ছবি: সংগৃহীত
শিক্ষা

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

জেলা প্রতিনিধি: সহকারী প্রক্টর ও সহপাঠীর বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইরুজ অবন্তিকা নামে এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন।

আরও পড়ুন: স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে কাজ করছে সরকার

শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১০ টার দিকে কুমিল্লা সদরে নিজ বাসায় গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। পরে তাকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত ফাইরুজ অবন্তিকা কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকার বাসিন্দা। তিনি কুমিল্লা সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষক প্রয়াত অধ্যাপক জামাল উদ্দিনের মেয়ে। অবন্তিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

আত্মহত্যার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে দায়ী করে ফেসবুকে দেয়া দীর্ঘ এক পোস্টে অবন্তিকা বলেন, আমি যদি কখনো সুইসাইড করে মারা যাই, তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী, আর তার সহকারী হিসেবে তার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে সাপোর্টকারী সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম।

আরও পড়ুন: ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, ২ শিক্ষক বহিষ্কার

আম্মান যে আমাকে অফলাইন ও অনলাইনে থ্রেটের (হুমকি) উপর রাখতো সে বিষয়ে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করেও লাভ হয় নাই। দ্বীন ইসলাম আমাকে নানাভাবে ভয় দেখায়, আমাকে বহিষ্কার করা ওনার জন্য হাতের ময়লার মতো ব্যাপার।

আমি জানি, এখানে কোনো জাস্টিস পাবো না। কারণ দ্বীন ইসলামের অনেক চামচা ওর পাশে গিয়ে দাঁড়াবে। এই লোককে আমি চিনতামও না। আম্মান আমাকে সেক্সুয়ালি এবিউজিভ কমেন্ট করায় আমি তার প্রতিবাদ করলে আমাকে দেখে নেয়ার জন্য দ্বীন ইসলামের শরণাপন্ন করায়।

দ্বীন ইসলাম আমাকে তখন প্রক্টর অফিসে একা ডেকে নারীজাতীয় গালিগালাজ করে। সেটা অনেক আগের ঘটনা হলেও সে বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন কথা বলে এখনো আমাকে নানাভাবে মানহানি করছে।

আরও পড়ুন: কোর্ট প্রাঙ্গণে কেউ জড়িত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা

এই লোক কুমিল্লার হয়েও কুমিল্লার ছাত্র কল্যাণের তার ছেলেমেয়ের বয়সী স্টুডেন্টদের মাঝে কী পরিমাণ প্যাঁচ ইচ্ছা করে লাগায় সেটা কুমিল্লার কারো সৎ সাহস থাকলে সে স্বীকার করবে।

সে আমাকে আম্মানের অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে ৭ বার প্রক্টর অফিসে ডাকায় নিয়ে (প্রকাশ অযোগ্য শব্দ) তুই এই ছেলেরে থাপড়াবি বলসস কেন? তোরে যদি এখন আমার জুতা দিয়ে মারতে মারতে তোর ছাল তুলি তোরে এখন কে বাঁচাবে?

আফসোস, এই লোক নাকি ঢাবির খুব প্রমিনেন্ট ছাত্রনেতা ছিল। একবার জেল খেটেও সে জগন্নাথের প্রক্টর। সো ওর পলিটিক্যাল ও নষ্টামির হাত অনেক লম্বা না হলেও এতো কুকীর্তির পরও এভাবে বহাল তবিয়তো থাকে না এমন পোস্টে।

আরও পড়ুন: সমাজে বৈষম্য আজ প্রকট

কোথায় এই লোকের কাজ ছিল গার্ডিয়ান হওয়া, সে কিনা আমার জীবনটাই শেষ না হওয়া পর্যন্ত মুক্তি দিল না। আমি উপাচার্য সাদেকা হালিম ম্যামের কাছে এই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হিসেবে বিচার চাইলাম।

