ভারতের মধ্যস্থতা চায় বাংলাদেশ
জাতীয়
রোহিঙ্গা ইস্যু

ভারতের মধ্যস্থতা চায় বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে সেনা অভিযান ও নির্যাতনের মুখে ৫ বছর আগে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা দিন দিন হতাশ হয়ে পড়ছে এবং চরমপন্থী জঙ্গি রাজনীতির দিকে ঝুঁকছে। ফলে, হুমকির মুখে পড়ছে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক আর্থসামাজিক পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা।

আরও পড়ুন : যুদ্ধ না, আমরা শান্তি চাই

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবুল মোমেন বলেছেন, এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ও উপমহাদেশের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থেই বিপদগ্রস্ত এই জনগোষ্ঠীকে তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে পাঠানো দিন দিন জরুরি হয়ে উঠছে।

কিন্তু মিয়ানমারের তরফ থেকে এ ইস্যুতে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো পদক্ষেপ না আসায় দেশটির সঙ্গে এই বিষয়ে মধ্যস্থতা করতে ভারতের সহযোগিতা চেয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া নদ-নদী বিষয়ক দ্বিপাক্ষিক জোট জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের (জেসিসি) সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতের আসামে গেছেন একে আবুল মোমেন।

আরও পড়ুন : ২২ আরোহীসহ নিখোঁজ প্লেনটি বিধ্বস্ত

আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি দেওয়া এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রিত অবস্থায় আছে।

তাদের কোনো ভবিষ্যত নেই; তারা রাষ্ট্রহীন এবং হতাশ। নিজেদের এমন অবস্থানের কারণেই জঙ্গিবাদী রাজনীতির প্রতি এক প্রকার ঝোঁক তাদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে এবং সেদিকে ঝুঁকেও পড়ছে তারা।’

এনডিটিভিকে তিনি আরও বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদীদের কোনো দেশ নেই। এ কারণে আমাদের ভয়— আশ্রিত এই রোহিঙ্গাদের মধ্যে যদি চরমপন্থী ধর্মীয় রাজনীতির উত্থান ঘটে, তাহলে ভয়াবহ অনিশ্চয়তা তৈরি হবে; এতে যে কেবল বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ক্ষতিগ্রস্ত হবে— এমন নয়, বরং ভারতসহ যেসব প্রতিবেশী দেশ রয়েছে, তাদের জন্যও হুমকি তৈরি হবে।

আরও পড়ুন : ৮৯ টাকায় ডলার বিক্রি করবে ব্যাংক

এ কারণে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থেই রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে পাঠানোর ব্যাপারে মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশগুলোকে উদ্যোগ নেওয়া উচিত।’

‘ভারত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য। এছাড়া মিয়ানমারের বন্ধু রাষ্ট্র হওয়ার সুবাদে দেশটির ওপর প্রভাব বিস্তার করার ক্ষমতাও রয়েছে ভারতের।

এ কারণে ভারত ও আসিয়ান দেশগুলোর কাছে আমাদের আন্তরিক চাওয়া হলো— এ ব্যাপারে যেন মিয়ানমারের ওপর চাপ দেওয়া হয়।’

আরও পড়ুন : ছাত্রদলের সভাপতি-সম্পাদক ছাত্র নয়, ছাত্রের বাবা

বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তবর্তী দেশ মিয়ানমারের ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠী হলো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী বর্মীরা। তবে দেশটিতে বর্মীরা ছাড়াও শতাধিক নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী রয়েছে। এসব জনগোষ্ঠীরই একটি হলো রোহিঙ্গা।

কিছু হিন্দু ধর্মাবলম্বী থাকলেও এই জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই মুসলিম। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় এবং বাংলাদেশের সীমান্তের সঙ্গে লাগোয়া প্রদেশ রাখাইনে বাস করেন এই জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ মানুষ।

