গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার মুন্সিরহাট এলাকায় ৯টি দোকানঘর ও প্রায় ৫২টি পরিবারের বসতভিটা বিলিন হয়ে হয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা, মুন্সিরহাট, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ শতশত ঘরবাড়ি, গাছপালা ও ফসলি জমি। ফলে ভাঙন এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন: ক্ষতিগ্রস্তরা পেলো প্রধানমন্ত্রী'র উপহার
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছে। এলাকাবাসির অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে ভাঙন রোধ হচ্ছে না। মুন্সিরহাট পয়েন্টে ভাঙন শুরু হলে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড তড়িঘড়ি করে বালুর বস্তা ডাম্পিং করে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করলেও ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী সমাধান মিলছে না।
নদী তীর রক্ষায় মুন্সিরহাট ক্রসবাঁধ নির্মাণ করা হয়। যমুনার ভাঙনে মুন্সিরহাট ক্রসবাঁধ পয়েন্টে গত মাসেও বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি নিদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায়। আবারও গত সোমবার রাত থেকে ওই পয়েন্টে প্রায় ৩ শত ফুট এলাকাজুড়ে ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।
ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করতে লোকজন নিজেদের দোকানপাট ও ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে। মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে মুন্সিরহাটের শতাধিক দোকানপাট, শত শত ঘরবাড়ি মুন্সিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়, মুন্সিরহাট মসজিদ, মাদ্রাসা ও পাউবোর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।
আরও পড়ুন: দুটি সড়কের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন
ভাঙনের শিকার গৃহহারা পরিবারগুলো মুন্সিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয় ও বিদ্যালয় মাঠে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
বসতভিটা হারিয়ে আব্দুল করিম ও রেজাউল করিম বলেন, এখন আমরা কোথায় আশ্রয় নেই, কি খাব, কিছুই বুঝতে পারছি না। সোমবার রাতে আকস্মিক ভাঙন শুরু হলে কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই মুহুর্তের মধ্যে সর্বস্ব বিলিন হয়ে যায়। ওই মুহুর্তে স্ত্রী-সন্তানসহ জীবন নিয়ে ঘর থেকে বের হওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিলো না তাদের।
সাঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট বলেন, মুন্সিরহাট হতে গোবিন্দি পর্যন্ত এলাকায় যমুনার তীর রক্ষার জন্য ২০৬ কোটি টাকার কাজের টেন্ডার হয়েছে। বর্ষা মৌসুম শেষে নতুন প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে শিশু ধর্ষণ চেষ্টায় আটক ১
নদীর ভাঙন মুন্সিরহাট এলাকায় তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। তবে ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এ কাজ চলমান না থাকলে হাটের দোকানপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা, ঘরবাড়িসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। বাঁধটি ভেঙে গেলে বন্যার পানিতে সাঘাটা উপজেলা হেডকোর্য়াটারসহ বাঁধের পশ্চিমাংশ প্লাবিত হবে।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক মুন্সিরহাট ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, মুন্সিরহাট পয়েন্টের ভাঙন সর্বক্ষণ মনিটরিং করে জরুরী ভিত্তিতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে।
সান নিউজ/এইচএন