নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানী ঢাকার অভ্যন্তরে উত্তরা-মতিঝিল-কমলাপুর লাইনে চলাচলকারী মেট্রোরেলের প্রথম ট্রেনসেটটি জাপানের কোবে বন্দর থেকে সমুদ্র পথে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আগামী ২৩ এপ্রিল ট্রেনটি ঢাকায় মেট্রোরেলের ডিপোতে এসে পৌঁছতে পারে বলে জানিয়েছেন কোম্পানির কর্মকর্তারা। উত্তরা-মতিঝিল-কমলাপুর মেট্রোরেল লাইনে (এমআরটি-৬) চলাচল করবে ট্রেনটি।
বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার আগে ডিএমটিসিএলের একটি বিশেষজ্ঞ দল জাপানে গিয়ে ট্রেনগুলো পরীক্ষা-নিরিক্ষার কাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে জাপান ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় বিকল্প পন্থা হিসেবে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ট্রেনগুলো পরিদর্শন করেছে বাংলাদেশে নিযুক্ত কোম্পানিটি।
ডিএমটিসিএলের পক্ষে ট্রেনগুলো পরিদর্শন করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। পরিদর্শন কার্যক্রম ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করেন ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাধারণত একটি মেট্রোরেলের ট্রেন বাংলাদেশে আনার আগে ৫ ধরনের পরীক্ষা করতে হয়। আর দেশে আনার পর আরও ১৪ ধরনের পরীক্ষা করতে হয়। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আনার পর সব পরীক্ষা করা হবে। এরপর শুরু হবে ট্রায়াল রান।
অন্তত ৬ মাস ট্রায়াল রান করার পর যাত্রী পরিবহন শুরু হবে।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক জানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে বাকি ট্রেনগুলোও দেশে আসবে। দ্বিতীয় ট্রেনসেট জাপান থেকে ১৫ এপ্রিল রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। সেটি ঢাকায় পৌঁছতে পারে ১৬ জুন। আর তৃতীয় ট্রেন ১৩ জুন রওনা হয়ে ১৩ আগস্ট পৌঁছতে পারে।
ট্রেনগুলো প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ট্রায়াল রান দ্রুত শুরুর কথা জানিয়েছেন এমআরটি লাইন-৬ কর্তৃপক্ষ।
এমআরটি লাইন-৬-এর জন্য সব মিলিয়ে ২৪ সেট ট্রেন কেনা হচ্ছে। ট্রেনগুলো প্রস্তুতকারী হচ্ছে জাপানি প্রতিষ্ঠান কাওয়াসাকি-মিৎসুবিশি। সব মিলিয়ে ২৪ সেট ট্রেনের দাম ৩ হাজার ২০৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। শুল্ক ও ভ্যাট মিলিয়ে এসব ট্রেন বাংলাদেশে এসে পেৌঁছাতে খরচ হবে ৪ হাজার ২৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
ট্রেনগুলোতে ডিসি ১৫০০ ভোল্টেজ বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা থাকবে। স্টেইনলেস স্টিল বডির ট্রেনগুলোয় থাকবে লম্বালম্বি সিট। প্রতিটি ট্রেনে থাকবে দুটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রতিটি বগির দু’পাশে থাকবে ৪টি করে দরজা।
জাপানি স্ট্যান্ডার্ডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা-সংবলিত প্রতিটি ট্রেনের যাত্রী ধারণক্ষমতা হবে ১ হাজার ৭৩৮ জন। ভাড়া পরিশোধের জন্য থাকবে স্মার্টকার্ড টিকেটিং ব্যবস্থা।
সান নিউজ/এসএ