একই সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠীর মধ্যেও অন্যতম রোহিঙ্গা। মিয়ানমারের সংবিধানে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নাম উল্লেখ থাকলেও রোহিঙ্গাদের নাম নেই। রাষ্ট্র থেকে কোনো স্বীকৃতি ও সুবিধাও পায় না তারা।

আরও পড়ুন : জনগণের ভোটেই আবার জয়ী হবো

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের রাথেডং শহরে বেশ কয়েকটি পুলিশ স্টেশন, সীমান্ত ফাঁড়ি ও সামরিক ঘাঁটিতে একযোগে হামলা চালায় রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা)। এতে অন্তত ৭০ জন নিহত হন।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তারপরই রাখাইনজুড়ে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে । গ্রামের পর গ্রাম লুটপাট করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, হত্যা-ধর্ষণের শিকার হন হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী পুরুষ।

সেনাদের অভিযান ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে রাখাইনের বিভিন্ন এলাকা থেকে স্রোতের মতো আসতে থাকে রোহিঙ্গারা। বর্তমানে টেকনাফের কুতুপালং শিবিরে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে।

আরও পড়ুন : ব্রাজিলে ভূমিধসে নিহত বেড়ে ৩৫

গত ৫ বছরে বাংলদেশ বেশ কয়েকবার রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য আন্তর্জাতিক বিশ্বের সহযোগিতা চেয়েছে, কিন্তু তাতে পরিস্থিতির তেমন অগ্রগতি হয়নি।

তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশ্বাস, যদি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করা যায়– তহালে নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদেরকে তাদের নিজ দেশে পাঠানো সম্ভব। এনডিটিভিকে এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘একবার কোনো জাতিগোষ্ঠীকে বিতাড়িত করার পর ফের গ্রহণ করার ইতিহাস রয়েছে মিয়ানমারের। তাই আমাদের বিশ্বাস, যদি প্রতিবেশি বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে চাপ আসে, সেক্ষেত্রে মিয়ানমার যথাযথ নিরাপত্তা ও সম্মানসহ তাদের নিজেদের দেশের মানুষকে ফিরিয়ে নেবে।’

আরও পড়ুন : কিংবদন্তি হুমায়ূন ফরিদীর জন্মদিন

বাংলদেশ ও ভারতের মধ্যে চলমান জেসিসি বৈঠকটি নানা কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আগামী জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে ভারত সফরে যাবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেই সফরে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে, সেসবের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে বর্তমান জেসিসি বৈঠক। আগামী ৩০ মে থেকে শুরু হবে এ বৈঠক।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

প্রস্তুতি ম্যাচের সূচি প্রকাশ

স্পোর্টস ডেস্ক : আসন্ন আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল আস...

টিভিতে আজকের খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ শনিবার (১৮মে) বেশ কিছু খেল...

কর্মস্থলে না এসেও বেতন তোলেন শিক্ষক

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:

মেঘনা নদীতে পাঙ্গাশ রক্ষায় অবৈধ চাই ধ্বংস 

ভোলা প্রতিনিধি: ভোলায় মেঘনা নদী থ...

মুন্সীগঞ্জে ভাসমান মরদেহ উদ্ধার

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মধ্য কোটগাঁ...

ওএমএস বিতরণে গাফলতি হলে ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক: খাদ্যমন্ত্রী সা...

পটল কেন উপকারী?

লাইফস্টাইল ডেস্ক: পটল আমাদের দেশের পরিচিত একটি সবজি, যা খেতে...

মিডিয়া ট্রায়াল বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে

জেলা প্রতিনিধি: বিচারের আগে মিডিয...

হোয়াটসঅ্যাপে আসছে পরিবর্তন

টেকলাইফ ডেস্ক: জনপ্রিয় যোগাযোগ মা...

মঙ্গলবার ১৫৭ উপজেলায় সাধারণ ছুটি 

নিজস্ব প্রতিবেদক: ষষ্ঠ উপজেলা পরি...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা