বাণিজ্য

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঘুরে দাঁড়াতে প্রণোদনা প্যাকেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠে দেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের (সিএমএসএমই) দ্রুত ব্যবসায়িকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে সর্বোচ্চ ১৪ শতাংশ সুদে ১০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার।

এ জন্য নতুন নীতিমালাও প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে চুড়ান্ত তহবিল ঘোষণা করা হবে। এ খাতে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা ঋণ পেতে পারেন। জানা গেছে, ব্যাংকিং খাতের বাইরে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে চলতি মূলধন খাতে প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় এ ঋণ দেয়া হবে।

বাৎসরিক এ ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার হবে ১৪ শতাংশ। তবে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ গ্রহীতাদের জন্য ৯ শতাংশ সুদ প্রযোজ্য হবে। ৫ বছর মেয়াদী ঋণ প্যাকেজে সরকার ৫ শতাংশ ভর্তুকি দেবে ১ বছর পর্যন্ত। গত সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, করোনার প্রভাব মোকাবেলায় প্রান্তিক পর্যায়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সর্বোপরি অর্থনৈতিক কর্মপরিধি বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষত কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দ্রুত দারিদ্র নিরসনে সিএমএসএমই খাত মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

কিন্তু ব্যাংকিং খাতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কাঙ্খিত আর্থিক সহযোগীতা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব খাতের একটি বড় অংশ মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশন (এমএফআই) এর মাধ্যমে ঋণ নিয়ে থাকে। যার পরিপ্রেক্ষিতে মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ) কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত এমএফআই তথা ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে সিএমএসএমই খাতে প্রণোদনা ঋণ প্রদানে পৃথক একটি নীতিমালা প্রয়োজন।

প্রস্তাবিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক দশমিক ৫ শতাংশ সুদে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থায়ন করবে এবং অন্যদিকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ২ দশমিক ৫ শতাংশ সুদে এমএফআইগুলোকে অর্থায়ন করবে। এমএফআই প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের বিদ্যমান ঋণ স্থিতির সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রণোদনা ঋণ তহবিলের আওতায় ঋণ নিতে পারবে।

একটি ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ তিনটি ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে পারবে, তবে মোট গৃহীত ঋণ নির্ধারিত ঋণসীমার মধ্যে থাকতে হবে। গৃহীত ঋণের ন্যূনতম মেয়াদ হবে ২ বছর। ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহক পর্যায়ে তাদের মোট প্রদেয় ঋণের ৪৫ শতাংশ ট্রেডিং খাতে এবং ৫৫ শতাংশ উৎপাদন ও সেবা খাতে বিতরণ করতে পারবে।

বিতরণকৃত ঋণের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিতে গ্রাহক পর্যায়ে নিয়মিত মনিটরিং অব্যাহত রাখতে হবে। তবে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে গ্রাহক নির্বাচন, ঋণ বিতরণ সংশ্লিষ্ট ব্যয়, গ্রেস পিরিয়ড, ঋণের কিস্তি, ঋণ আদায়, ঋণ শ্রেণিকরণ ও মনিটরিং ইত্যাদি বিষয় এমআরএ ও ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হবে।

প্রস্তাবিত নীতিমালা অনুযায়ী, গ্রাহক পর্যায়ে ঋণসীমা হচ্ছে কুটির শিল্পের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা, ক্ষুদ্র শিল্পের ক্ষেত্রে ১০ লাখ ও ছোট ব্যবসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা। গ্রাহকরা সরকার থেকে সর্বোচ্চ ১ বছর সুদ ভর্তুকি সুবিধা পাবেন। ঋণপ্রাপ্তির জন্য গ্রাহকদেরকে আবেদনপত্রের সাথে জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মনিবন্ধন সনদ/পাসপোর্টের কপি, ট্রেড লাইসেন্স/সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন/পৌরসভা /ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র এবং যে কোনও দুইজনের গ্যারান্টি দাখিল করতে হবে।

প্রণোদনা প্যাকেজে ঋণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তাবিত নীতিমালায় বেশ কিছু শর্ত দেয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ঋণ তহবিলের জন্য আবেদনকারী ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমআরএ থেকে ঋণ প্রাপ্তির সক্ষমতা বিষয়ক প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে। অর্থায়নকারী ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যয়নপত্র গ্রহণ করার তিন কার্যদিবসের মধ্যে এমআরএ সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র সরবরাহ করবে।

প্রত্যয়নপত্র প্রাপ্তির সর্বোচ্চ এক সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান অর্থায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। অর্থায়নের ক্ষেত্রে এমএফআইর পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক শুধু ঋণ পরিশোধের ঘোষণাপত্র ও বিদ্যমান ঋণ স্থিতি জামানত হিসেবে রাখা যাবে।

অর্থ প্রাপ্তির সাথে সাথে ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ নিশ্চিত করবে এবং এ নীতিমালার আওতায় গৃহীত ঋণ দ্বারা বিদ্যমান কোনও ঋণ সমন্বয়/পরিশোধ করা যাবে না। ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্ধারিত ছক অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক/এমআরএ বরাবর চাহিদা মোতাবেক সময়ে সময়ে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।

উল্লেখ্য, তার আগেও করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় মোট ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এর সঙ্গে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে ১ লাখ ২১ কোটি টাকা।

সান নিউজ/এসএ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

ভোলায় ছাত্রলীগের বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালিত 

ভোলা প্রতিনিধি: তীব্র তাপদাহ থেকে...

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর গণসংযোগ

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস আজ

সান নিউজ ডেস্ক: আজ বিশ্ব ম্যালেরি...

টঙ্গীবাড়ি ভাতিজারা পিটিয়ে মারলো চাচাকে

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:

গরমে ত্বক ব্রণমুক্ত রাখতে যা খাবেন

লাইফস্টাইল ডেস্ক: গরমকাল এলেই ব্র...

গরুবাহী ভটভটির ধাক্কায় নিহত ২

জেলা প্রতিনিধি: দিনাজপুর জেলার হি...

জামালপুরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ 

জামালপুর প্রতিনিধি: ট্রাফিক পুলিশ...

কৃষককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা

জেলা প্রতিনিধি: বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জে আব্দুল হাকিম জোমাদ...

গরমে সবজির বাজারে নেই স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈরী আবহাওয়ার প্রভাব পড়েছে সর্বত্র। বিশেষ...

গভীর নলকূপে পড়ল যুবক

জেলা প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার পূর্ব নেজামপু...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা