আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত মাসের শুরুতে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে মিয়ানমারে। ওইসময় দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চিসহ তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) অনেক নেতা-কর্মীকে আটক করে সেনাবাহিনী।
আটক এবং অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে মিয়ানমারে গণতন্ত্রপন্থীরা বিক্ষোভ-আন্দোলন করে আসছেন। অনেক সময় দেশটির সেনা-পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে সক্ষম হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যর্থও হচ্ছেন।
ইয়াহু নিউজের শুক্রবার (৫ মার্চ) প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আন্দোলনকারীরা সেনাবাহিনীকে প্রতিহত করতে নানা ধরণের অভিনব কৌশল অবলম্বন করছেন। এবার জানা গেল- সেখানকার নারীরা সেনা ও সাজোয়া যানের গতিরোধ করতে চলতি একটি রীতিকে হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তাদের শরীরের নিম্নাংশ আবৃতের জন্য ব্যবহারিক লুঙ্গিসহ বিভিন্ন ধরণের পোশাক দিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড তৈরি করছেন।
মিয়ানমারের নারীরা শরীরের ঊর্ধ্বাঙ্গে ব্লাউজের সঙ্গে শরীরের নিচের অংশে লুঙ্গি পরে থাকেন। আমাদের দেশে যদিও এ পোশাক থামি নামে পরিচিত। তবে মিয়ানমারে তা লুঙ্গি নামে সবাই চেনে। চলমান আন্দোলনে জান্তার বিরুদ্ধে অন্যতম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে এ লুঙ্গি।
অনেকে কুসংস্কারও বলেন, তবে মিয়ানমারে লোকসমাজের মধ্যে নারীদের পোশাক নিয়ে প্রচলিত ধারণা নিয়ে থিনজার সুনলেই ই নামে এক বিক্ষোভকারী জানান, এখানকার পুরুষদের বিশ্বাস, নারীদের ঝুলন্ত পোশাকের নিচ দিয়ে যাওয়াটা তাদের পৌরুষত্বের জন্য অবমাননাকর। এতে তাদের পৌরুষের গর্ব ভূলুণ্ঠিত হবে। মূলত এ কারণে রাজপথে নারীদের লুঙ্গি ব্যারিকেডের নিচ দিয়ে যেতে চাইছে না সেনা-পুলিশরা।
নারীদের এ লুঙ্গি ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যাওয়া কোনো বিষয়ই না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। তবে বাস্তবে তা ঘটাতে পারছে না, এ ব্যারিকেড ভাঙতে নারাজ সেনা বা পুলিশের সদস্যরা। এমনকি রাস্তায় আড়াআড়ি ঝুলতে থাকা নারীদের পোশাকের নিচে দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে তাদের ঘোর আপত্তি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতাসীন দল এনএলডি'র নেত্রী অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও দলের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করে সেনাবাহিনী। জরুরি অবস্থা জারি করে দেশটির সর্বময় ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং।
অভ্যুত্থানের পর থেকে টানা বিক্ষোভ করে আসছেন মিয়ানমারের গনতন্ত্রপন্থীরা। গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় দুই হাজার লোককে, যাদের মধ্যে আছেন ২৯ জন সাংবাদিকও। নিহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক বিক্ষোভকারী।
সান নিউজ/এসএস