে।’

এদিকে পরিবারের উত্কণ্ঠা ও হতাশা বিরাজমান। তবু শুরু হয় হেলেন কেলারের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ। মাত্র ৮ বছর বয়সেই তিনি হাতের আঙ্গুল দিয়ে দাগ কেটে কেটে লেখা, ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়াসহ শব্দ ও বাক্য উচ্চারণ পর্যন্ত শিখে ফেলে। এতে পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনরা অবাক হয়ে যান।

হেলেন আমেরিকার নিউইয়র্কের ‘রাইট হুমাসন’ স্কুলে ভর্তি হন মাত্র ১৪ বছর বয়সে। সেখানে বিশ্ববিখ্যাত লেখক মার্ক টোয়েনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ১৯০৪ সালে হেলেন র্যাডক্লিফ কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ করেন।

নিজের প্রতিবন্ধকতার কথা উপলব্ধি করেন হেলেন। তিনি বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের জন্য গড়ে তোলেন নতুন নতুন স্কুল এবং সমিতি।

হেলেন কিলারের রচিত বইয়ের সংখ্যা প্রায় ১১টি। এছাড়াও বাক-শ্রবণ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের নানা প্রতিকূলতার মধ্যদিয়ে তৈরি করেছেন একটি চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রে তার নিজের ভূমিকায় নিজেই অভিনয় করেছেন।

১৯৫৯ সালে হেলেন কেলার জাতিসংঘ কর্তৃক বিশেষ সম্মানে ভূষিত হন। ১৯৬৮ সালের ১ জুন। ৮৭ বছর বয়সে মহীয়সী নারী হেলেন কিলার পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন।

তার মৃত্যুর পর এ মহান নারীকে চির অম্লান করে রাখার জন্য ১৯৭৭ সালে গঠন করা হয় ‘আমেরিকান এসোসিয়েশন ফর দি ওভারসিজ ব্লাইন্ড’।

এ মহীয়সী নারীর জীবনে অসম্ভব বলতে কিছু নেই। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন সফলতার পিছনে থাকে কেবল ইচ্ছা শক্তি। প্রতিবন্ধী নারীরা সমাজের বোঝা নয়, চাইলে প্রতিবন্ধী নারীরা সমাজের জন্য অনেক কিছু করতে পারে। পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেও হেলেন কেলার আজও পৃথিবীর সমস্ত অন্ধ, বিকলাঙ্গ পঙ্গু মানুষের কাছে এক প্রেরণা আর আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। মানব সভ্যতার ইতিহাসে এমন জীবনের দৃাষ্টান্ত খুবই বিরল।

সাননিউজ/এএসএম

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভোলায় ছাত্রলীগের বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালিত 

ভোলা প্রতিনিধি: তীব্র তাপদাহ থেকে...

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর গণসংযোগ

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস আজ

সান নিউজ ডেস্ক: আজ বিশ্ব ম্যালেরি...

টঙ্গীবাড়ি ভাতিজারা পিটিয়ে মারলো চাচাকে

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

মুন্সীগঞ্জে বৃষ্টির জন্য ইস্তেসকার নামাজ আদায় 

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: টানা...

ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার

জেলা প্রতিনিধি: গাজীপুরের একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে স্বা...

হুমায়ুন আজাদ'র জন্ম

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স...

টিভিতে আজকের খেলা 

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বেশ ক...

শুক্রবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

সান নিউজ ডেস্ক: প্রতি সপ্তাহের একেক দিন বন্ধ থাকে রাজধানীর ব...

অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাস চাপায় চুয়েট...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা