নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনো পদত্যাগ করবেন না, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আজ দেশ-বিদেশে কত চক্রান্ত, কত যড়যন্ত্রের খেলা হচ্ছে এ সরকারের পতনের জন্য। বিএনপি বিদেশি মুরব্বিদের ডাকছে। তাদের আবারো দরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কিন্তু আদালতের আদেশে এ তত্ত্বাবধায়ক সরকার মরে গেছে। ওটা আর হবে না, শেখ হাসিনা কখনো রিজাইন (পদত্যাগ) করবেন না।
আরও পড়ুন : আ’লীগ সরকারের ভিত্তি জনগণ
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ছাত্র মহা সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা (বিএনপি) জানে যে, দেশের ৭০ ভাগ মানুষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। সেজন্যই নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে হারানো যাবে না। এ কারণেই চক্রান্ত করে ক্ষমতা থেকে হঠানোর চেষ্টা করছে বিএনপি। তারা বিদেশিদের দিয়ে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসানীতি প্রয়োগ করতে চাইছে।
তিনি বলেন, আমরা ১/১১ ভুলিনি। আর কোনো অস্বাভাবিক সরকার হবে না এ দেশে। এখন খেলা হবে ভোটচুরির বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার উন্নয়নের কৃতি তারা মুছে ফেলার চক্রান্ত করছে। শেখ হাসিনা এসেছিলেন বলেই এদেশে গণতন্ত্রের মুক্তি ঘটেছিল। তিনি এসেছিলেন বলেই এদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। তিনি না থাকলে এ দেশ কখনো উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর হতো না। শেখ হাসিনা দেশে ফিরতে না পারলে আজ বাংলাদেশের মানুষ মুক্তির স্বপ্নে বিভোর হতে পারত না। ১৫ বছর আগের বাংলাদেশ আর ১৫ বছর পরের বাংলাদেশের মধ্যে একটি বিশাল রূপান্তর হয়েছে। এ উন্নয়নের রূপকার বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন : ছাত্রলীগের সমাবেশে বৃষ্টির হানা
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বলেন, আজ সারা বাংলাদেশ থেকে আসা তারুণ্যের ঢল এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। আজ বঙ্গবন্ধুরকন্যার ডাকে সবাই একত্রিত হয়েছে। তিনি বারে বারে মৃত্যুমুখেও জীবনের জয়গান গেয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের মাঝে দাঁড়িয়ে বারে বারে সৃষ্টির পতাকা উড়িয়েছেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে তিনি সারা বিশ্বে মানবতার মা হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের আকাশে তিনি শান্তির পতাকা উড়িয়ে বিশ্ব শান্তির অগ্রদূত হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, গত ৪৮ বছরে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার মতো এত জনপ্রিয় নেতা আর একজনও আসেনি। গত ৪৮ বছরে সবচেয়ে সৎ রাজনীতিক শেখ হাসিনা। দেশের ইতিহাসে গত ৪৮ বছরে সবচেয়ে দক্ষ প্রশাসক ও সাহসী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম শেখ হাসিনা।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমান তার এই বিএনপি জন্ম দিতে গিয়ে সেই অনুষ্ঠানে উচ্চারণ করেছিলেন যে, পাকিস্তানের মতো ভ্রাতৃপ্রতিম রাষ্ট্র বানাব। আজকের এই বাংলাদেশকে তারা পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল। জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করে জেনারেল এরশাদ, খালেদা জিয়া ১৫ আগস্টে কেক কেটে ভুয়া জন্মদিন পালন করে বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে দিয়ে চেয়েছিল। সেই ইতিহাস আমাদের ভুলে গেলে চলবে না।
আরও পড়ুন : দেশের প্রতিটি অর্জনে ছাত্রলীগ জড়িত
তিনি বলেন, ৪৮ বছর পর আজ ঐতিহাসিক এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সমাবেশে দাঁড়িয়ে বলছি— রক্তাক্ত বিদায়ের ৪৮ বছর পরেও বঙ্গবন্ধু তোমাকে কেউ মুছে ফেলতে পারেনি। এখনো তুমি বাংলার তারুণ্যের হিমালয়। যতদিন এ বাংলায় চন্দ্র-সূর্য উদয় হবে, পাখিরা গান গাইবে, নদীর কলরব, পাখির কলতান থাকবে... ততদিন এই কৃষ্ণচূড়া-শিমুলের বাংলায়, কৃষকের লাঙ্গলের ফলায় ও লালনের দোতারায় বঙ্গবন্ধু তুমি থাকবে। তোমার স্মৃতি, তোমার কৃতিত্ব ও বীরত্ব এই বাংলায় কেউ মুছে ফেলতে পারবে না।
আজ (শুক্রবার) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্র সমাবেশ করছে ছাত্রলীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এছাড়া ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা এতে উপস্থিত রয়েছেন।
সান নিউজ/জেএইচ