আমি ফাঁসি নিয়ে মরতেসি। আমার উপর দিয়ে কী গেলে আমার মতো নিজেকে এতো ভালোবাসে যে মানুষ, সে মানুষ এমন কাজ করতে পারে। আমি জানি এটা কোনো সলিউশন না। কিন্তু আমাকে বাঁচতে দিতেসে না, বিশ্বাস করেন।

আমি ফাইটার মানুষ। আমি বাঁচতে চাইসিলাম! পোস্ট মর্টেম করে আমার পরিবারকে ঝামেলায় ফেলবেন না।

আরও পড়ুন: বায়ুদূষণে আজ ঢাকা পঞ্চম

এমনিতেই বাবা এক বছর হয় নাই মারা গেছেন, মা একা। ওনাকে বিব্রত করবেন না। এটা সুইসাইড না, এটা মার্ডার। টেকনিক্যালি মার্ডার। আম্মান নামক আমার ক্লাসমেট ইভটিজারটা আমাকে এটাই বলছিল যে, আমার জীবনের এমন অবস্থা করবে যাতে আমি মরা ছাড়া কোনো গতি না পাই। তাও আমি ফাইট করার চেষ্টা করসি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত দ্বীন ইসলাম জানান, গত দেড় বছর আগে অবন্তিকা ফেসবুকের ফেইক আইডি খুলে কয়েকজনকে বাজে কমেন্ট করার অভিযোগে তারা কোতোয়ালি থানায় জিডি করে।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে অবন্তিকা প্রক্টর অফিসে এলে তাদের মাঝে মিউচুয়াল করে দেন তৎকালীন প্রক্টর অধ্যাপক ড মোস্তফা কামাল। পরবর্তীতে আমি একই জেলার হওয়া আমার কাছে অবন্তিকা ও তার মা জিডি তোলার বিষয়ে এলে আমি তাতে অপারগতা প্রকাশ করি। জিডি ওঠাতে পারে একমাত্র প্রক্টর।

আমি তাদের প্রক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলি। পরে তারা এ বিষয়ে আর কখনো আসেনি।

আরও পড়ুন: ঢাবি শিক্ষার্থীদের উপর হামলা

অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের বিষয়ে তিনি বলেন আমি কখনো ওই মেয়ের সঙ্গে একা কথা বলিনি। তাকে যতবার ডাকা হয়েছে সর্বদা প্রক্টর অফিসেই সকলের সামনে ডাকা হয়েছে। ওখানে বসে এসব ভাষায় গালি দেব, এটা কেমন কথা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি। যেহেতু অভিযুক্তের একজন আমাদের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্য। উপাচার্য সাময়িকভাবে তাকে অব্যাহতি প্রদানের মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছেন। আইনগত প্রক্রিয়ায় তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আম্মানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

সান নিউজ/এনজে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

জায়েদের ফোন পানিতে ছুড়ে ফেললেন সাকিব

বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশ ক্রিকেটের...

রাজধানীতে তাপমাত্রা বাড়ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি তাপপ্রবা...

চীনে সড়ক ধসে নিহত ১৯ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চীনের দক্ষিণাঞ...

টিভিতে আজকের খেলা

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রতিদিনের মতো আজ বুধবার (১লা মে) বেশ কিছু খ...

বিরক্ত হয়েই শাকিবের পরিবার এই সিদ্ধান্ত 

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই সিনেমার শীর্ষ নায়ক শাকিব খানকে নতুন করে...

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি’র প্রয়াণ

সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স...

বজ্রপাতে প্রাণ গেল ২ জনের

জেলা প্রতিনিধি : রাঙামাটিতে বজ্রপাতে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃ...

ঢাকায় ফিরল ৮ বাংলাদেশির লাশ  

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার সময় তিউ...

শনিবার খুলছে স্কুল-কলেজ, রোববার প্রাথমিক 

নিজস্ব প্রতিবেদক: পবিত্র রমজান, ঈ...

মিল্টনের সব অপকর্ম বের করা হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার&rsquo...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা