ভোলা প্রতিনিধি: উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলাতে বেশ কয়েকদিন ধরে জেঁকে বসেছে শীত। সেই শীতের হাত থেকে ভোলার নিম্ন আয়ের মানুষদের কিছুটা রক্ষা করতে রাতের আঁধারে বেড়িঁবাধ ঘুরে ঘুরে শীতবস্ত্র হিসাবে কম্বল বিতরণ করেছেন ভোলা জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ের তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে ভোলার ধনিয়ার কোরারকাট বেড়িঁবাধ, শিবপুর শান্তিরহাটসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে ২ শতাধিক পরিবারের হাতে তিনি কম্বল তুলে দেন।
এ সময় বেড়িঁবাধে থাকা নিম্ন আয়ের মানুষের খোঁজ খবর নেন জেলা প্রশাসক। রাতের আঁধারে ঘরের দুয়ারে জেলা প্রশাসককে কম্বল নিয়ে হাজির হতে দেখে আবেগে আপ্লুত হন বেড়িঁবাধ এলাকার অসহায় শীতার্ত মানুষ। তীব্র শীতের মধ্যে শীতবস্ত্র পেয়ে খুশিতে আত্মহারা তারা।
কম্বল পাওয়া ধনিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের কোররাহাট এলাকার রিকশা চালক আবুল বাশার বলেন, রাত হলে ছেলে-মেয়ে নিয়ে শীতে খুব কষ্ট করি। রোজগার করে যে টাকা পাই, তা দিয়ে একটা ভালো কম্বল কেনার সাধ্য নেই। অনেকের কাছে একটা কম্বল চাইছিলাম, কেউ দেয়নি।
আরও পড়ুন: বায়ুদূষণে শীর্ষ চারে ঢাকা
আজ ডিসি স্যার আমার বাড়ীতে এসে নিজে শীতবস্ত্র দিয়েছেন। এটা আমার জীবনের সব থেকে বড় পাওয়া। মনে হয়, আল্লাহ আমার চাওয়া কবুল করছে। এখন রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারব।
৬০ বছরের বৃদ্ধা সালেহা বেগম বলেন, শীতে রাতে ঘুমাতে অনেক কষ্ট হতো। অনেক সময় শীতের কারণে ঘুম ভেঙে যেত। কিন্তু আজকে স্যার আমাকে একটা কম্বল দিয়েছেন। আজ আমি শান্তিতে ঘুমাতে পারব।
শীতে কম্বল পাওয়া মরিয়ম বলেন, আমার স্বামী একজন জেলে। নদীতে তেমন মাছ না থাকায় আয়-রোজগার তেমন হয় না। পোলাপানরে দুইটা শীতের পোশাকও কিনে দিতে পারে না।
আরও পড়ুন: তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে
এই শীতের মধ্যে রাতে অনেক কষ্টে ছেলে-মেয়ে নিয়া ঘুমাই। জেলা প্রশাসন থেকে আমাকে একটা কম্বল দিয়েছে। এখন ভালো করে ঘুমাতে পারব।
ভোলা জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে খুব কনকনে শীত পড়েছে। এ জেলায় ছিন্নমূল মানুষের পাশাপাশি বেড়িঁবাধ এলাকায় নিম্ন আয়ের মানুষ বসবাস করে থাকেন।
শীত বেড়ে যাওয়ায় এসব মানুষ শীতে অনেক কষ্ট পাচ্ছে। তাই তাদের কষ্ট কিছুটা লাঘব করার জন্য শীতবস্ত্র নিয়ে ছুটে এসেছি তাদের জন্য।
আরও পড়ুন: স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টকে কুপিয়ে হত্যা
আমরা এ বছর দুযোর্গ ব্যবস্থপনা মন্ত্রণালয় ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভান্ডার থেকে ৪৩ হাজার ৫০০ কম্বল পেয়েছি। যেগুলো আমরা উপজেলা ও ইউনিয়ন ভিত্তিক বিভাজন করেছি। ইতিমধ্যে স্ব-স্ব উপজেলায় দুস্থ ও শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ কার্যক্রম চলমান থাকবে।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রিপন কুমার সাহা, ভোলা সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার সজল চন্দ্র শীল, ভোলা সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ, সিনিয়র সহকারী কমিশনার নেজারত শাখা মো. আবু সাঈদ, সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ জিয়াউল হকসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা তার সাথে ছিলেন।
সান নিউজ/এনজে