রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাংবিধানিক পরিবর্তন আনার প্রস্তাবে দেশটির বর্তমান সরকার পদত্যাগ করেছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদ বুধবার তার সরকারের হয়ে এই পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, বুধবার রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন দেশটির সাংবিধানিক পরিবর্তন আনার প্রস্তাব দেয়ার পর পরই গোটা সরকার পদত্যাগ করলো।
পুতিন আজ বুধবার জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে বলেন, রাশিয়ায় বড় ধরনের সাংবিধানিক পরিবর্তনের প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদের নির্বাচনে পার্লামেন্টকে ক্ষমতা দেয়ার প্রস্তাব দেন তিনি। দেশের সাংবিধানিক পরিবর্তনের জন্য গণভোটেরও প্রস্তাব দেন পুতিন।
ভোটের নির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ ঘোষণা না করে তিনি বলেন, ‘সংবিধানের আমূল পরিবর্তনে দেশের মানুষের মধ্যে ভোট হওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করছি। এদিকে পুতিনের কাছে পদত্যাগপত্র দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদ এখন রাশিয়ার প্রভাব বিস্তারকারী নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
রাশিয়ার স্থানীয় দৈনিক দ্য মস্কো টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবিধানের এই আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে পুতিন ভবিষ্যতে আবার রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় আসছেন।
পুতিনের সমালোচকদের দাবি, অতীতের মতো সংবিধান সংশোধন করে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতেই এ পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা নিয়েছেন তিনি।
পুতিন ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট থাকার পর চতুরতার আশ্রয় নেন। সংবিধান সংশোধন করে তিনি প্রেসিডেন্টের চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বাড়িয়ে ওই বছর রুশ প্রধানমন্ত্রী হন। প্রেসিডেন্ট করেন দিমিত্রি মেদভেদেভকে। তারপর ২০১২ ও ২০১৮ সালে পুনরায় প্রেসিডেন্ট হন, তার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালে।
১৯৯৯ সালে তৎকালীন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিন পুতিনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন। অনেক রুশ তখন জানত না কে এই পুতিন। তার কয়েক মাস পর ইয়েলৎসিন অনেকটা নাটকীয়ভাবে পুতিনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্থলাভিষিক্ত করেন।
তারপর থেকে প্রায় দুই দশক ধরে পুতিন রাশিয়ার নেতা।
২০২৪ সালে মেয়াদ শেষ হতে যাওয়া পুতিনের প্রেসিডেন্ট পদে থাকা না থাকা নিয়ে খোদ রাশিয়া এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা রকম গুঞ্জন চলছে।
এমন এক সময় তার সরকারের এই পদত্যাগ ঘটলো যখন মার্কিনী ও ইরানের মধ্যে বৈরিতা চলছে। যেখানে এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে কড়া হুশিয়ারি দিয়েছিল রাশিয়া। এখন দেখার বিষয় বিশ্ব পরিস্থিতিতে এর কোনো প্রভাব পড়ে কি না।
সান নিউজ/সালি