খায়রুল খন্দকার, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলার প্রতিদিন গড়ে ৫০-৬০ জন চোখ ওঠা রোগের চিকিৎসা নিতে আসছেন স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। শিশু, বয়স্কসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষের মধ্যে এ রোগে দেখা দিচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালে চোখের চিকিৎসক বা কনসালট্যান্ট না থাকায় বিপাকে পড়ছেন রোগীরা।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ নেই রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায়
সরেজমিনে মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) সকালে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে কথা হয় চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত জুয়েল নামের এক স্থানীয় রোগীর সাথে। তিনি বলেন ,চোখের পাতা ফুলে লাল হয়ে যাচ্ছে, চোখ থেকে অনবরত পানি ধরছে। এই রোগের যন্ত্রণায় অনেক কঠিন।
কথা হয় পাশ্ববর্তী ঘাটাইল উপজেলা থেকে আগত রোমানের সাথে। তিনি বলেন, আমার চোখ লাল হয়ে আছে, সঙ্গে চুলকানি। সকালে দুই চোখ আটকে থাকে, পানি দিয়ে অনেকক্ষণ পরিষ্কার করে চোখ খুলতে হয়। এ সমস্যা নিয়ে সরকারি হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারে গেলে বলা হয়, হাসপাতালে চোখের কোনো ডাক্তার নেই। বাইরের একটি দোকান থেকে ড্রপ কিনে ব্যবহার করছি। ফার্মেসিগুলোয় ড্রপ সংকট ও অয়েনমেন্ট না থাকায় ভুক্তভোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: দুর্নীতি জিরো টলারেন্স করতে চাই
উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের বাসিন্দা জুবায়ের নামে এক ব্যক্তির সাথে তিনি জানান, চোখের এ রোগের চিকিৎসায় সরকারি হাসপাতালে তেমন কোনো সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ফার্মেসি থেকে ড্রপ কিনতে গেলেও পাওয়া যাচ্ছে না। ড্রপ সংকট ও অয়েনমেন্ট না মেলায় ভুক্তভোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কোনো কোনো ফার্মেসিতে ড্রপ-অয়েনমেন্ট থাকলেও অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে অসাধু ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে চোখে চুলকানি, লাল হওয়া ও পানি পড়ার লক্ষণ নিয়ে রোগীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসছেন। কিন্তু হাসপাতালে চোখের চিকিৎসক না পেয়ে অনেকেই ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। অনেকেই প্রাইভেট ক্লিনিকেও চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।
এই সময় কয়েকটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি সাথে কথা বলে জানা যায়, হঠাৎ করে চোখ ওঠা রোগটি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রত্যেকটি ফার্মেসিরা বেশি বেশি করে অর্ডার দেওয়ায় ষ্টক যা ছিল তা শেষ। তাই এই সংকট দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইকুয়েডরে দাঙ্গায় নিহত ১৫
বিশেষজ্ঞরা জানান, চোখ ওঠা রোগটি মূলত ছোঁয়াচে ও ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। কনজাংটিভাইটিস বা ‘রেড/পিংক আইও’ বলা হয় এ রোগকে। আক্রান্তদের কারও কারও চোখ ওঠা তিনদিনে ভালো হয়ে যায়। আবার অনেকের তিন সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লেগে যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আব্দুস সোবহান বলেন, সম্প্রতি সারা দেশেই এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। এ সময়টাতে একটু সচেতন থাকলে ভয়ের কিছু নেই। তবে আক্রান্ত হলে বাড়িতেই থাকতে হবে। বিশেষ প্রয়োজনে বাইরে গেলে চোখে কালো চশমা ব্যবহার করতে হবে।
সান নিউজ/এমআর