আমিরুল হক, নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরের রানওয়ে নানা কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে সীমানা প্রাচীরের নিচের ফাঁকা থাকায় তা নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। রানওয়েতে দিনের বেলা কুকুর আর রাতে আশপাশের জঙ্গল থেকে শিয়ালসহ বিভিন্ন জীবজন্তুর উৎপাত বেড়েছে। এছাড়া আশপাশের মানুষ কাঁটাতারের বেড়া ফাঁকা করে ভেতরে ঢুকে ঘাসও কাটেন। বিমানবন্দরের একাধিক কর্মকর্তা মনে করেন, এসব কারণে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, এ বিমানবন্দরে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫টি বিমান ওঠা-নামা করে। ২০১২ সালে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। সাত বছর না যেতেই ২০১৯ সালের ২৪ আগস্ট প্রাচীরের ১০০ ফুট ধসে পড়ে। বিভিন্ন অংশে ফাটলও দেখা দেয়।
এর আগে ২০১৭ সালেও প্রায় ১২০ ফুট সীমানা প্রাচীর ধসে পড়েছিল। পরবর্তীতে মেরামত করা হলেও সীমানা প্রাচীরের উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে নিচে ফাঁকা রয়েছে। আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের-৪ (এপিবিএন) অধিনায়ক জয়নুল আবেদীনের পক্ষ থেকে এ বিমানবন্দরের বিষয়ে গত ২৬ অক্টোবর একটি চিঠি দেওয়া হয়। পুলিশ সদর দফতর ও সিভিল এভিয়েশন অব বাংলাদেশে (সিএএবি) পাঠানো ওই চিঠিতে বিমানবন্দরের নিরাপত্তার ঝুঁকির বিষয়টি উঠে আসে।
চিঠিতে বলা হয়, বিমানবন্দরের সীমানা প্রাচীরের নিচে ফাঁকা থাকা এবং ড্রেন খোলা হওয়ায় প্রতিদিন বাইরের লোকজন ভেতরে প্রবেশ করে ঘাস কাটে। যে কোনো দুষ্কৃতিকারীরা রানওয়েতে ঢুকে দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। তাই সীমানা প্রাচীর সংস্কার করা প্রয়োজন। এ ছাড়া বিমানবন্দর এলাকার চারদিকে ও রানওয়েতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই। সীমানা প্রাচীরের নিচে খোলা ও চারপাশে জঙ্গল থাকায় বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণের সময় শিয়াল বা যে কোনো বন্য প্রাণী দ্বারা বিমান ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে বলেও চিঠিতে আশঙ্কা করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, সৈয়দপুর বিমানবন্দরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে ‘সেন্ট্রি পোস্ট’ ও ‘ওয়াচ টাওয়ার’ নির্মাণ করতে হবে। উড়োজাহাজ উড্ডয়ন-অবতরণের সময় যাত্রীদের লাগেজসহ মালামাল আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত। বাড়াতে হবে পার্কিং এলাকায় টহল ও ভিআইপি গেটসহ প্রবেশমুখের নিরাপত্তা। সিভিল এভিয়েশনের সিসি ক্যামেরা ভাগাভাগিসহ নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সহযোগিতা ও সমন্বয়ও জরুরি।
নিরাপত্তা প্রাচীরের নিচে সুড়ঙ্গ আছে স্বীকার করে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সুপ্লব কুমার ঘোষ বলেন, এলাকাবাসী এটা করেছে। তারা সুড়ঙ্গ করে ভেতরে ঢোকে। অনুমোদন পেলে প্রাচীরের সুড়ঙ্গ বন্ধসহ নিরাপত্তা বাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এমকেএইচ