আমিরুল হক, নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে ফুটপাত আছে ঠিকই। কিন্তু সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফুটপাত দিয়ে চলাচল করাই যায় না, বরং ফুটপাত চোখেই পড়ে না। শহরের প্রাণকেন্দ্র মদিনা মোড়, বঙ্গবন্ধু চত্ত্বরে, পোস্ট অফিস মোড়, শহীদ ডা. জিকরুল হক ও শহীদ ডা. শামসুল হক সড়কের দুপাশের ফুটপাত বহুকাল থেকে ফলের স্থায়ী বাজারে পরিণত হয়েছে। ফুটপাত দিয়ে চলাচল দুঃসাধ্য। কোথাও কোথাও ফুটপাত ছাড়িয়ে মূল সড়কের ওপর বসে গেছে ফলের পসরা। ফলে পথচারীদের ভোগান্তি আর সড়কের যানজট তীব্র হলেও মিলছে না প্রতিকার।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ভ্রাম্যমান এসব ফল ব্যবসায়ীরা এমনভাবে ফুটপাত ও রাস্তা দখল করেছে যে সাধারণ মানুষ চলাচলের কোনো জায়গা নেই। অথচ বিএনপি অফিস থেকে বঙ্গবন্ধু মোড় পর্যন্ত সব সময় যানজট লেগেই থেকে। যেখানে প্রায় ৪শ’ গজ পথ পার হতে সময় লাগে ৪০ মিনিট। অথচ এই ব্যস্ততম সড়কে ঢুকেই দেখা গেল দু’ধারের ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে ফলসহ বিভিন্ন পণ্যের দোকান।
এতে সাধারণ পথচারী, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও বয়োবৃদ্ধরা ফুটপাত ব্যবহার করতে পারছেন না। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সড়কে নেমে চলাচল করতে গিয়ে
প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। দিনের পর দিন এ সমস্যা চলতে থাকলেও সমাধানের দায়িত্ব যেন কারোরই নেই। উপজেলা প্রশাসন, ট্রাফিক পুলিশ আর পৌরসভা বলল
সীমাবদ্ধতার কথা।
দোকানীরা জানান, এখানে ফুটপাতে ব্যবসা করতে হলে কেউ দৈনিক আবার কেউ কেউ মাসিক ভাড়া দেন। কারা এই ভাড়া তোলে জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, লোক
আছে। তবে এই টাকা কারা নেয়, কোথায় যায় তা তাঁরা জানেন না। মাসে বা প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা তাদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে তাঁরা নিশ্চিন্তে ব্যবসা করছেন। অন্য কোনো চাঁদাবাজি নেই বলে জানান ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা।
আদভীক হক তারুশ নামে একজন পথচারী বলেন, ফুটপাত নির্মাণ করা হয় জনচলাচলের জন্য। সেসব দখল করে যদি ব্যবসা পরিচালনা করা হয়, তাতে জনগণকেই তার হাঁটার অধিকার চলার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। শহরের প্রাণকেন্দ্রগুলোতে ফুটপাত দখল করে ব্যবসায়ীরা ফলের পসরা সাজিয়ে দিনের পর দিন ব্যবসা করছেন। এতে বুঝা যায় এখানকার ট্রাফিক পুলিশ হয় অদক্ষ, না হয় তাদের ম্যানেজ করা হয়েছে। ফুটপাত দখল ও এর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নেপথ্যে থাকা রাঘব-বোয়ালদের চিহ্নিত করা উচিত। হকারদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নিশ্চিত করে ফুটপাত উন্মুক্ত করে দেওয়া উচিত সংশ্লিষ্টদের।
এ প্রসঙ্গে সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান জানিয়েছেন, সেখানে ফুটপাত দখল করে ফলের দোকানপাটের বিষয়টি পৌর পরিষদের নজরে এসেছে। খুব শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম হুসাই বলেন, কোনোভাবেই কেউ ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করতে পারবেন না। যারা ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এমকেএইচ