নিজস্ব প্রতিনিধি, যশোর : যশোরের চৌগাছায় এক মাদ্রাসাছাত্রীকে (১০) লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগে এনায়েত আলী (৬০) নামে এক বৃদ্ধের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (৪ নভেম্বর) রাত ৯টা ১০ মিনিটে চৌগাছা থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়। ভুক্তভোগী শিশুটি বাবা বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মেয়েটির বাবা দাবি করেছেন, কিছুদিন আগে তার মেয়ে ভয় পেয়ে বাড়ির উঠানে পড়ে গিয়ে বমি করতে থাকে। এ সময় তাদের প্রতিবেশী কবিরাজ এনায়েত আলী (৬০) অন্যদের সঙ্গে তাদের বাড়িতে আসেন এবং তিনি বলেন, মেয়েটিকে জ্বিনে ধরেছে। ঝাড়-ফুঁক করলে ঠিক হয়ে যাবে। সে মোতাবেক প্রতি শনি ও মঙ্গলবার মেয়েটিকে ঝাড়ফুঁক করানোর জন্য পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানিকতলা দরগাহে (সেখানে একটি বেল গাছ রয়েছে) শিশুটিকে তার মাকেসহ নিয়ে যান। পথিমধ্যে ওই কবিরাজ শিশুটির মাকে বলেন, ঝাড়ফুঁক করানোর সময় অন্য কেউ থাকতে পারবে না।
শিশুটির বাবা বলেন, ‘তখন আমার স্ত্রী এনায়েত আলীর সঙ্গে আমার মেয়েকে দিয়ে ইন্দ্রপুর গ্রামের জনৈক ব্যক্তির বাড়ির সামনে অপেক্ষা করতে থাকে। কিন্তু এনায়েত আলী আমার মেয়েকে মানিকতলায় না নিয়ে ইন্দ্রপুর গ্রামের এক ব্যক্তির পেয়ারা বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এভাবে গত একমাসে আমার মেয়েকে চিকিৎসার নামে প্রতি শনি/মঙ্গলবারে ঝাড়ফুঁকের নামে ৬/৭ দিন একই পেয়ারা বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করেন।
শিশুটির বাবা আরও বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট এনায়েত আলী বলেন, আর একবার ঝাড়ফুঁক করলেই জ্বিন চলে যাবে। পরে গত ১৮ আগস্ট আমার মেয়ে তার মার কাছে বিষয়টি খুলে বলে। এরপরও মান-সম্মানের কথা চিন্তা করে আমরা স্থানীয় ডাক্তারের মাধ্যমে চৌগাছা শহরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে তাকে তার মাদ্রাসায় রেখে আসি। কিন্ত আসামি এনায়েত আলী গত ২৫ অক্টোবর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ওই মাদ্রাসায় গিয়ে নিজেকে আমার মেয়ের চাচা পরিচয় দিয়ে আমার স্ত্রীর অসুস্থতার কথা বলে আমার বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইলে ওই মাদ্রাসায় একজন শিক্ষক আমাদেরকে মোবাইলে বিষয়টি জানান। আমরা তার সঙ্গে মেয়েকে দিতে নিষেধ করি। পরে আমরা মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে আসি।’
ভুক্তভোগী মেয়েটির বাড়িতে গেলে সেও এ প্রতিবেদকের কাছে তাকে ধর্ষণের কথা জানায়। তাকে সাতদিন এনায়েত ধর্ষণ করেছে বলেও জানায়। সে বলে, ‘আমি তার (এনায়েত আলীর) বিচার চাই।’
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিফাত খান রাজীব মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ভুক্তভোগী মেয়েটি উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী লাগোয়া একটি গ্রামের বাসিন্দা ও চৌগাছা শহরের একটি মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। তাকে উদ্ধার করে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সান নিউজ/পিডিকে/এস