কালাই রুটি বিক্রি করে মাসিক আয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার!
সারাদেশ

কালাই রুটি বিক্রি করে মাসিক আয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার!

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া : ভোজন রসিকদের কাছে সুস্বাদু খাবার হিসেবে কালাই রুটি বেশ জনপ্রিয়। মরিচ বাটা, পেঁয়াজ কুঁচি বা সরিষার তেল দিয়ে বেগুন ভর্তার সঙ্গে গরম কালাই রুটি মানুষের কাছে একটি প্রিয় খাবার। শীতের আগমনে সুস্বাদু এসব কালাই রুটির দোকান গড়ে উঠেছে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্থানে। অস্থায়ী ভাবে ফুটপাতের পাশে গড়ে উঠা এসব দোকানের বেচা-বিক্রিও বেড়েছে বেশ। দুরদুরান্ত থেকে মানুষ কালাই রুটি খেতে আসছেন ফুটপাতের এসব দোকানে।

জানা যায়, প্রথমে মাষকালাই ও আতপ চাল পাটাতে বা যাঁতাতে পিষে আটা বানানো হয়। মেশিনে তৈরি আটা দিয়েও কালাই রুটি বানানো গেলেও পাটায় পিষ্ট আটা দিয়ে কালাই রুটি বানালে স্বাদ বৃদ্ধি পায়। এর সাথে স্বাদমতো লবণ ও প্রয়োজন পরিমাণ পানি মিশিয়ে খামির তৈরি করা হয়। খামির থেকে ছোট বল পরিমাণ আটা নিয়ে গোলাকার করা হয়। এরপর দুই হাতের তালুতে রেখে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বড় রুটি বানানো হয়। সাধারণত গমের রুটির চেয়ে কালাই রুটি অধিক পুরু এবং বড় হয়।

এরপর রুটিটিকে মাটির তাওয়াতে সেঁকে গরম করা হয়। রুটির রঙ বাদামী হয়ে গেলে নামিয়ে নেয়া হয়। কালাই রুটির সাথে সাধারণত বেগুন ভর্তা, শুকনো মরিচ ভর্তা, বট, পেঁয়াজ ভর্তা, মাংস ভুনা ইত্যাদি দিয়ে পরিবেশন করা হয়। এসবের সাথে রুটির টুকরোর ছিড়ে গরম গরম খাওয়া হয়।

সরেজমিন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার খাড়ারা গ্রামের ফেরত মোড় নামক স্থানে গিয়ে দেখা যায়, ফুটপাতের পাশে অস্থায়ী ভাবে গড়ে উঠেছে একটি কালাই রুটির দোকান। সেখানে খাইরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি রুটি তৈরি করছেন। রুটি তৈরিতে সহায়তা করছেন তার স্ত্রী। খাইরুলের দোকানে বসে মানুষ রুটি খাচ্ছেন।

কালাই রুটি বিক্রেতা খাইরুল ইসলাম জানান, আমি আগে স্যালো ইঞ্জিন চালিত পটাং গাড়ি চালাতাম। আমার গাড়ির স্টান্ডে রেল লাইনের পাশে এক নারী কালাই রুটি তৈরি করতেন। তা দেখে প্রথম আমি শিখি। সেখান থেকে শিখে পরবর্তীতে আমি নিজেই তৈরি করা শুরু করেছি। আমার দোকানে অনেকেই এসে কালাই রুটি খান এবং সুনাম করেন।

তিনি আরও জানান, প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কেজি আটার রুটি বিক্রি হয়। এক কেজি আটায় ৬থেকে ৭টি রুটি হয়। রুটির সাথে বেগুন ভর্তা, পেয়াজ, রসুন, ধনিয়ার
পাতা ছাড়াও রায় বাটা থাকে। কালাই রুটি দুই রকম তৈরি হয়। এর মধ্যে শুধু কালাই রুটি ৪০ টাকা পিস বিক্রি করা হয়। এ ছাড়াও অরেক রকম ২৫ টাকা পিস বিক্রি করা হয়।

খাইরুল ইসলাম বলেন, প্রায় ৩ বছর ধরে কালাই রুটি বিক্রির সাথে যুক্ত আছি। মুলত শীতের ৩ থেকে ৪ মাস কালাই রুটি বিক্রি হয়। প্রতি মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা রুটি বিক্রি করে আয় হয়। আর প্রতি দিন ২৫শ’ টাকা পর্যন্ত বেচা-বিক্রি হয়।

কথা হয় কালাই রুটি খেতে আসা আছাদুর রহমান বাবু নামে এক ব্যক্তির সাথে। তিনি জানান, আমাদের বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে খাড়ারায় ফেরত মোড়ে
অনেকদিন ধরে শুনছি খুব ভালো কালাই রুটি তৈরি করা হয়। তাই আমরা কালাই রুটি খেতে আসছি। এই কালাই রুটি খেয়ে অনেক ভালো লেগেছে।

মো. মামুনুর রশিদ জানান, মিরপুরের গেট পাড়া থেকে কালাই রুটি খেতে এসেছি। বেগুন ভর্তা আর ধনিয়া পাতা দিয়ে মসলা বানানো অনেক সুস্বাদু। এটা আমি গত
বছর খাওয়ার পর এতো সুন্দর লেগেছিলো। এ কারণে আমি গত সপ্তাহে কলাই রুটি খেতে এসেছিলাম।

মো. আশরাফুল আলম হিরা নামে একজন জানান, আমি মিরপুর পৌর এলাকা থেকে কালাই রুটি সন্ধান পেয়ে খেতে এসেছি। এখানে এসে দেখদে পেলাম আমার মত অনেকে কালাই রুটি খেতে এসেছেন। গরম গরম কালাই রুটি খেয়ে বেশ ভালো লাগলো।

সান নিউজ/কেকেএস | Sun News

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

উত্তরায় প্রাইভেটকারে অপহরণ; ভিডিও ভাইরালের পর গ্রেপ্তার ২

রাজধানীর উত্তরা এলাকায় চাঞ্চল্যকর অপহরণের ঘটনায় অপহরণে ব্যবহৃত একটি প্রাইভে...

আমাকে চেয়েছিলো যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী বানাতে: ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গত সরকারের সময় তিনবার...

ভালুকায় সৌন্দর্য বাড়াতে ইউএনও’র ‘নিজ খরচে’ সবুজ বিপ্লব

ভালুকা উপজেলার পরিবেশ সংরক্ষণ ও নগর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নি...

কালীগঞ্জে ফিল্মিস্টাইলে যুবককে পিটিয়ে হত্যা

গাজীপুরের কালীগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জে...

সড়কহীন ৩৪ কোটি টাকার সেতু

সেতু আছে কিন্তু সংযোগ সড়ক করা হয়নি এমন সেতু ফেনীতে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা