সারাদেশ

বিলুপ্তির পথে ‘চরবেক গাছ’

এম.কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি : গাছটির অগণিত ফলন হয়। ফল পাকলে হয় লাল। খেতে খুবই মিষ্টি ও সুস্বাদু। আর গাছটি মাটির পানি ধারণে অন্যতম ভূমিকা রাখে। স্থানীয় ভাষায় নাম তার ‘চরবেক গাছ’। বাংলায় নাম জানা নেই। তবে এটি ডুমুর প্রজাতির একটি গাছ। গাছটির গোড়া হতে প্রায় অনেক উঁচুতে ফল ধরতে থাকে। যা জৈষ্ঠ্য-আষাঢ় মাসে ভরপুর পরিপক্ক ফলন হয়।

বিশেষ করে গোড়ার অংশে বেশি ফল ধরে। এ গাছের ফলকে চাকমা ভাষায় ‘চরবেক গুলো’ বলা হয়। গাছটির ফল কেবল মানুষই খায় না, পশু-পাখিদেরও খুবই প্রিয় এ ফলটি। ফলের ভিতর দানা দানা বীজের সাথে এক ধরণের জেলি রয়েছে। এ জেলিটি খেতে খুবই মিষ্টি এবং সুস্বাদু।

বন্য পশুর মধ্যে হরিণ এবং ভালুকের এটি একটি খুবই মজার ও আকর্ষণীয় ফল বা খাবার। ফলের সময় হরিণ হরিণীরা ফল খেতে আসে গাছের গোড়ায়। আগেকার দিনে হরিণ শিকার করার জন্য এ গাছের গোড়ার সামান্য দূরে তৃণ লতা-পাতা দিয়ে আড়াল বা দেয়াল তৈরী করে সেখানে অস্ত্র দিয়ে টোপ মেরে বসে থাকত শিকারীরা। আর যখন হরিণ ফল খেতে আসত, তখনই গুলিস্যুট করে তাদের মারা হত বলে শোনা যায়।

গাছটি অধিকাংশ সময় জন্মায় ছড়া বা খালের পাড়ের ঢালু জায়গায়। আকৃতি হলো নিচের দিকে হেলানো বা বাঁকানো। প্রত্যেকটি গাছ থাকবে হেলানো অবস্থায়। তবে গাছটির এ হেলানোর পেছনে চাকমা সমাজে পূর্ব পুরুষদের একটি লোক কাহিনী ছিল যা এখনকার প্রজন্ম তার পুরো কাহিনী জানেন না। এ কাহিনী জানতে খোঁজ করে কেবল জানা গেছে যে, পৃথিবীতে মানব জাতি বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য যোগান নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। এতে গাছটি মাত্র ছ’মাস খাদ্য বা ফল যোগান দিতে পারবে বলে প্রতিশ্রুতি দিতে পারায় তাকে লাঠি মারা হয়েছিল। আর এ থেকেই গাছটির ধর্ম হলো হেলে থাকা বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

গাছটি মাটিতে পানি ধারণ করে এবং পানি সরবরাহ করে থাকে। তাই গোড়ায় পানিযুক্ত স্যাঁতস্যাঁতে ভাব এবং বিশেষ করে পানির উৎসের কাছাকাছি স্থানে অধিকাংশ গাছ জন্মে থাকে। এ কারণেই ধরে নেয়া যায় চরবেক গাছের জাতটি মাটির পানি ধারণ করে এবং পানি সরবরাহ করে থাকে।

কিন্তু প্রাকৃতিক পরিবেশ বান্ধব এবং পানি সরবরাহকারী এমন উপকারী প্রজাতির গাছটি এখন বিলুপ্ত হতে চলেছে। পাহাড়ের প্রত্যেক ছড়া ও ঝিড়িতে গাছটি চোখে পড়তো। কিন্তু এখন তেমন আর চোখে পড়ে না।

প্রকৃতি তথা জীব জগতের কল্যাণে জলবায়ু সংরক্ষণে গাছটির সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রজন্ম বৃদ্ধিকরা আমাদের প্রত্যেকের একান্তই কর্তব্য রয়েছে।


সান নিউজ/কেইউ/এনকে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

প্রাকৃতিক উদ্ভিদে নিরাপদ খাদ্যের উৎস !

পার্বত্য চট্টগ্রামের উঁচু–নিচু পাহাড়ে বা সাধারণত জমির আশেপাশে সবজি ক্ষে...

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কানকাটা কাদিরা খুন, প্রবাসীসহ গ্রেপ্তার ৩

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আব্দুল কাদের জিলানী ওরফে কানকাটা কাদিরা (৩৫)কে পিটিয়ে ও ক...

হাতের অপারেশন করাতে গিয়ে প্রাণ গেল নারীর

নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর প্রাইম হসপিটালে ভুল চিকিৎসায় রাবেয়া বেগম (৪৮) নামে...

মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাসহ ৩ জন দোষী সাব্যস্ত

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের সত্যতা ম...

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়ে রায় ঘোষণা

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্র...

উলিপুরে মানব পাচারকারীকে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

কুড়িগ্রামের উলিপুরে প্রতারণার অভিযোগে চিহ্নিত মানব পাচারকারী মমিনুল ইসলাম বাব...

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানের জাতীয় কবির তত্ত্ব নিয়ে সেমিনার

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানের জাতীয় কবি ও চিন্তাবিদ আল্লামা ইকবালের &lsqu...

বিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতি, দুদকের অভিযান

মাদারীপুর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) উত্তর রমজানপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ...

কুষ্টিয়া-২ আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে নারীদের বিক্ষোভ

কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসন পুনর্বিবেচনা করে সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক শহ...

পাওনা টাকা আদায়ে উকিল নোটিশ জারী

সাতক্ষীরার তালা থানার পাঁচরোর্থী গ্রামের আফজাল হোসেন একই গ্রামের জান্নাত এন্ট...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা