আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রায় ৫০ বছরের পুরোনো আইনি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে নারীদের গর্ভপাত অধিকার কেড়ে নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ৫০ বছর আগে এক মামলার রায়ে গর্ভপাতকে বৈধ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন
শুক্রবার (২৪ জুন) দেশটির সুপ্রিম কোর্ট ‘রো বনাম ওয়েড’ নামে পরিচিত মামলার সেই ঐতিহাসিক রায়টি পাল্টে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত সাংবিধানিক এই অধিকার বাতিল করে দিয়ে গর্ভপাতের অনুমোদন দেওয়া বা না দেওয়ার সিদ্ধান্তের ক্ষমতা প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিবি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানান।
গত মাসের শুরুর দিকে সর্বোচ্চ আদালতের ফাঁস হওয়া একটি গোপন খসড়া নথিতে ঐতিহাসিক গর্ভপাত অধিকার আইন বাতিল হতে পারে বলে আভাস পাওয়া যায় গিয়েছিলো।
যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি রাজ্যের গর্ভপাত নিষিদ্ধের পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নারীদের একটি স্বাস্থ্য সংগঠন ‘ডব্বস বনাম জ্যাকসনের’ করা মামলা প্রক্রিয়ায় সুপ্রিম কোর্ট এই রায় শুনিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বরিসের ওপর চাপ বৃদ্ধি
রায়ে বলা হয়, ‘১৯৭৩ সালের আইনে গর্ভধারণের পর ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহ সময়কালেও গর্ভপাত করার এখতিয়ার রাখা হয়েছে। এটি ভুল সিদ্ধান্ত। কারণ, মার্কিন সংবিধানে গর্ভপাতের অধিকারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা নেই।
‘গর্ভপাতের অধিকার সংবিধানের আওতায় থাকতে পারেনা এবং গর্ভপাত নিয়ন্ত্রণের অধিকার অবশ্যই মানুষের এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ন্যস্ত করা উচিৎ।’
বিবিসি জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে এখন রক্ষণশীল বিচারকরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকার রোহিত করার পক্ষে মতামত দেন ছয়জন বিচারক, বিপক্ষে দেন তিনজন।
ইতোমধ্যে এমন আইন পাস করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩টি অঙ্গরাজ্য। এক জরিপে বলা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে যুক্তরাষ্ট্রে সন্তানধারণে সক্ষম তিন কোটি ৬০ লাখ নারী গর্ভপাতের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে।
আরও পড়ুন: শিরিনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলিরা
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণপন্থী ও ধর্মীয় রক্ষণশীলদের জন্যে এই সিদ্ধান্ত অনেক বড় বিজয়। এই ঘরানার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠী ১৯৭৩ সালে গর্ভপাতকে সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা ও দেশটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এ রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সুপ্রিম কোর্টের এ রায়কে মৌলিক স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ বলে উল্লেখ করেছেন।
সান নিউজ/এফএ