মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: আমি আওয়ামী লীগ নেতা, তোরে ৩/৪ মামলায় ঢুকিয়ে দিমু দেশে আয়, বলে এক সৌদি আরব প্রবাসীকে মুঠোফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বলই গ্রামের মৃত হারুন ঢালীর ছেলে সদ্য-সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক শাকিল ঢালীর বিরুদ্ধে।
সৌদি আরব প্রবাসী একই গ্রামের লাভলু রাঢ়ী'র মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আমার ব্যবহিত ইমু নাম্বারে ফোন করে এ হুমকি প্রদান করে শাকিল।
এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে, প্রবাসী লাভলু রাঢ়ী'র স্ত্রী রাবিয়া ইসলাম লাকিকে মারধর করে তার গলায় থাকা ১ ভরি স্বর্নের চেইন ছিনিয়ে নেয় ছাত্রলীগ নেতার বড় ভাই সেলিম ঢালী বলেও অভিযোগ করেন ওই প্রবাসী।
এ ব্যাপারে প্রবাসী লাভলু রাঢ়ি মুঠোফোনে বলেন, সৌদির জেদ্দায় আমি ও শাকিল ঢালীর দুলাভাই আওলাদ হোসেন পাশাপাশি বাসায় থাকি। আমরা দুজ'ন দুজনের বাসায় যাতায়াত করতাম। প্রায় ৫ মাস আগে দেলোয়ার হোসেন বলেন তার বাসা হতে ১০ হাজার রিয়েল বাংলাদেশি টাকার প্রায় ৩ লাখ টাকা হারানো গেছে। সে আমিসহ জেদ্দায় থাকা আরও ৩ জনকে তার টাকা নিয়েছি বলে সন্দেহ করে বলে জানান। এ সময় আমি বলি যদি আমরা আপনার টাকা নিয়ে থাকি তবে আপনি আমাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দেন। পুলিশ এসে আমাদের ফিঙ্গার নিয়ে তদন্ত করে দেখুক।
কিন্তু সে পুলিশের কাছে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ না করে আমাদের মক্কায় নিয়ে গিয়ে বলে আমরা চুরি করি নাই প্রতিজ্ঞা করে বলতে। তার দেওয়া মিথ্যা অপবাদ হতে বাচঁতে আমরা মক্কায় গিয়ে চুরি করিনাই বলে প্রতিজ্ঞা করি। সৌদিতে জেদ্দায় আমি যে প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করতাম সে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, আমি আমার জেদ্দার বাসা ছেড়ে দিয়ে দেলোয়ার হোসেনের বাসায় আমার দেশের বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য কিনে রাখা বেশ কিছু মাল সামগ্রী রেখে দিয়ে অন্যত্র চাকুরির সন্ধান করতে থাকি।
আরও বলেন, আমি বর্তমানে রেখে আসা মাল সামগ্রী আনতে গেলে দেলোয়ার বলে তুমি আমার টাকা চুরি করেছ। টাকা না দিলে, তোমার মাল সামগ্রী দেবো না। বিষয়টি আমি আমার দেশে থাকা আমার বড় দুই ভাইকে জানাই। (মঙ্গলবার) আমার বড় ভাই সেলিম রাঢ়ী, সামসু রাঢ়ী ও আমার স্ত্রী রাবিয়া ইসলাম লাকি আমার মালামাল আটকিয়ে রাখার বিষয়ে শাকিল ঢালীদের বাসায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে সেলিম ঢালী আমার স্ত্রীকে চর থাপ্পর মারে। গলায় চাপ দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে এবং আমার স্ত্রীর গলায় থাকা ১ ভরি স্বর্নের চেইন নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে প্রবাসীর স্ত্রীর রাবিয়া ইসলাম লাকি বলেন, আমি আমার দুই ভাশুরকে নিয়ে আমার স্বামীর মালামাল আটকিয়ে রাখার কারন জানতে আওলাদ হোসেন এর সমন্ধি সেলিম রাঢ়ীর বাড়িতে গেলে, সেলিম রাঢ়ী আমাকে চর থাপ্পর মারে। আমাকে মেরে, আমার মুখ দিয়ে রক্ত বের করে ফেলে। পরে, গলায় চাপ দিয়ে ধরে আমার গলায় থাকা ১ ভরি স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায়। আমার ভাশুররা আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। পরে আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
এ ব্যাপারে শাকিল ঢালী নিজেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ- সম্পাদক পরিচয় দিয়ে বলেন, আমার বাসায় এসে লাভলু ঢালীর স্ত্রী রাবিয়া আক্তার লাকি ৫/৬ জন লোক নিয়ে আমার ভাইয়ের উপর হামলা করে। আমরা কাউকে মারধর করি নাই এবং বিদেশে কাউকে আমি মামলা দেওয়ার হুমকিও দেইনি।
এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক এসআই আল-মামুন বলেন, বিদেশের ঘটনা নিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হওয়ায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। টঙ্গীবাড়ি থানা (ওসি) মো. রাজিব খান বলেন, অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সান নিউজ/এনকে