ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর খাদ্য গুদামের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদকে রুহিয়া খাদ্য গুদামে বদলি করায় এখানকার ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা তাকে এ গুদামে দেখতে চান না দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে রুহিয়া চৌরাস্তা মোড়ে এ কর্মসূচী পালন করা হয়।
এ সময় বক্তব্য দেন ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস,আজাহারুল ইসলাম ও ঠাকুর চন্দ্র সেন প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন,জেলার হরিপুর উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ আভ্যন্তরীন খাদ্য সংগ্রহ কার্যক্রমের নামে ব্যবসায়ি ও কৃষকদের নিকট ধান চাল গম সংগ্রহ করার নামে বস্তা প্রতি ৩০-৫০ টাকা হারে সেলামী আদায় করেন।
এছাড়াও সংগ্রহকৃত চিকন চাল একটি সিন্ডিকেটের সঙ্গে আঁতাত করে রাতের আধারে বাইরে পাচার করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ওসি এলএসডি আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে।এ অবস্থায় চালের ঘাটতি ঢামাচাপা দিতে খামালে চৌকা আকারের ফাঁকা রাখা হতো। বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনিরুল ইসলাম চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারী হরিপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিখিল চন্দ্র বর্মনকে প্রধান করে পীরগন্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জিয়াউল হক শাহ ও কারিগরী খাদ্য পরিদর্শক মো: জুলফিকার আলী সহ ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সরজমিনে তদন্তের নির্দেশ দেয়।
২৪ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কমিটি সরজমিনে ওই খাদ্য গুদাম পরিদর্শন কালে একটি খামালে চৌকা আকারের বিশাল ফাকা ধরা পড়ে।অর্থাৎ ভেতরের চাল সরিয়ে নিয়ে ফাকা রাখা হলেও থেকে দেখার কোন সুযোগ নেই।তদন্তকারী দল ৮৪ বস্তা চাল কম পায়।
অপরদিকে একটি ডেলিভারি খামালে মজুদের অতিরিক্ত বেশকিছু বস্তা চাল বেশি পাওয়া যায়। বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দের চাল এই খামাল হতে সরবরাহ করা হতো।অভিযোগ রয়েছে,টাকা ছাড়া
সময় মতো সরবরাহ না করায় এই খামালে চালের পরিমাণ বেড়ে যায়।এছাড়াও অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠির মাঝে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল সরাসরি অটো মিল হতে সরবরাহ করার নিয়ম থাকলেও গুদাম কর্মকর্তা পুষ্টির চালও গুদামের খামালে তুলে রাখেন।
অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহকালে তার পছন্দের ব্যবসায়ীদের নিকট নিম্ন মানের ও দুর্গন্ধযুক্ত চাল কিনেন। তদন্তকালে এরকম ২৮ বস্তা নিম্ন মানের চাল পাওয়ার কথা স্বীকার করে প্রতিবেদন দেয়।
২৬ ফেব্রুয়ারি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনিরুল ইসলাম ওই কর্মকর্তার অনিয়ম দুর্নীতি তুলে ধরে আন্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক রংপুর মহোদয় সমীপ তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেন।
এ ঘটনায় আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে তাকে চাকুরি হতে সাসপেন্ড বা অপসারণ করার কথা।কিন্তু অপসারণের পরিবর্তে তাকে রুহিয়া খাদ্য গুদামে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলী করা হয়।
গত ২৮ এপ্রিল রংপুর আন্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুল ইসলাম সাক্ষরিত এক পত্রে আব্দুর রশিদকে রুহিয়ায় বদলীর আদেশ দেওয়া হয়। কাজেই ওই কর্মকর্তা রুহিয়া খাদ্য গুদামে যোগদান করলে এখানকার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাবে। নিগৃহীত হবে এলাকার কৃষক ও ব্যবসায়ী।
সান নিউজ/এনকে