সারাদেশ

ঠাকুরগাঁওয়ে বাড়িতে বাড়িতে আগুন পোহানোর ধুম

বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: শুধু ছিন্নমূল মানুষ নয়, ধনী-গরীব সবাই চলমান শৈত্য প্রবাহের ছোবলে জুঁবুথুবু হয়ে পড়েছে। ২/৪ জন জমায়েত হয়ে হাতের কাছে যা পাচ্ছেন তাতেই আগুন জ্বালিয়ে নিজেদের শরীর গরম করে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এ দৃশ্য এখন জেলার সর্বত্র বিরাজ করছে। বিশেষ করে সকাল-সন্ধায় বাড়িতে বাড়িতে চলছে আগুন পোহানোর ধুম।

সন্ধার পর ক্রেতার অভাবে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো ফাঁকা হয়ে পড়ায় ব্যবসায়ীরাও এমন আগুন পোহানোর আয়োজনে ব্যস্ত। মাঘের শীতে ব্রাহ্মন হালে গরু বিক্রি করেছিল’ গরম কাপড় কেনার জন্য। এটি গ্রামবাংলায় প্রচলিত একটি প্রবাদ।মাঘের হাড় কাপুনি শীতে এরুপ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

প্রচন্ড ঠান্ডায় প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না।সন্ধার পরপরই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে দোকানপাট।গত কয়েকদিন ধরে ঠাকুরগাঁওয়ে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। তার উপর হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা কয়েকগুন বেড়ে গেছে।রাতে বৃষ্টির ন্যায় কুয়াশা ঝড়ছে। সন্ধার পরপরই চারদিক কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে।

রাস্তাঘাট কুয়াশায় ঢাকা পড়ায় দুর পাল্লার গাড়ি চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ।ঘন কুয়াশায় চারদিক ঢাকা থাকায় যানবাহন চলাচল করছে হেড লাইট জ্বালিয়ে ।হেড লাইট ও ফক লাইটেও ১০ ফিট দূরের কোনকিছু দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় রাস্তায় চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনকে অহরহ দুর্ঘটনায় পড়তে হচ্ছে। বাঁশ ও খড়ের ঘরে রাত যাপনকারী দরিদ্র লোকজন ঠান্ডায় কাতর হয়ে পড়ছেন।

শীতার্ত মানুষেরা জানান, রাতের বেলা কাঁথা নিয়ে থাকলেও উঞ্চতা না পাওয়ায় রাতে নির্ঘুম থাকতে হচ্ছে। এতে খেটে খাওয়া মানুষ , বৃদ্ধ এবং শিশুরা সর্দি কাঁশি ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালে শিশু রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমসিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা.শাহজাহান নেওয়াজ জানান, মাঘের শীতের কারণে গ্রাম থেকে দলে দলে শিশু রোগীরা আসছে শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া রোগ নিয়ে।গত ২৪ ঘন্টায় এখানে দেড় শতাধিক শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে।শিশুরা অহেতুক যেন মাটিতে হামাগুড়ি না দেয় এবং প্রসাব করে কাপড় চোপড় ভিজিয়ে ফেললে তৎক্ষনিক তাদের কাপড় চোপড় পাল্টে দেওয়া হয় সে বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

প্রচণ্ড ঠান্ডায় গবাদী পশু নিয়েও বিপদে পড়েছে লোকজন। কেউ কেউ ছেড়া বস্তা বা চট দিয়ে গবাদী পশুকে ঢেকে দিয়ে রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছেন। জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা.আলতাফ হোসেন গোবাদী পশুকে বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের না করার পরামর্শ দিয়েছেন। প্রচণ্ড ঠান্ডায় দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমূল ও নিন্ম আয়ের মানুষ।তারা কাজে বের হতে না পেরে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছে।

কৃষিক্ষেতেও ঘন কুয়াশার প্রভাব পড়েছে।আলুক্ষেত ও মরিচ ক্ষেতে মোড়ক দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে আলু চাষীদের কোল্ড ইনজুরি থেকে রক্ষার্থে ঘন ঘন কীটনাশক স্প্রে করার কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। যেসব কৃষক ও শ্রমিক বোরো ধান লাগাচ্ছেন তারা ঠান্ডা কাঁদা পানিতে চরম কষ্ট পোহাচ্ছেন।

ঘনিমহেশপুর গ্রামের সত্তোরর্ধ বৃদ্ধ রফিজ উদ্দীন জানান,এতো জার জীবনেও দেখুনি।খালি হাত-পালা টাটাছে।তবে জেলায় কোন আবহাওয়া অফিস না থাকায় বাতাসের তাপমাত্রা নির্ধারণ করা যাচ্ছে না।

জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম জানান,সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত ২৬ হাজার কম্বল ও ৩০ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি শীতার্তদের সহযোগিতায় ধর্ন্যাঢ্য লোকজনকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।

সান নিউজ/বিল্পব/এসএ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

প্রস্তুতি ম্যাচের সূচি প্রকাশ

স্পোর্টস ডেস্ক : আসন্ন আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল আস...

টিভিতে আজকের খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ শনিবার (১৮মে) বেশ কিছু খেল...

কর্মস্থলে না এসেও বেতন তোলেন শিক্ষক

আবু রাসেল সুমন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:

মুন্সীগঞ্জে ভাসমান মরদেহ উদ্ধার

মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মধ্য কোটগাঁ...

মেঘনা নদীতে পাঙ্গাশ রক্ষায় অবৈধ চাই ধ্বংস 

ভোলা প্রতিনিধি: ভোলায় মেঘনা নদী থ...

ওএমএস বিতরণে গাফলতি হলে ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক: খাদ্যমন্ত্রী সা...

পটল কেন উপকারী?

লাইফস্টাইল ডেস্ক: পটল আমাদের দেশের পরিচিত একটি সবজি, যা খেতে...

মিডিয়া ট্রায়াল বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে

জেলা প্রতিনিধি: বিচারের আগে মিডিয...

হোয়াটসঅ্যাপে আসছে পরিবর্তন

টেকলাইফ ডেস্ক: জনপ্রিয় যোগাযোগ মা...

মঙ্গলবার ১৫৭ উপজেলায় সাধারণ ছুটি 

নিজস্ব প্রতিবেদক: ষষ্ঠ উপজেলা পরি...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা