বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস
স্বাস্থ্য

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস

সান নিউজ ডেস্ক : ১৪ নভেম্বর (সোমবার) বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। সারাবিশ্বের মতো জনসচেতনতার লক্ষ্যে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হচ্ছে।

আরও পড়ুন : ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়তা অব্যাহত

ডায়াবেটিস দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘আগামীতে নিজেকে সুরক্ষায় ডায়াবেটিসকে জানুন।’ অর্থাৎ ডায়াবেটিস সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারলে একে প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

১৯৯১ সালে ১৪ নভেম্বর কে ‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক ফেডারেশন (আইডিএফ)।

২০০৭ থেকে বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালন শুরু হয়। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির অনুরোধে বাংলাদেশ সরকার ১৪ নভেম্বর ‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’ পালনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব করে।

আরও পড়ুন : করোনায় আরও একজনের মৃত্যু

২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর এ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে জাতিসংঘে গৃহীত হয় (ইউএন রেজোলুশন ৬১/২২৫)।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকায় বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে রোগটি ক্রমশ বাড়ছে। এটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে আগামী দিনে নিজেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ডায়াবেটিস একটি প্রতিরোধ ও নিরাময়যোগ্য রোগ। তবে প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি (বাডাস) নানামুখী কাজ করছে। সরকার টাইপ-১ ডায়াবেটিক রোগীদের বিনামূল্যে ইনসুলিন দিতে বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছে।

আরও পড়ুন : ডেঙ্গুতে মৃত্যু ২০০ ছাড়াল

ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র :

ডায়াবেটিস মেলাইটাস (Diabetes mellitus) যা সংক্ষেপে ডায়াবেটিস নামেই পরিচিত, বাংলায় এটিকে বহুমূত্ররোগ বলে।

ডায়াবেটিস হলো একটি গুরুতর, দীর্ঘমেয়াদি অবস্থা যেটি ঘটে যখন রক্তের গ্লুকোজ মাত্রা দীর্ঘসময় ধরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে, কারণ হয় শরীর যথেষ্ট পরিমাণে বা কোনো ইনসুলিন উৎপাদন করে না অথবা উৎপাদিত ইনসুলিন কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে না।

উপসর্গগুলো হলো ঘনঘন প্রস্রাব (পলিইউরিয়া), অত্যধিক তৃষ্ণা (পলিডিপসিয়া) এবং অত্যধিক ক্ষুধা (পলিফেজিয়া)। চিকিৎসা না করালে অনেক জটিলতার সৃষ্টি হয়।

তাৎক্ষণিক জটিলতার মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস, হাইপার‌অসমোলার হাইপারগ্লাইসিমিক স্টেট অথবা মৃত্যু।

গুরুতর দীর্ঘমেয়াদি জটিলতার মধ্যে রয়েছে হৃদ্‌যন্ত্র ও রক্তবাহের রোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিক নেফ্রোপ্যাথি, ডায়বেটিসজনিত পায়ের ক্ষত, ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি ও চিন্তাশক্তির লোপ।

বহুমূত্ররোগ হয় অগ্ন্যাশয় ঠিকমতো ইনসুলিন উৎপাদন করে না অথবা উৎপাদিত ইনসুলিনের প্রতি দেহের কোষগুলো যথাযথভাবে সাড়া প্রদান করে না।

আরও পড়ুন : আশা করি ডেঙ্গু কমে আসবে

বহুমূত্ররোগের তিনটি প্রধান ধরন রয়েছে :

টাইপ ১ :

ডায়াবেটিস হয় যখন অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষ বিনষ্ট হওয়ার ফলে যথেষ্ট পরিমাণে ইনসুলিন উৎপাদিত হয় না। পূর্বে এটি ইনসুলিন-নির্ভরশীল ডায়াবেটিস মেলিটাস অথবা জুভিনাইল ডায়াবেটিস নামে পরিচিত ছিল। বিটা কোষ বিনষ্ট হওয়ার কারণ হলো অটোইমিউন বিক্রিয়া অটোইমিউনের সঠিক কারণ এখনও অজানা।

বিটা কোষ ধ্বংসের হার বিভিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন হয়ে থাকে। এটি যে-কোনো বয়সে হতে পারে, তবে শিশু ও তরুণদের মধ্যে এই হার সবচেয়ে বেশি। ১০-১৪ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রে এই হার শিখরে পৌঁছে।

টাইপ ২ :

ডায়াবেটিস শুরু ইনসুলিন রোধ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, যেখানে কোষ ইনসুলিনের প্রতি যথাযথ সাড়া প্রদানে ব্যর্থ হয়। রোগের বয়স বাড়ার সাথে সাথে ইনসুলিনের ঘাটতিও তৈরি হয়।

এটি পূর্বে ইনসুলিন-অনির্ভরশীল ডায়াবেটিস মেলিটাস নামে পরিচিত ছিল। গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলো হলো শরীরের অত্যধিক ওজন ও কায়িকশ্রমের অভাব।

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হলো তৃতীয় প্রধান ধরন :

এটি হয় যখন একজন গর্ভবতী মহিলা যার ইতঃপূর্বে কখনো ডায়াবেটিসের ইতিহাস ছিল না কিন্তু গর্ভধারণ করার পর রক্তের গ্লুকোজ মাত্রা বেড়ে যায়।

টাইপ ১ ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ইনসুলিনের ব্যবহার আবশ্যক। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের চিকিৎসা ও প্রতিরোধের মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, ওজন নিয়ন্ত্রণ ও তামাকের ব্যবহার এড়িয়ে চলা। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ইনসুলিনসহ বা ইনসুলিন ছাড়া মুখে সেবনীয় ওষুধ ব্যবহৃত হয়।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, পা ও চোখের যত্ন নেওয়া এই রোগে খুবই জরুরি। ইনসুলিন ও কিছু মুখে সেবনীয় ওষুধ রক্তের গ্লুকোজ মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে যা হাইপোগ্লাইসিমিয়া নামে পরিচিত।

যে-সকল স্থূল ব্যক্তি টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের ওজন কমানোর শল্যচিকিৎসা খুব উপকারে আসে। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস সাধারণত বাচ্চা প্রসবের পর ভালো হয়ে যায়।

আরও পড়ুন : অন্য রকম লড়াইয়ে বিধ্বস্ত জাপান

প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর হিসাব অনুযায়ী, সারা বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৬ কোটি ৩০ লাখ (৮.৮% প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ), যার মধ্যে ৯০% টাইপ ২ ডায়াবেটিস। ২০২১ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ কোটি ৭০ লাখে।

নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে এই রোগের হার একই। এই রোগের প্রাদুর্ভাব হার ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে। ডায়াবেটিসে মানুষের অকাল মৃত্যু ঝুঁকি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়।

২০১৯ সালে, ডায়াবেটিস রোগে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ৪২ লাখ মানুষের, ২০২১ সালে তা দাঁড়িয়েছে ৬৭ লাখে। এটি বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সপ্তম প্রধান কারণ।

সান নিউজ/এইচএন

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

নোয়াখালীতে ভূমি দুস্যুর বিরুদ্ধে মানববন্ধন 

নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর কোম...

ফসলের ক্ষতি করে চলছে অবৈধ ব্যাটারি ইন্ডাস্ট্রি

কামরুল সিকদার, বোয়ালমারী (ফরিদপুর):

গরমে বারবার গোসল করা কি ক্ষতিকর?

লাইফস্টাইল ডেস্ক: বৈশাখের শুরু থে...

আজ শেরে বাংলার ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ অবিভক্ত বাংল...

খাগড়াছড়িতে ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:

হিটস্ট্রোকে একদিনেই ৬ জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক: তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্ট্রোকে আক্রা...

আইনি সেবায় মানবিকতাকেও স্থান দেয়া উচিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: আইনি সেবা প্রদানকালে পুঁথিগত আইন প্রয়োগের...

ভূঞাপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় 

খায়রুল খন্দকার, টাঙ্গাইল: প্রচণ্ড তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ট। নেই...

প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরছেন কাল

নিজস্ব প্রতিবেদক: থাইল্যান্ড সফর শেষে আগামীকাল ব্যাংকক থেকে...

ডিপিএস এসটিএস স্কুলে গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিপিএস এসটিএস স্কুল ঢাকার ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা