ফিচার

নিশ্চিহ্নের পথে পুরাতন ফেরিঘাট

শফিক স্বপন, মাদারীপুর: মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি ও নদী ভাঙনের ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। এমনকি নিশ্চিহ্নের পথে পুরাতন ফেরিঘাটও। এ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা, আঁড়িয়াল খাঁ, কুমার, নিম্ন কুমারসহ ছোট-বড় ৭টি নদ-নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে বেশ কিছু জায়গায় ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে।

তীব্র স্রোতের ফলে আশে-পাশের নিচু জায়গা প্লাবিত বসতবাড়ি, দোকানপাটসহ ফসলি জমি ও গাছপালা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙনের ভয়ে অনেকেই বাড়িঘর ও দোকানপাট অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।

মাদারীপুর জেলা শহরের পাঁচখোলা ইউনিয়নের কাজীরটেক (পুরাতন ফেরিঘাট) এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত কয়েক দিনেই চারটি বসতবাড়ি ও ৩টি দোকান পুরোপুরি বিলীন হয়ে গেছে। কয়েকটি দোকান অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে স্থানীয় লোকজন। এরই মধ্যে নদীতে চলে গেছে কয়েকটি বসতবাড়ি। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে আরো কয়েকটি বসতবাড়ি ও এলাকার মসজিদসহ আরো ৩০টি দোকান।

মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস সূত্রে জানা গেছে, গেলো এক সপ্তাহে আড়িয়াল খাঁ নদীতে ২৩ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। পদ্মা নদীর মাওয়া পয়েন্টে বর্তমানে ৬ দশমিক ২৯ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া অন্য নদ-নদীতেও পানি বেড়েছে। ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে অনেকগুলো ইউনিয়নে। ভাঙ্গন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডও জিও ব্যগ ফেলে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে।

পাঁচখোলা ইউনিয়নের বাহেরটর কাতলা এলাকার আলাউদ্দিন বাদশা জানান, ‘প্রতি বছর বর্ষার মৌসুম আসলেই ফেরিঘাট এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। বিগত দিনেও এই এলাকার ৩০ থেকে ৪০টি দোকানপাট নদীতে নিয়ে গেছে। গতবছর বেশ কিছু জিও ব্যাগ ফেলেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু এই বার এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তারা। যদি এইভাবে প্রতিবছর নদী ভাঙতে থাকে তাহলে একদিন এই পুরাতন ফেরিঘাট নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।’

নদীতে বিলীন হওয়া ক্ষতিগ্রস্থ মজনু মোল্লা তার বসতবাড়ির জায়গা দেখিয়ে বলেন, ‘ওই খানেই আমার ঘর আছিলো। নদীতে সব লইয়া গেছে। কোন মতে মাল-সামানা লইয়া মানইষের জায়গায় রাখছি। এক সময় বড় বড় গাছ আর ৪০ শতাংশ জমি ছিলো আমার। এই বাঁধে ভাঙতে ভাঙতে আমার বাড়িডাও নদীতে লইয়া গেলো। এখন কই থাকমু নিজেও জানি না।’

ভাঙনের মুখে থাকা স্থানীয় দোকানদার বেল্লাল মিয়া বলেন, ‘আমরা খুব ঝুঁকির মুখে আছি। আমার পাশের তিনডা দোকান নদীতে নিয়ে গেছে। দোকানগুলোয় দুই লাখ টাকার মাল আছিলো। আর মাত্র তিন-চার হাত ভাঙলেই আমার দোকনডা ও নদীতে চইল্লা যাইবো। বউ পোলাপাইন লইয়া কি খামু আর কই থাকুম, আমাগো মরা ছাড়া আর গতি নাই। সরকার যদি একটা পাকা বান্ধের (বেঁড়ি বাঁধ) ব্যবস্থা করতো তাইলে অন্তত ভরসা পাইতাম।’

ভাঙনে আরেক ক্ষতিগ্রস্থ বাচ্চু মাতুব্বর বলেন, ‘আমার এইখানে একটা মুরগির খামার ছিলো। ভাঙনের জন্য সরাইয়া নিছি। আমার পাকা ঘরটাও ভাঙনের মুখে আছে। যদি সরকার এখানে কোনো পদক্ষেপ নেয়, তাহলে কয়েকদিনের মধ্যেই আমার মূল বাড়িটাও চলে যাবে।’

মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অতি দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। গতবছর কিছু জায়গায় প্রায় ৬ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেছিলাম। কিন্তু সেটা নদীর পানির তোড়ে বিলীন হয়ে গেছে।

সান নিউজ/এনএএম/এমকেএইচ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক : আমাদের কাছে সব প্রার্থী সমান। দল বা প্রার...

৬ অঞ্চলে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ৬ অঞ্চলের ওপর দিয়ে ৬০ কি.মি বেগে ঝড়ে...

টিভিতে আজকের খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ শুক্রবার (৩ মে) বেশ কিছু খ...

২৫ জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ কাল

নিজস্ব প্রতিবেদক : তীব্র তাপপ্রবাহে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য...

ভারতকে টপকে শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক : ভারতকে সরিয়ে টেস্টে শীর্ষস্থান দখল করেছে অস...

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩৪৬২২ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছ...

৭ জেলায় ঝড়-বৃষ্টির আভাস

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ দেশের ৭ জেলার ওপর দিয়ে ঝড়-বৃষ্টির পূর্ব...

বনানীতে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ 

নিজস্ব প্রতিবেদক: কারখানা বন্ধের...

নিজ্জর হত্যায় সন্দেহভাজন ৩ জন গ্রেফতার 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কানাডার নাগরিক...

মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ২৬ 

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বিভিন্...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা