মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: সিত্রাংয়ের প্রভাবে মুষলধারে বৃষ্টিতে মুন্সীগঞ্জ শহরের ইদ্রাকপুর এলাকার ২ নং ইদ্রাকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ৬ দিন ধরে বিদ্যালয়ের মাঠ ও যাতায়াতের রাস্তা জলময় অবস্থায় রয়েছে। এতে পানি পাড়িয়েই শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও গেছে কমে।
একই সঙ্গে জলাবদ্ধতার কারনে ওই এলাকার প্রায় ৫০টি পরিবারে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। ড্রেনেজ ব্যবস্থার নাজুকতার কারনে বৃষ্টি হলেই সদর উপজেলা পরিষদ কার্যালয় সংলগ্ন ওই এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন: প্রয়াত নেতাদের আদর্শে দলকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান
রবিবার (৩০ অক্টোবর) সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সিত্রাংয়ের ক্ষত চিহ্ন হিসেবে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সীমানা ঘেষে থাকা বিদ্যালয়ের মাঠের সামনের পুকুরের পাড়ে একটি বড় গাছ ভেঙ্গে পড়ে আছে। বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার ছাপ বিদ্যালয়ের মাঠ জুড়ে। বিদ্যালয়ে যাতায়াতের পুরো রাস্তায় হাটু পানি। আর ওই পানি ছাপিয়েই বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করছে শিক্ষার্থীরা।
এলাকাবাসীও পানি মাড়িয়েই যাতায়াত করছেন। বিদ্যালয়ের ৫ টি শ্রেনীতে ২২২ জন শিক্ষার্থী থাকলেও গতকাল উপস্থিত ছিলো ৫০ থেকে ৬০ জন শিক্ষার্থী।
এদিকে, জলাবদ্ধতা নিয়ে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও কাজ হচ্ছে না বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
ইদ্রাকপুর এলাকার বাসিন্দা অ্যাডভোকেট হোসেন আলী বলেন, বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে জলাবদ্ধতায় রূপ নেয়। এলাকার আলোকবর্তিকা ২নং ইদ্রাকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারপাশ জলময় হয়ে পড়ে। তবু পানি নিস্কাষন ব্যবস্থার উন্নয়নে যেনো কোনো নজরই নেই পৌর কর্তৃপক্ষের। তাই জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী পদক্ষেপ নিতে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী সাবিহা আক্তার বলেন, স্কুলের সামনে ও যাতায়াতের রাস্তায় পানি জমে আছে। পায়ের জুতা হাতে নিয়ে পানি ডিঙ্গিয়ে বিদ্যালয়ে আসতে হয়, আবার ছুটি শেষে বাড়ি ফিরতে হয়। এতে অনেক ছাত্রছাত্রীর পড়নের স্কুল ড্রেস ভিজে যায়। তাই প্রতিদিন স্কুলে আসি না।
একই শ্রেনীর ছাত্রী অন্তরা বলেন, আমরা কয়েকজন পানিতে ভিজে স্কুলে এসেছি। আমারা সবেমাত্র ১০-১২ জন আজ স্কুলে এসেছি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাসরিন নীতা বলেন, এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই খারাপ। এতে বিদ্যালয়ের মাঠ ও এলাকার রাস্তায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। প্রতি বছর বৃষ্টি হলেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। গেলো বছর বিদ্যালয়ে ২৫৪ জন শিক্ষার্থী ছিলো। এ কারনে এবার শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ২২২ জনে।
মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মহিলা কাউন্সিলর নার্গিস আক্তার বলেন, আমি বিদ্যালয়ের রাস্তাটি দেখে এসেছি। পানি নিস্কাষন নিয়ে পৌরসভা মেয়রের সঙ্গে কথা বলেছি। তবে সদর উপজেলা পরিষদের পুকুরের পানি নিস্কাষন না থাকায় সমস্যা বেশী হচ্ছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও রাস্তায় জলাবদ্ধতার বিষয়ে আপনার কাছ থেকেই জানলাম বলে মন্তব্য করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মাসুদ ভূঁইয়া। তিনি বলেন, সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা নিবো।
সান নিউজ/এসআই