নিজস্ব প্রতিনিধি, সিলেট : যৌতুকের বলি সিলেটের তামান্না। ঘাতক স্বামী এ কারণেই তাকে নির্যাতন করতে করতে চিরতরে শেষ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তার মা।
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) রাতে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সৈয়দা তামান্না বেগম সিলেটের এক তরুণী গৃববধূ। বিয়ে হয়েছিল গত সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে। পাত্র বরিশাল জেলার আল মামুন। তবে থাকতো সিলেটেই। নগরীর একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী হলেও বিয়ে করেছিল ব্যবসায়ী পরিচয়ে।
সোমবার সকালের দিকে নগরীর কাজীটুলা এলাকার ভাড়া বাসা থেকে সদ্যকৈশোর উত্তীর্ণ তামান্নার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মাত্র ১৯ বছরেই ঘাতক স্বামীর নিষ্ঠুরতার বলি হতে হলো তাকে।
তার মা হাফিজুন চৌধুরীসহ অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন জানিয়েছেন, বিয়ের আগে প্রতারক আল মামুন ও তার আত্মীয়রা কিছুই চায়নি। বারবার কেবল তামান্নাকেই তাদের পরিবারের বউ হিসাবে ঘরে তুলতে চেয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই মামুনের রূপ পাল্টাতে শুরু করে। নানা অজুহাতে টাকা চাইতো স্ত্রীর কাছে। এক পর্যায়ে সে তাকে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে।
হাফিজুন চৌধুরী বলেন, ‘মেয়ে যাতে নির্যাতিত না হয়, সেজন্য ধার-দেনা করে ২০ হাজার টাকাও দিয়েছিলাম। এতেও মন গলেনি তাদের। শেষ পর্যন্ত আমার মেয়েটাকে মেরেই ফেললো।’
জানা যায়, মামুন বিয়ের সময় জাল আইডি কার্ডে ঠিকানা হিসাবে নগরীর বারুতখানা এলাকার কথা উল্লেখ করেছে। পিতা-মাতার নাম লিখিয়েছে, যথাক্রমে আবুল কাশেম সরদার ও আম্বিয়া বেগম। বিয়ের পর জানা যায়, তামান্নার আগে মামুন আরেকটি বিয়ে করেছিল। সেপক্ষে তার একটা সন্তানও আছে। এ নিয়ে মামলা মোকদ্দমাও চলছে। অথচ তামান্নাকে বিয়ের সময় নিজেকে অবিবাহিত হিসাবেই জানিয়েছিল ঘাতক আল মামুন।
তামান্না হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার ভাই সৈয়দ আনোয়ার হোসেন রাজা বাদী হয়ে আল মামুনসহ ৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী থানায়।
সোমবার রাতে এজাহারনামীয় ২ নম্বর আসামী এমরানকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। সে বরিশালের বাবুগঞ্জ থানার চরহোগলা গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে। অন্য আসামীরা এখনো পলাতক। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, তাকে আদালতে তুলে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানানো হলেও এখনো তার শুনানী হয়নি।
উল্লেখ্য, সৈয়দা তামান্নার বাড়ি দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজার ইউনিয়নের ফুলদি গ্রামে। তবে বর্তমানে তারা গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকার এমসি একাডেমি সংলগ্ন একটি বাসায় ভাড়া থাকেন।
সান নিউজ/এক/এনকে/এস