নিজস্ব প্রতিবেদক: সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে অর্জিত রপ্তানি আয় ছিলো ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। ৪৭২ কোটি ডলার অর্জন করে গত একক মাসে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয়ের রেকর্ড করেছে বাংলাদেশ।
এর পেছনে ভূমিকা রেখেছে পশ্চিমা দেশে উৎসবকালীন মৌসুম উপলক্ষে ভোক্তা চাহিদা বৃদ্ধি, পোশাকের আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলোয় নতুন করে কোভিড সংক্রমণের কারণে সরবরাহ বিচ্ছিন্নতা।
ফলে এই মাসে ৩৪৬ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হয়েছে রপ্তানি আয়। বছরওয়ারি হিসাবে যা বড় মাত্রায় বা ৬০ দশমিক ৩৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির মুখ দেখেছে।
মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো প্রকাশিত প্রাথমিক তথ্যসূত্রে এসব জানা যায়।
বছরওয়ারি হিসাবে অক্টোবরে পোশাক পণ্যের জাহাজিকরণ ৫৩ দশমিক ২৭ শতাংশ বাড়ার ফলে; চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রপ্তানি আয় ১ হাজার ৫৭৪ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে।
অক্টোবরে অর্জিত আয় ছিলো সেপ্টেম্বরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি।
চামড়া, কৃষি, মাছ, ওষুধ এবং প্লাস্টিক পণ্যেও বছরওয়ারি হিসাবে চিত্তাকর্ষক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে পাট এবং পাটজাত পণ্যে তা হয়নি, এখাতে অক্টোবরে নেতিবাচক ৮ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির কথা জানিয়েছে ইপিবি।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, ভারত ও ভিয়েতনামের মতো প্রতিযোগী দেশে কোভিড-১৯ জনিত রপ্তানি বিচ্ছিন্নতা, মিয়ানমারে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং চীনে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণে দেশের পোশাক খাতে কার্যাদেশ বেড়েছে, ফলে আমরা রপ্তানিতেও শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করছি।
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির (র্যাপিড) চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অক্টোবরে রপ্তানিতে এই রেকর্ড প্রবৃদ্ধি পশ্চিমা উন্নত দেশগুলির শক্তিশালী পুনরুদ্ধারকে প্রতিফলিত করে। এর আগে, মহামারির সৃষ্ট দুর্বল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে এসব বাজারে পণ্যের চাহিদা দীর্ঘদিন ধরে চাপা পড়ে ছিলো।
জুলাই-অক্টোবরের আয় গত অর্থবছরের একই সময়ে অর্জিত ১২ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে ২২ শতাংশ বেশি এবং নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ শতাংশ বেশি।
এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বা ২.০৪ বিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে নিট পোশাকের চালান জাহাজিকরণ থেকে, অন্যদিকে উভেন আইটেমে আয় হয় ১৫১ কোটি ডলার। উভয় উপ-খাতেই গত বছরের চেয়ে ৫২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়।
বিদেশি অনেক বায়ার পণ্য পাঠানোর ১৮০ দিন পর মূল্য পরিশোধ করেন। ফলে দেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা চলতি মূলধন সংকটে রয়েছে, যা আগামী দিনগুলোতে নির্ধারিত সময়ে চালান পাঠানোর ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করবে বলে জানান এই সহ-সভাপতি।
অন্যদিকে, পোশাক প্রস্তুতের কাঁচামালের দামও চড়েছে বিশ্ববাজারে, কিন্তু তার সাথে রপ্তানিকারকদের ঋণ সীমা সমন্বয় করা হয়নি। এই অবস্থায় 'ব্যাংকগুলি ঋণ সীমা না বাড়ালে আগামী দিনগুলোয় আমরা টেকসইভাবে ব্যবসা ধরে রাখতে পারব না,' বলে মন্তব্য করেন আজিম।
সান নিউজ/এফএআর