টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
সারাদেশে যখন ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল, খোলাবাজারে বিক্রি) চাল বিক্রির অব্যস্থাপনা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে, ঠিক তখন চাল চুরি ও দুর্নীতি ঠেকাতে কালিহাতি উপজেলায় ১০ টাকা মূল্যে সরকারি চাল ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ওএমএসের ইতিহাসে ডিজিটাল পদ্ধতিতে চাল বিক্রির ঘটনা এই প্রথম।
ডিজিটাল পদ্ধতিতে ওএমএসের চাল বিক্রির এই পদ্ধতি প্রবর্তন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম আরা নিপা।
১৯ এপ্রিল রবিবার কালিহাতি পৌরসভার বেতডোবা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কালিহাতি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শুরু হয় এই কার্যক্রম।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার দু’টি পৌরসভার দুই হাজার চারশ কর্মহীন মানুষের জন্য ডিজিটাল কার্ডের মাধ্যমে ওএমএসের ১০ টাকা কেজির চাল বিক্রি করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আরা নিপা বলেন, সরকারি ১০ টাকা মূল্যের চাল দরিদ্র মানুষের কাছে কিভাবে ভোগান্তি ছাড়া শতভাগ পৌঁছে দেওয়া যায়, এমন চিন্তা থেকেই কালিহাতি উপজেলার দুইটি পৌরসভায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে চাল বিক্রি কর্মসূচি চালু করেছি। এই পদ্ধতি খুবই সাধারণ, কিন্তু উপকারী এবং কার্যকর। সারাদেশে যদি এই পদ্ধতিতে চাল বিক্রি করা যায়, তবে চুরি বা দুর্নীতির কোনো ঘটনা ঘটবে না।
ইউএনও আরও বলেন, এই পদ্ধতি চালু করতে প্রথমে আমি একটি তথ্যভাণ্ডার তৈরি করেছি, যেখানে যাদের জন্য চাল বিক্রির কার্যক্রম, তাদের নাম ও ঠিকানাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য রয়েছে। আর তাদের যে কার্ড দিয়েছি, সেটিও ডিজিটাল কার্ড। এই কার্ডে একটি কিউআর কোড রয়েছে। এর বাইরে একটি অ্যাপ বানিয়েছি। এই অ্যাপ চাল বিক্রেতা তার মোবাইল ফোনে ডাউনলোড করে নিয়েছেন। কোনো ক্রেতা চাল কিনতে এলে তার কার্ডের কিউআর কোড স্ক্যান করে সহজেই পরিচয় যাচাই করা যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরও বলেন, এতে দুই পক্ষের তথ্যই খুব সহজে মনিটরিং করা যায়। কেননা একজন ক্রেতা সপ্তাহে কী পরিমাণ চাল কিনতে পারবেন, তার একটি নির্দিষ্ট মাত্রা আছে। আবার বিক্রেতা বা ডিলার কী পরিমাণ চাল বিক্রি করবেন, তার পরিমাণও নির্দিষ্ট।
তিনি বলেন, এতদিন এই পরিমাণগুলো সঠিকভাবে যাচাই করা হতো না। ফলে নানা ধরনের নেতিবাচক তথ্য আসত। এখন এই ডিজিটাল পদ্ধতিতে সহজেই এই তথ্য পাওয়া যাবে। ফলে কেউ চাইলেই দুর্নীতি করতে পারবে না।
এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম। স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাছান ইমাম খান (সোহেল হাজারী), কালিহাতি পৌর মেয়র আলী আকবর জব্বার, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল সালেকসহ অন্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সান নিউজ/সালি