ফিচার

নীলফামারীতে আমেরিকার সুপারফুড ‘কিনোয়া’ চাষ

আমিরুল হক, নীলফামারী: প্রথমবারের মত উত্তরের জেলা নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে উত্তর আমেরিকার জনপ্রিয় পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ ফসলশস্য দানা ‘কিনোয়া’ চাষে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন দু’জন কৃষক। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় এই ফসল আবাদে তাঁদের পথ দেখাচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নীলফামারীতে এক সময় ব্যাপক আকারে সাথী ফসল হিসেবে কাউন জাতীয় শস্যদানা (চীনা কাউন) ব্যাপক আকারে চাষ হতো। এখন তেমন চাষ হয় না। তবে এখনো কেউ কেউ চরের ফসল হিসেবে কাউন চাষ করে থাকেন। এখন কাউন চাষ বিলুপ্ত প্রায়। কিনোয়া কাউনের মতন দেখতে।

কিন্তু এই কাউনে খাদ্য গুন তেমন নেই। কিন্তু কিনোয়া উচ্চমান সম্পূর্ণ পুষ্টিকর খাদ্য। যা মানবদেহের কল্যাণমূলক ক্যালোরিযুক্ত দানাদার খাবার। এটা ভাত, রুটির বিকল্প হিসেবে ইউরোপ, আমেরিকার, উত্তর আমেরিকা, চীনে এমন কি পাশের দেশ ভারতের মানুষ খায়। ভারতের নামিদামী রেস্টুরেন্টগুলোতে জনপ্রিয় খাবারের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে কিনোয়া।

কিনোয়া চাষী শাহজাহান আলী বলেন, এই ফসল সম্পর্কে তার কোন পূর্বে ধারণাই ছিল না। দেশের প্রচলিত কৃষি ফসল চাষ করে আসছিলেন। কৃষি সম্প্রাসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায়ের কিনোয়া চাষের পরামর্শ দেন। এবার মাত্র এক বিঘা জমিতে আবাদ শেষে লাখ টাকারও বেশি লাভ পাওয়া যাবে আশা করি। তবে সরকার বাজার জাত করণে সহায়তা দিলে আগামীতে কয়েকগুন বেশি জমিতে কিনোয়া ফসল চাষ করার আগ্রহ আছে।

আরেক কৃষক বিহারি রায় বলেন, কৃষি অফিসার উৎসাহ দিয়েছেন এই ফসল আবাদের জন্য। বীজ এনে দিয়েছেন। সেটি লাগিয়েছি। দামি ফসল এটি। বিঘাপ্রতি অন্তত পাঁচ মণ ফলন হতে পারে কিনোয়ার। ৭৫ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে ঘরে ফসল তোলা যাবে। আবাদে এখন পর্যন্ত কোনো অর্থ খরচ করতে হয়নি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, কিনোয়া চাষে মাঠ পর্যায়ে আমাদের মত কৃষকদের সার্বিক সহযোগিত করলে কেউ বিষ ফসল তামাক চাষ করতে আগ্রহী হবে না।

কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় জানান, কিনোয়া চাষ করতে প্রতি শতাংশ জমিতে খরচ হয় আনুমানিক প্রায় ৫-৬ শত টাকা। কিনোয়া ফসল উৎপাদন হয় (শস্যদানা) প্রায় ৪-৬ কেজি। ব্যক্তিগতভাবে উদ্বুদ্ধ হয়ে মাঠ পর্যায়ে তৃণমূলের দু’জন কৃষককে কিনোয়া চাষে আগ্রহী করে তুলেছি। এই দু’জন কৃষক ছিল কিনোয়া চাষের পাইলট প্রজেক্ট। উৎপাদন খুবেই সন্তোষজনক পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, কিনোয়ার আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ইউরোপ, আমেরিকা ও চীনের মানুষের ক্যালোরি জাতীয় প্রধান পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য কিনোয়া শস্য দানা। বাংলাদেশে এখনো সেইভাবে মার্কেট বা বাজার গড়ে উঠেনি। তবে ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে কিনোয়ার চাহিদা আছে। সুপারশপে ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত কেজিতে বিক্রি হয়। আগামী দিনে এক একর জমিতে কিনোয়া আবাদের লক্ষ্য রয়েছে বলেও জানান।

গবেষণা করে শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাস এই কিনোয়ার দেশে চাষযোগ্য প্রকরণ উদ্ভাবন করেছেন। যা কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ধনী-গরিব সবার জন্য এই ফসল উদ্ভাবন করা হয়েছে, যাতে পুষ্টির চাহিদা পূরণে সহায়ক হয়। এই ফসল উৎপাদনের পর বাজারজাত করা নিয়ে প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সান নিউজ/এমকেএইচ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভোলায় ছাত্রলীগের বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালিত 

ভোলা প্রতিনিধি: তীব্র তাপদাহ থেকে...

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর গণসংযোগ

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস আজ

সান নিউজ ডেস্ক: আজ বিশ্ব ম্যালেরি...

টঙ্গীবাড়ি ভাতিজারা পিটিয়ে মারলো চাচাকে

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

মুন্সীগঞ্জে বৃষ্টির জন্য ইস্তেসকার নামাজ আদায় 

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: টানা...

টিভিতে আজকের খেলা 

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বেশ ক...

শুক্রবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

সান নিউজ ডেস্ক: প্রতি সপ্তাহের একেক দিন বন্ধ থাকে রাজধানীর ব...

অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাস চাপায় চুয়েট...

রাজধানীতে শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর শাঁখা...

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাড়ছে না ছুটি

নিজস্ব প্রতিবেদক : আবহাওয়া অধিদপ্...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা